অনলাইনে ট্রেনের টিকিট কাটতে ভোগান্তি, যা বললেন ম্যানেজার

আসন্ন ঈদুল ফিতরকে কেন্দ্র করে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট অনলাইনে কাটতে সকালে মানুষকে ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হয়েছিল। বিষয়টি স্বীকারও করেছেন কমলাপুর রেলস্টেশনের ম্যানেজার মোহাম্মদ মাসুদ সারোয়ার। তিনি বলেন, আমরা জেনেছি অনলাইনে অনেকে টিকিট কাটতে পারছে না। এ বিষয়ে সহজডটকম কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা জানায়, সবাই যখন সকাল ৮টায় টিকিটের জন্য একসঙ্গে সার্ভারে লগইন করে, তখন সার্ভারে সাইবার জ্যাম হয়। একারণে সকাল আটটা ১০ মিনিট নাগাদ টিকিট পেতে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে।

শনিবার (২২ এপ্রিল) কমলাপুর রেলস্টেশনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, সকালের দিকে একটি টিকিটের জন্য একসঙ্গে ৫০০-৭০০ মানুষ হিট (চেষ্টা করে) করে, তখন সাইবার জ্যাম হয়। এই সময়টাতে টিকিট পেতে কিছু সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া তাদের রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে অনেক টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে। তার মানে মানুষ টিকিট পাচ্ছেন।

মাসুদ আরও বলেন, আজ ২৭ এপ্রিলের অগ্রিম টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে। ৮টা থেকে টিকিট বিক্রির কার্যক্রম শুরু হয়েছে, এখনও চলমান রয়েছে।

ঢাকা থেকে পশ্চিমাঞ্চলের মোট ১৬টি আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিট দেওয়া হচ্ছে উল্লেখ করে তিনির বলেন, ঈদ উপলক্ষে ঢাকা থেকে খুলনাগামী একটি স্পেশাল ট্রেন চলাচল করবে। আরেকটি ঢাকা থেকে জামালপুর। এই ২টি ট্রেন ২৯ তারিখ থেকে চলাচল করবে।

প্রতিবার ঈদ এলে স্টেশনে টিকিট কাটতে ভিড় হয়, কাউন্টারের সংখ্যা কেন বাড়ানো হয় না- এমন প্রশ্নের জবাবে স্টেশন ম্যানেজার বলেন, টিকিট কাউন্টারের সংখ্যা পর্যাপ্ত। একটা টিকিটের বিপরীতে কখনো ৭০০ মানুষের চাহিদা। আগে কমলাপুর থেকে সব ট্রেনের টিকিট বিক্রি হতো। এবার সেটি ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। ঢাকার অন্য আরও চারটি স্থান থেকে টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে। তবু স্টেশনে মানুষের চাপ নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না।

স্টেশনে মানুষের চাপের ব্যাখ্যায় মোহাম্মদ মাসুদ সারোয়ার বলেন, কোনো কোনো পথের ট্রেনে টিকিট ৭০০। এর মধ্যে কাউন্টারে ৩৫০ টিকিট। কিন্তু মানুষ টিকিটের সারিতে দাঁড়িয়েছে প্রায় ২ হাজার। এত চাপ নেওয়া কঠিন। যেহেতু আসন সংখ্যা সীমিত, তাই সীমিত সংখ্যক যাত্রীকেই টিকিট দিতে পারব।

কাউন্টারে টিকিট কেনায় ধীরগতি প্রসঙ্গে স্টেশন ম্যানেজার বলেন, মানুষ টিকিট পাওয়ার জন্য ভোরে বা রাতে এসে দাঁড়িয়েছে। যাত্রীর এনআইডি নম্বর নেওয়া হচ্ছে। টিকিট কাটতে গিয়ে একজন যাত্রীর জন্য অনেক অপশন থাকায় সময় নিতে হচ্ছে, যার ফলে দেরি হচ্ছে।

যাত্রার সময় যাত্রীর জন্মনিবন্ধন বা জাতীয় পরিচয়পত্র যাচাই করা হবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, স্টেশনের কর্মকর্তারা, ট্রেনের টিকিট এক্সামিনাররা এটা নিশ্চিত করবেন। যে এনআইডি দিয়ে টিকিট কেনা হয়েছে, যাত্রীর সঙ্গে সে এনআইডি থাকতে হবে। ভ্রমণের সময় যাত্রীকে এনআইডির কপি রাখতে হবে।

মাসুদ জানান, কমলাপুর স্টেশনে পশ্চিমাঞ্চল‌ ও খুলনাগামী ট্রেনের টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে। ঢাকা বিমানবন্দর স্টেশনে চট্টগ্রাম ও নোয়াখালীগামী আন্তনগর ট্রেনের টিকিট এবং তেজগাঁও স্টেশনে ময়মনসিংহ, জামালপুরগামী, দেওয়ানগঞ্জ স্পেশালসহ ওই অঞ্চলের সব আন্তনগর ট্রেনের টিকিট পাওয়া যাচ্ছে। ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট স্টেশনে মোহনগঞ্জ ও হাওর এক্সপ্রেস ট্রেনের এবং ফুলবাড়িয়া পুরোনো রেলওয়ে স্টেশন থেকে সিলেট ও কিশোরগঞ্জগামী আন্তনগর ট্রেনের টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, কাউন্টার থেকে টিকিট যেন কালোবাজারিদের হাতে না যায় সেজন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করা হচ্ছে। র‌্যাবসহ সরকারের বিভিন্ন এজেন্সি এখানে কাজ করছে। ফলে কাউন্টারের বাইরে অন্য কোনো উপায়ে টিকিট পাওয়ার সুযোগ নেই।

স্টেশন ব্যবস্থাপক বলেন, টিকিট কাটার সময় জন্ম নিবন্ধন বা জাতীয় পরিচয়পত্র দেখা হচ্ছে, যাতে টিকিটটা বাইরে বা কোনো কালোবাজারির হাতে না যায়। এ ব্যাপারে আমরা সচেষ্ট। টিকিট অন্য কোথাও পাওয়ার সুযোগ নেই।