ঢাকায় নারীদের জন্য আধুনিক পাবলিক টয়লেট মাত্র ২৬টি
কর্মক্ষেত্রে পুরুষের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে নারী কর্মীর সংখ্যা। পুরুষের সমান সংখ্যায় কর্মক্ষেত্রে নিজের অবস্থান গড়তে না পারলেও নারীরা খুব বেশি পিছিয়ে নেই। এই কর্মজীবী নারীদের জন্য রাজধানীসহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলোতে পাবলিক টয়লেটের তেমন কোনও ব্যবস্থা নেই।
খোদ রাজধানীতেই নারীদের ব্যবহার উপযোগী মাত্র ২৬টি টয়লেট রয়েছে। তবে এ অবস্থার পরিবর্তনে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ ওয়াটার এইড এবং এফএম ফাউন্ডেশনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে নারীবান্ধব পাবলিক টয়লেট নির্মাণের প্রকল্প হাতে নিয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রকল্পের কাজ শেষ হলে কর্মজীবী নারীরা রাজধানীতে ব্যবহার উপযোগী ২০০টি পাবলিক টয়লেট পাবেন।
ডিএসসিসির মেগা প্রকল্পের পরিচালক ও অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান বলেন, ‘নতুন প্রকল্পের আওতায় ৫০টি পাবলিক টয়লেট তৈরির সিদ্ধান্ত হয়েছে। এটি করার জন্য ওয়াটার এইডের সঙ্গে সিটি করপোরেশনের চুক্তি হয়েছে। এর মধ্যে কয়েকটি টয়লেট বানানো হয়েছে। বাকিগুলো বানানোর প্রক্রিয়া চলছে। সবমিলিয়ে ২০০টি পাবলিক টয়লেট তৈরি করা হবে।’
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের যুগ্ম সম্পাদক সীমা মোসলেম বলেন, ‘একটা সময় পাবলিক টয়লেটে মেয়েরা যাবে এটা ভাবাই যেতো না। এখন সেই অবস্থার অনেক পরিবর্তন হয়েছে। কিছু কিছু স্থানে নতুন ঝকঝকে, পরিচ্ছন্ন পাবলিক টয়লেট হয়েছে। সেখানকার নিরাপত্তা ব্যবস্থাও বেশ ভালো। এর জন্য আমি ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনসহ সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানাই।’
মেয়েদের কর্মক্ষেত্রে সম্পৃক্ত হওয়ার হার অনেক বেশি উল্লেখ করে তিনি রাজধানীর মোড়ে মোড়ে নারী বান্ধব পাবলিক টয়লেট নির্মাণের দাবি জানান।
উন্নয়ন কর্মী সৈয়দ সাইফুল আলম শোভন বলেন, ‘এখন ঢাকা শহরে পাবলিক টয়লেটের অবস্থা বেশ ভালো। যদিও তা সংখ্যায় কম। সংখ্যাটা বাড়ানো উচিত। এখন পুরনো অনেক পাবলিক টয়লেট ভেঙে ফেলা হচ্ছে। আবার নতুন টয়লেট হচ্ছে। আর একটা বিষয় ঢাকা শহরের মসজিদ, মার্কেটগুলোতে যে টয়লেট আছে সেখানে নারী-পুরুষ সবার যাওয়ার সুযোগ দেওয়া উচিত।’
ঘনবসতিপূর্ণ ঢাকায় সিটি করপোরেশনের পাশাপাশি বড় বড় বিল্ডিং ভবনগুলোর কর্তৃপক্ষকে তাদের ভবনে নারী বান্ধব টয়লেটের ব্যবস্থা রাখা উচিৎ বলে মনে করেন সাইফুল আলম শোভন। এসব পাবলিক টয়লেট বিনা খরচে ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত রাখা উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘গরীব রিকশা চালক বা নিম্ন আয়ের মানুষ ব্যয়বহুল পাবলিক টয়লেট ব্যবহার করতে পারবে না। পরিবেশের স্বার্থে পাবলিক টয়লেটগুলো বিনা খরচে ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া দরকার।’
তিনি আরও বলেন, ‘যারা বড় বিল্ডিং বানাবে তাদেরকে পাবলিক টয়লেট বানানোর কথা বলা যেতে পারে। প্রয়োজনে নতুন বিল্ডিং নির্মাণের অনুমতি নিতে সরকারিভাবে যে অর্থ ব্যয় হয় সেখানে কম অর্থ নেওয়া যেতে পারে। অনেক সময় সিটি করপোরেশন টয়লেট বানানোর জন্য পর্যাপ্ত যায়গা পায় না। সরকার চেষ্টা করলে, নারী-পুরুষ সবার জন্য মসজিদগুলোর টয়লেট উন্মুক্ত করে দেওয়ার ব্যবস্থা নিতে পারে। এভাবে সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ঢাকা শহরে পাবলিক টয়লেট ব্যবহারের সুযোগ তৈরি করা দরকার।’-বাংলা ট্রিবিউন
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন