সাতক্ষীরার পাসপোর্ট অফিস জনবল সংকটেও রাজস্ব আদায় ও সেবার মান বাড়িয়েছে
জনবল সঙ্কটের মধ্য দিয়েও সাতক্ষীরা আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে সেবার মান বেড়েছে। এ অফিসে পাসপোর্ট করার জন্য তালিকাভুক্তিও বেড়েছে অনেকগুন। ফলে রাজস্ব আদায়ও বেড়েছে অনেক।
এ অফিসে ২৩ জনের স্থলে মাত্র ১১ জনকে নিয়ে গ্রাহক সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের। কিন্তু সাতক্ষীরা আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের সহকারী পরিচালক সাহজাহান কবিরের নানামুখী উদ্যোগে অনেকাংশে কমেছে সেই সব ভোগান্তি। দালালদের মাধ্যম ছাড়াই সরাসরি গ্রাহকরা পাসপোর্ট করতে পারায় দিন দিন বাড়ছে পাসপোর্ট গ্রাহকের সংখ্যা। আর অল্প সময়ের মধ্যে পাসেপোর্ট হাতে পেয়ে সন্তুষ্ট গ্রাহকরা।
সাতক্ষীরা আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস সূত্রে জানা যায়, ২০২২ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সাতক্ষীরা আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের মোট পাসপোর্টের সংখ্যা ৬৬হাজার ৬‘শ’ ১২টি। এরমধ্যে ৫৯হাজার ৬‘শ’ ২০টি পাসপোর্ট বিতরণ করে রাজস্ব আদায় করা হয়েছে ৩কোটি ৮৩লাখ ১৯হাজার টাকা।
সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার নুরনগর বৃদ্ধ আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, আগের চেয়ে সাতক্ষীরা আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে সেবার মান বেড়েছে। আমি নিজে নিজে গিয়ে পাসপোর্ট করেছি। আমার কোন ভোগান্তি হয়নি।
আশাশুনি হতে পাসপোর্ট করতে আসা আশরাফুল ইসলাম বলেন, আমার পাসপোর্ট ও আইডি কার্ডে নামের কিছুটা সমস্যা ছিল। সেটি সমাধান করতে আমি এডির কাছে এসেছিলাম। তিনি সাথে সাথে আমার সমস্যার সমাধান করে দিয়েছেন।
সাতক্ষীরা আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের সহকারী পরিচালক সাহজাহান কবির বলেন, সাতক্ষীরায় বর্তমানে ই পাসপোর্ট চালু রয়েছে। ই পাসপোর্ট আবেদনকারী ব্যাংকে টাকা জমা দিয়ে, ফরমপূরণ করে আবেদন ফরমের সাথে পুরাতন পাসপোর্ট বা আইডি কার্ড সংযুক্ত করে সরাসরি জমা দিচ্ছেন।
এরপর আমরা ছবি উঠানো, আইরিশ, ফিঙ্গার প্রিন্ট ধারণ করি এবং সাথে সাথে তদন্তে পাঠায়। আর যাদের এপ্রুভাল প্রিন্টের দরকার হয় তাদেরটা এপ্রুভাল দিয়ে প্রিন্টিংয়ের জন্য পাঠায়। এছাড়া নাম, বয়স, বানানসহ কিছু কারেকশনের জন্য আসলে আমরা উপযুক্ত ডকুমেন্টস জমা নিয়ে সিস্টেমে আপলোড করে কারেকশনের জন্য ঢাকাতে পাঠাই। আর যেগুলো কারেকশন বেশি থাকে সেগুলো আমরা তদন্তের জন্য পাঠাই। পাসপোর্ট গ্রাহকদের সমস্যা সমাধানকল্পে প্রতি সোমবার গণশুনানী করা হয়। ফলে গ্রাহকরা সাথে সাথে জানতে পারেন তাদের পাসপোর্টের সমস্যা কোথায়। শুনানীর দিন ছোট ছোট সমস্যাগুলো আমি সাথে সাথে সমাধান করে থাকি। আর যেগুলো আমার পক্ষে সমাধান করা সম্ভব না সেগুলো আমি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠাই।
তিনি আরো বলেন, বর্তমানে এই অফিসে দালালের কোন অপতৎপরতার সুযোগ নেই। সব কিছু গ্রাহক নিজে নিজে করতে পারছেন। ফলে এই অফিসে দিনদিন গ্রাহক বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং সরকারের রাজস্ব আদায় দিন দিন বাড়ছে। এছাড়া কেউ যদি কারও খপ্পড়ে পড়ে তবে সরাসরি তিনি আমাকে জানাতে পারবেন। নিচে আমি বিভিন্ন ব্যানারে লিখে দিয়েছি। আমাকে জানালে আমি সাথে সাথে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। আমি পাসপোর্ট অফিসের গেটে একটি জবাবদিহীতা বক্স স্থাপন করেছি। ফলে গ্রাহক কেমন সেবা পেল সেটি আমাকে লিখে জানাতে পারবে। এই অফিসের কোন কর্মকর্তা কর্মচারী যদি ভাল ব্যবহার করে তাকে পুরস্কার আর খারাপ ব্যবহার করলে তাকে শাস্তির আওতায় আনার জন্যই ওই জবাবদিহীতা বক্স স্থাপন করা হয়েছে।
তাছাড়া বীরমুক্তিযোদ্ধা, অসুস্থ্য ও প্রতিবদ্ধীদের বিশেষ কিছু সুবিধার ব্যবস্থা করেছি। আত্নপ্রেরণা নামক একটি সপ নিচ তলায় স্থাপন করেছি। সেখানে কলম, মাক্স, বিস্কিট, পানি ইত্যাদি নিজ নিজ দায়িত্বে পরিশোধ করতে হয়। এমনকি আমি একটি হেল্প ডেস্কও স্থাপন করেছি। কিন্তু কিছু কুচক্রিমহল এই পাসপোর্ট অফিসের সুনাম ক্ষুন্ন করতে উঠে পড়ে লেগেছে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন