সাতক্ষীরা সদর ও কলারোয়ায় খাদ্যবান্ধব কর্মসূচিতে নিন্মমানের চাল সরবরাহের অভিযোগ
সাতক্ষীরা সদর ও কলারোয়া উপজেলায় খাদ্যবান্ধব কর্মসূচিতে হতদিরদ্রের জন্য ১৫ টাকা কেজি দরে দীর্ঘদিনের পুরনো, পচা, দুর্গন্ধ ও পোকাধরা নিম্নমানের চাল বিক্রি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছেন ভুক্তভোগীরা।
আর এসব চাল সাতক্ষীরা সদর ও কলারোয়া খাদ্যগুদাম থেকে সরবরাহ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট ডিলাররা।
জানাযায়, খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির কার্ডধারীদের মাঝে ডিলারের মাধ্যমে ১৫ টাকা (পূর্বে ১০ টাকা) কেজি দরে চাল বিক্রি করা হচ্ছে। অতি কষ্টে উপার্জনকৃত টাকা দিয়ে এসব এলাকার হতদরিদ্র মানুষেরা ৩০ কেজি চাল সংগ্রহ করে বাড়িতে গিয়ে চালের বস্তা খুলে দীর্ঘদিনের পুরনো, পচা, দুর্গন্ধ ও পোকাধরা চাল দেখতে পাওয়ায় হতাশ ও ক্ষুদ্ধ হচ্ছেন। একইসাথে এ চাল ক্রয় করেই তারা বিপাকে পড়েছেন এমনটি অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। যদিও এবিষয়ে সংশ্লিষ্ট ডিলাররা গুদাম কতৃপক্ষকে অবহিত করলেও বিষয়টি গুরুত্ব দিচ্ছেন না গুদাম কর্তৃপক্ষ।
সম্প্রতি সাতক্ষীরা সদর উপজেলার আখড়াখোলা, কলারোয়া উপজেলার সোনাবাড়িয়া, হেলাতলাসহ অধিকাংশ ডিলার পয়েন্টে খাদ্য গুদাম কতৃপক্ষের সরবরাহকৃত পুরনো, পচা, দুর্গন্ধ ও পোকাধরা চাল সরকারের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির কার্ডধারী হতদরিদ্র মানুষের নিকট বিক্রি করতে দেখাগেছে।
সদর উপজেলার ঝাউডাঙ্গা ইউনিয়নের কাজল ঘোষ, নিত্যনন্দ, জাহানারা বেগম, কলারোয়া উপজেলার রহিমা খাতুন, হোসেন আলী, ছখিনাসহ একাধিক ভুক্তভোগী জানান, বর্তমানে ১৫ টাকা দরে যে চালগুলো দেওয়া হচ্ছে, তা পঁচা, দুর্গন্ধ ও পোকাধরা খাওয়ার উপযুক্ত নয়। এমনকি গরু বা হাস-মুরগির এ চাল দিলে তা খাচ্ছে না। তাদের অভিযোগ, কষ্টে উপার্জন করা টাকা দিয়ে খাওয়ার অনুপোযোগী এ চাল নিয়ে এখন আমরা কি করবো? আবার নষ্ট চাল ফেরত দিতে গেলে ডিলাররা খাদ্য অফিসে যেয়ে ফেরত দেয়ার জন্য বলছেন। যার ফলে এসব চাল ক্রয় করা হতদরিদ্র মানুষেরা হতাশ ও ক্ষুদ্ধ হয়ে বিষয়টি তদন্তে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সদর ও কলারোয়া উপজেলার একাধিক ডিলার সরবরাহকৃত চাল কিছুটা পঁচা, দুর্গন্ধ থাকার বিষয়টি জানালেও তারা বলেন, খাদ্য গুদাম থেকে চালসহ যে বস্তা আমাদের দেয়া হয় আমরা সেটাই হতদরিদ্রদের মাঝে সরবরাহ করি। এবিষয়ে খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা ভালো বলতে পারবেন। তবে এসব ডিলারও খাওয়ার উপযুক্ত চাল সরবরাহের জন্য গুদাম কতৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষন করেন।
এদিকে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচিতে পঁচা, দুর্গন্ধ ও পোকাধরা চাল বিক্রির বিষয়টি সঠিক তদন্তের দাবি জানিয়েছেন সাতক্ষীরা সদরের ঝাউডাঙ্গা ও কলারোয়া উপজেলার সচেতন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা। তারা বলেন, হতদরিদ্রদের মাঝে এ চাল সরবরাহ করে সরকারের ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন করায় চেষ্টা করছে অসাধু খাদ্যগুদাম কর্মকর্তারা।
স্থানীয় সচেতন মহল সাতক্ষীরা সদর ও কলারোয়া উপজেলার দায়িত্বরত ভারপ্রাপ্ত খাদ্য গুদাম কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বিষয়টি তদন্তের জন্য জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক, জেলা প্রশাসক এবং খাদ্য মন্ত্রনালয়ের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
পঁচা, দুর্গন্ধ ও পোকাধরা চাল সরবরাহের। বিষয়ে জানতে চাইলে সাতক্ষীরা সদর খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা (ওসিএলএসডি) অনিন্দ কুমার দাশ জানান, আমি নতুন যোগদান করেছি। চাল নিম্নমানের কিনা এবিষয়ে আগের কর্মকর্তারা বলতে পারবেন। তার পরেও এবিষয়ে আমি খোজ খবর নেব।
কলারোয়া উপজেলার খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা (ওসিএলএসডি) মমতাজ পারভীনের সাথে যোগাযোগ করা হলে ব্যবহৃত মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় কথা বলা সম্ভব হয়নি।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন