নির্বাচনে আচরণবিধি লঙ্ঘন করলে কী শাস্তি হয়?
আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বড় দু’দলের বিরুদ্ধে রয়েছে নির্বাচনী আচরণ বিধি ভঙ্গের অভিযোগ। এক দল অন্য দলকে দুষছেন। তবে নির্বাচনী আচরণ বিধি ভঙ্গে রয়েছে শাস্তির ব্যবস্থা।
আমাদের দেশে নির্বাচনে আচরণবিধি লঙ্ঘন হলে জরিমানা ও জেল দু’ধরনের শাস্তির ব্যবস্থাই রয়েছে।
নির্বাচন কমিশন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করে যার এ শাস্তি দেয়ার ক্ষমতা রয়েছে। কমিশন তদন্তের জন্য কমিটি তৈরি করে যাতে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট থাকেন। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ছয় মাসের জেল ও ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা করতে পারেন।
এর ওপরে হলে আদালতে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে যেতে হবে। চরম শাস্তি হল প্রার্থিতা বাতিল করা। বাংলাদেশে জরিমানা করার নমুনা রয়েছে তবে এর বেশি কিছু করার নমুনা নেই।
তবে নির্বাচনকালীন সময়ে মন্ত্রী-এমপি অন্য গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের জন্য বলা আছে, এ সময়ে কোনো মন্ত্রী তার এলাকায় গেলে প্রটোকল পাবেন না। কাগজে অবশ্য বলা আছে কোনো গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি।
এ সময় তারা কোনো উন্নয়নমূলক কাজ উদ্বোধন করতে পারবেন না যা প্রচারণা বলে গণ্য হতে পারে। শুধুমাত্র চলতি প্রকল্প বাদে এ সময় কোনো অনুদান দেয়ারও অনুমোদন নেই।
নতুন কোনো প্রকল্প নেয়া যাবে না। কোনো মন্দির, মসজিদ বা গির্জায় ভোট চাইতে পারবেনা না প্রার্থীরা।
আচরণবিধি লঙ্ঘন নিয়ে বিবিসির এক প্রতিবেদনে সাবেক নির্বাচন কমিশনার ড. এম সাখাওয়াত হোসেন ব্যাখ্যা করেছেন কী করলে আচরণবিধি লঙ্ঘন হয়।
এনিয়ে তিনি বলছেন, তফসিল ঘোষণার পর থেকেই আচরণবিধির আওতায় পরে যাচ্ছেন সবাই। নির্বাচনের প্রচারণা শুরুর দিন না আসা পর্যন্ত এখন যেভাবে পোষ্টার ব্যানার লাগানো হচ্ছে বা দল বেধে মিছিল করে যাচ্ছেন প্রার্থীরা তার সবকিছুই আসলে অবৈধ।
যেসব বিষয়ে বেশি আচরণবিধি লঙ্ঘন হয় এমন কয়েকটি বিষয়ের মধ্যে রয়েছে পোস্টার লাগানো। তিনি বলেন, নির্বাচনের পোস্টার থাকে সাদাকালো। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই সাদাকালো পোস্টার তেমন দেখা যায় না। পোস্টারে দলের নেতা ছাড়া আর কারো ছবি দেয়া যাবে না। তবে বেশিরভাগ পোস্টারে প্রার্থিতা প্রত্যাশী ছাড়াও আরও অনেকের ছবি থাকে।
পোস্টারগুলোও রঙবেরঙের হয়ে থাকে। পোস্টারে কোন ছাপাখানা থেকে কতগুলো ছাপানো হল তার তথ্য পরিষ্কার থাকতে হবে।
পোস্টার দেয়ালে, গাড়িতে এমনকি গাছেও লাগানো নিষেধ। শুধুমাত্র রাস্তার উপর দড়ি দিয়ে পোস্টার ঝোলানো যাবে। নির্বাচনের সময় দেয়াল লেখনও বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। যত্রতত্র ক্যাম্পেইন অফিস বানানো নিষেধ।
নিয়ম হল একটি পৌরসভায় প্রতি ওয়ার্ডে একটি করে ক্যাম্পেইন অফিস থাকতে পারবে। সে কার্যালয়ে টেলিভিশন রাখা নিষেধ, মাইক লাগানো যাবে না। দুপুর ২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত এটুকু সময় প্রার্থীরা প্রচার করতে পারবেন।
জনদুর্ভোগ এড়াতে এই নিয়ম করা হয়েছে। একটি ওয়ার্ডে তিনটির বেশি মাইক ব্যবহার নিষেধ। ভোট পাওয়ার জন্য মানুষজনকে দাওয়াত দেয়া, খাওয়ানো বা উপহার দেয়া নিষেধ। নির্ধারিত সময়ের আগে প্রচারণা শুরু করা যাবে না।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন