মাদারীপুরে গৃহবধূকে গণধর্ষণের অভিযোগে, দুই বন্ধু গ্রেফতার
মাদারীপুরে এক গৃহবধূর (২৪) গোপন ভিডিও ধারণ করে জোড়পূর্বক গণধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত শুক্রবার শহরের একটি ভাড়া বাসায় এ ঘটনা ঘটে।
এদিকে এ ঘটনায় অভিযুক্ত দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রোববার রাতে শহরের হরিকুমারিয়া এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। তারা হলেন শহরের হরিকুমারিয়া এলাকার আজিজুল ব্যাপারীর ছেলে সৌদিআরব প্রবাসী আহাদুল ব্যাপারী (২৪) ও পূর্ব রঘুরামপুর এলাকার সালাম ব্যাপারীর ছেলে রঙমিস্ত্রি শামীম বেপারী (৩৫)। তারা দুজনই একে অপরের বন্ধু।
পুলিশ ও ভুক্তভোগী পরিবারের সূত্র জানায়, মাদারীপুর শহরের হরিকুমারিয়া এলাকার স্বামী-সন্তানকে নিয়ে একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন ওই গৃহবধূ। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় ঘরের লোকজন এক আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে যায়। আড়াই বছরের ছেলেকে ঘুম পাড়িয়ে শৌচাগারে যান ওই গৃহবধূ।
এ সময় বাড়িওয়ালা আজিজুল ব্যাপারীর ছেলে আহাদুল ব্যাপারী কৌশলে ঘরে প্রবেশ করে। পরে শৌচাগারে থাকা অবস্থায় গৃহবধুর আপত্তিকর ভিডিও ধারণ করে আহাদুল ও তার বন্ধু শামীম। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ধারণ করা সেই ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয় তারা। একপর্যায়ে আহাদুল ও শামীম ওই গৃহবধূকে শারীরিক সম্পর্ক করতে বাধ্য করেন। এতে রাজি না হলে তার সন্তানকে হত্যার হুমকি দিয়ে গৃহবধুকে পালাক্রমে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে আহাদুল ও শামীমের বিরুদ্ধে।
এ সময় কৌশলে ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করা হয়। এরপর রোববার রাতে ফেসবুকে সেই ভিডিও ছেড়ে দেওয়ার কথা বলে ঘরে প্রবেশ করে আহাদুল ও শামীম। আবারো শারীরিক সম্পর্ক করতে বললে কৌশলে গৃহবধূ বিষয়টি পুলিশের জরুরি সেবা ৯৯৯ কল দেন। খবর পেয়ে সদর মডেল থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিযুক্ত দুজনকে আটক করে। এ সময় মুঠোফোনে ভিডিওধারণকৃত মোবইল ফোনটি জব্দ করা হয়।
বর্তমানে আহত অবস্থায় ধর্ষণের শিকার ওই গৃহবধূকে মাদারীপুর ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
হাসপাতালে শয্যায় ওই গৃহবধূ বলেন, ‘আমাকে কয়েকদিন ধরেই কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছিল আহাদুল। আমি ওর প্রস্তাবে রাজি হইনি। তাই ওরা গোপনে আমার ঘরে ঢুকে ভিডিও করে ব্লাকমেইল করে। আমার সাথে যে অন্যায় ওরা দুজন করেছে তাদের বিচার চাই আমি।’
ওই গৃহবধূর স্বামী বলেন, ‘আমার স্ত্রীকে ভয় দেখিয়ে আহাদুল ও শামীম পালাক্রমে ধর্ষণ করেছে। ওরা নানা ভাবে আমাকে মিমাংসার জন্য চাপ দিচ্ছে। আমি মিমাংসা চাই না। আমি আইনের কাছে ওদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
অভিযোগের বিষয় জানতে চাইলে অভিযুক্ত আহাদুলে মা রাবেয়া খাতুন বলেন, ‘আমার ছেলে বিদেশে থাকে। ওরে ফাঁসাতে চায় ওই নারী (ভুক্তভোগী গৃহবধূ)। ইতিপূর্বে সাড়ে ৪ লাখ টাকা দাবিও করেছে। ওই টাকা না দেওয়ায় আমার ছেলের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করতাছে। আমিও এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানাচ্ছি।’
অভিযোগের বিষয় জানতে চাইলে সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএইচএম সালাউদ্দিন বলেন, ‘এক গৃহবধূর গোপন ভিডিও ধারণ করে গণধষণের অভিযোগে থানায় মামলা হয়েছে। ভুক্তভোগী গৃহবধূ নিজেই মামলা বাদী। অভিযুক্ত দুজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন