আফগানিস্তানে ১০ লাখ শিশুর মৃত্যুর শঙ্কা ইউনিসেফের

যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তানের এক কোটি শিশু মানবিক সহায়তার ওপর নির্ভর করে বেঁচে আছে বলে জানিয়েছে ইউনিসেফ। জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক তহবিলটি বলছে, চরম অপুষ্টিতে ভুগে এ বছরের মধ্যে আফগানিস্তানের দশ লাখ শিশু মারা যেতে পারে। এদিকে বিবিসি জানিয়েছে, জাতিসংঘের আহ্বানে সাড়া দিয়ে বিভিন্ন দেশ এক দিনের মধ্যেই ১০০ কোটি মার্কিন ডলারের বেশি অর্থ সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

রয়টার্স জানিয়েছে, ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক হেননিটা ফোরে এক বিবৃতিতে বলেছেন, আফগান শিশুরা যে দুঃখজনক পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে; জরুরি পদক্ষেপ নেওয়া ছাড়া যুদ্ধের ধকল, খরা, কোভিড মহামারী, অর্থনৈতিক, খাদ্য ও পানি সংকটের কারণে আগামী মাসগুলোতে এই পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটতে পারে।

আফগানিস্তানে সহায়তার জন্য ৬০ কোটি ডলার পাওয়ার আশায় সোমবার সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় দাতাদের নিয়ে সম্মেলনের আয়োজন করেছিল জাতিসংঘ। তবে তহবিল সংগ্রহে জাতিসংঘের প্রত্যাশাকে ছাড়িয়ে আফগানিস্তানের জন্য ১১০ কোটি ডলারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে দাতারা। বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির নির্বাহী পরিচালক ডেভিড বিসলি সম্প্রতি জানিয়েছেন, আফগানিস্তানে প্রতি তিন জনে একজন অর্থাৎ এক কোটি ৪০ লাখ মানুষ অনহারের মুখে পড়ার ঝুঁকিতে রয়েছেন। তারা জানেন না পরের খাবার কোথা থেকে পাবেন।

এ ছাড়া আরও এক কোটি ৪০ লাখ মানুষ চরম খাদ্যসংকটে ভুগছেন। তিনি আরও বলেছেন, আফগানিস্তানে কয়েকদিনের মধ্যে ভোজ্যতেলের দাম দ্বিগুণ হয়েছে। দেশটির গম উৎপাদন মারাত্মকভাবে হ্রাস পেয়েছে। দেশটির সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ চরম এই খাদ্যসংকটের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন; কিন্তু পরিস্থিতি চরম আকার ধারণ করেছে। আগামীতে পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে। বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির সহকারী আঞ্চলিক পরিচালক অ্যান্থেনা ওয়েব বলেছেন, ‘প্রাপ্তবয়স্করা না খেয়ে বাচ্চাদের খাবার দেওয়া ও পরের বেলার জন্য কম করে খাওয়ার ঘটনাও দ্বিগুণ হয়েছে।’

আল জাজিরা এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, অর্থকষ্টে থাকা আফগানরা খাবার জোগাতে থাল-বাটি, হাঁড়ি-পাতিল, বালিশ, কম্বল বিক্রি করছেন।

১৫ আগস্ট আফগানিস্তানের রাষ্ট্রক্ষমতায় তালেবানের প্রত্যাবর্তন ঘটে। ক্ষমতায় এসে তালেবান ঘোষণা দিয়েছে- তারা দাতা সংস্থাগুলোর কর্মীদের দেশে নিরাপদে কার্যক্রম পরিচালনার সুযোগ তৈরি করে দেবে। এ ছাড়া তালেবান ক্ষমতায় ফেরার পর কর্মীসংকটে ভুগছে দেশটি। কারণ শিক্ষিত কর্মীবাহিনীর অনেকেই দেশ ছেড়েছেন।