সবারই বিদায় হজের ভাষণ পড়া উচিত : আরমা দত্ত
সবারই বিদায় হজের ভাষণ ও মদীনা সনদ পড়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন সংসদ সদস্য আরমা দত্ত। তিনি বলেন, বিদায় হজে মোহাম্মদ ( সা) বলেছেন, “তোমরা কোন নারীর প্রতি অবিচার করোনা।” এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন। আরমা দত্ত বলেন, এদেশের অধিকাংশ মানুষ ধার্মিক। ধর্ম শান্তির জায়গা। কিন্তু মোহাম্মদ ( সা) এর বিদায় হজের ভাষন ও মদীনা সনদ না পড়লে ধর্মের প্রকৃত মর্মার্থ বুঝা যাবেনা। খবর একুশে টিভি’র।
সোনাগাজী মাদ্রাসার ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি`র নিহত হওয়ার বিষয় নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
আরমা দত্ত বলেন, বিদায় হজে তিনটা প্রধান বিষয় মুহাম্মদ ( সা) বলে গেছেন। একটা হলো, তুমি কোন নারীর প্রতি অবিচার করবে না। দ্বিতীয়টি হলো, ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করবে না। সব ধর্মকে সমান মর্যাদা দিবে। তৃতীয়টি হলো, সুদের ব্যাবসা করবে না। কিন্তু সমীক্ষা চালালে দেখা যাবে অধিকাংশ লোক এই তিনটি বিষয় সম্পর্কে জানেন না। যদি কেউ এ তিনটি বিষয় জানে এবং মানে তাহলে কোনো সমস্যা হওয়ার কথা না।
আরমা দত্ত বলেন, নারীকে শোষণ করতে গিয়ে অনেকে ধর্মকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে। তারা ধর্মের অপব্যবহার করছে। আমি বহু লোককে জিজ্ঞেস করেছি এবং বলেছি, আপনারা বায়বীয় কথা না বলে মুহাম্মদ ( সা) এর ভাষনকে দলিল হিসেবে তুলে আনুন। আর কোনো ধর্মে এত শক্তিশালী দর্শন আছে বলে মনে হয় না।
আরমা দত্ত বলেন, মুহাম্মদ ( সা) স্পষ্ট বলে গেছেন, কোন নারীকে অমর্যাদা করবে না। আজকে যারা খুব ধর্মের কথা বলে তারা ধর্মের অপব্যবহার করছে, তাদের অনেকে ধর্মের মূল জায়গাটা জানে না। ধর্মের মূল দর্শনটাই তারা চর্চা করে না। আমরা যদি প্রতিজ্ঞা করি, বিদায় হজ্বের এ তিনটা বিষয় মেনে চলব, তাহলে পরিবর্তন আমার ঘরে, সমাজে, দেশে আসবে।
সাম্প্রতিক সময়ে নারীকে ধর্ষনের জন্য বা যৌন হয়রানীর জন্য কোন কোন মহল পোশাককে দায়ী করে থাকে এমন প্রসঙ্গে আরমা দত্ত বলেন, বাংলাদেশের মেয়েরা খুব সুন্দর ও শালীন পোশাক পড়ে থাকে। আমাদের দেশের মেয়েরা যথেষ্ট শালীন। সমস্যা হলো আমাদের বিকৃত রুচি। তবে আশার কথা হলো একটা পরিবর্তন আসছে।
আরমা দত্তের মতে, শুধুমাত্র শাস্তি নয়, পুরো ব্যাপারটাকে আন্দোলন হিসেবে নিতে হবে। একেবারে ছোট বয়স থেকেই বাচ্চাদের শেখাতে হবে নারী শ্রদ্ধার পাত্র। নারী মায়ের জাতি। নারীর জঠর থেকে তুমি এসেছ। একটা মেয়েকে অপমান করা মানে মাকে অপমান করা। নারীকে যদি মায়ের চোখে দেখা হয়, তাহলে সে যে পোশাকই পড়ুক না কেন সমস্যা কোথায়?
আশাবাদ ব্যক্ত করে আরমা দত্ত বলেন, নারীদেরকে অবদমিত করা, যৌন হেনস্থা করার যে সংস্কৃতি চলছে তা বদলাবে। শীঘ্রই এমন পরিস্থিতির উন্নতি ঘটবেই।
প্রসঙ্গত, গত বুধবার রাত সাড়ে ন`টায় ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসারত অবস্থায় মারা যান সোনাগাজী মাদ্রাসার ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি। এর আগে নিজ মাদ্রাসার ছাদে দুর্বৃত্তরা তার গায়ে আগুন দিলে শরীরের আশি ভাগ পুড়ে যায়। ঘটনার দায়ে অভিযুক্ত একই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন