আজানের জবাব ও সাওয়াব সম্পর্কে হাদিসের নির্দেশনা

মসজিদের মিনার থেকে মুয়াজ্জিনের কণ্ঠে উচ্চারিত হয় আজানের সুমধুর সুর। আজান শোনার পর এর জবাব দেয়ায় রয়েছে উপকারিতা ও সাওয়াব। হাদিসে পাকে প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তা সুস্পষ্টভাবে তুলে ধরেছেন।

আজান পরবর্তী সময়টি অনেক গুরুত্বপূর্ণ। যারা আজানের জবাব দেয়ার পর আল্লাহর কাছে কোনো কোনো কিছু প্রার্থনা করেন; আল্লাহ তাআলা বান্দার সে চাওয়া পূর্ণ করেন। আবার যথাযথভাবে আজানের জবাব দেয়ায় রয়েছে চিরস্থায়ী শান্তির স্থান জান্নাতের ঘোষণা।

আজানের জবাব, সাওয়াব ও উপকারিতা সম্পর্কে রয়েছে হাদিসের একাধিক নির্দেশনা ও সুসংবাদ-
– হজরত আনাস ইবনে মালেক রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘আজান ও ইক্বামতের মাঝে যে দোয়া করা হয়, তা ফেরত দেয়া হয় না।’ (মুসনাদে আহমদ, আবু দাউদ)

– হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, এক ব্যক্তি বললো, হে আল্লাহর রাসুল! মুয়াজ্জিনদের মর্যাদা যে আমাদের চেয়ে বেশি হয়ে যাবে। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, তুমিও তা-ই বল, মুয়াজ্জিন যা বলে। তারপর আজান শেষ হলে (আল্লাহর কাছে) চাও। (তখন) যা চাইবে তা-ই দেয়া হবে।’ (আবু দাউদ, মেশকাত)

– অন্য হাদিসে এসেছে, ‘মুয়াজ্জিনের সঙ্গে সঙ্গে যে ব্যক্তি আজানের শব্দগুলো বলবে, সে জান্নাতে যাবে।’ (আবু দাউদ, মেশকাত)

– আজানের জবাব দেয়ার বিবরণ ও প্রাপ্তি সম্পর্কে হাদিসের দীর্ঘ এক বর্ণনায় এসেছে-

হজরত ওমর ইবনুল খাত্তাব রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘তোমাদের কেউ যদি মুয়াজ্জিনের-
– ‘আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার’-এর জাওয়াবে ‘আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার’ বলে এবং
– ‘আশহাদু আল্-লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’-এর জওয়াবে ‘আশহাদু আল্-লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলে এবং
– ‘আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসুলুল্লাহ’-এর জওয়াবে ‘আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসুলুল্লাহ বলে তারপর – ‘হাইয়্যা আলাস্-সলাহ’-এর জওয়াবে ‘লা হাওলা ওয়ালা কুওয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহ’ বলে, তারপর
– ‘হাইয়্যা আলাল-ফালাহ’-এর জওয়াবে ‘লা হাওলা ওয়ালা কুওয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহ’ বলে, তারপর
– ‘আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার’-এর জওয়াবে ‘আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার’ এবং
– ‘লা-ইলাহা ইল্লল্লাহ’-এর জওয়াবে ‘লা-ইলাহা ইল্লল্লাহ’ বলে তাহলে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।’ (আবু দাউদ, মুসলিম)

সুতরাং আজানে সময় অযথা কথা নয়, বরং মুয়াজ্জিনের সঙ্গে সঙ্গে হাদিসের নির্দেমনা অনুযায়ী জবাব দেয়া উত্তম। আর আজানের জবাবের প্রাপ্তিও সর্বোত্তম জান্নাত। তারপর যে দোয়া-ই করা হয়; আল্লাহ তাআলা কবুল করে নেবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন স্বয়ং বিশ্বনবি।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে আজানের জবাব দেয়ার এবং আজানের পর নিজেদের জন্য দোয়া করার তাওফিক দান করুন। জান্নাতসহ যাবতীয় নেয়ামতে দুনিয়া ও পরকালের জীবনকে পরিপূর্ণ করে দিন। আমিন।