‘ইতিহাস বিকৃত করলেই প্রতিবাদ’- হুঁশিয়ারি সোহেল তাজের

সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তানজিম আহমেদ সোহেল তাজ বলেছেন, আমি প্রহরী ‘৭১ এর পক্ষ থেকে জানাতে চাই যে আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি করার চেষ্টা করলে- সে যেই হোক না কেন- প্রমাণসহ প্রতিবাদ করা হবে।

শনিবার সন্ধ্যায় নিজের ফেসবুক পেজে ‘হুঁশিয়ারি/সতর্কীকরণ:’ শিরোনামে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি এসব কথা বলেন।

সোহেল তাজ বলেন, ‘বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে আমাদের যদি এই দেশের প্রতি বিন্দু মাত্র ভালোবাসা থাকে তাহলে আমাদের সবারই চেষ্টা করা উচিৎ উপকার বা অবদান না রাখতে পারলেও অন্তত এই দেশের ভবিষ্যৎ যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেদিকে সোচ্চার থাকা। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু, জাতীয় চার নেতা, ৩০ লাখ শহীদসহ যারা এই দেশের জন্য প্রাণ দিয়েছে তাদের প্রতি যদি ন্যূনতম কৃতজ্ঞতাবোধ থাকে তাহলে আমরা সবাই অন্তত তাদের ত্যাগ এবং অবদানকে অস্বীকার করতে পারি না বরঞ্চ তাদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করতে পারি বাংলাদেশের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসকে সঠিক ভাবে সংরক্ষণ করে’।

দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের সন্তান তানজিম আহমেদ সোহেল তাজ বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু, জাতীয় চার নেতা, ৩০ লাখ শহীদ সহ যারা এই দেশের জন্য প্রাণ দিয়েছে তাদের প্রতি যদি ন্যূনতম কৃতজ্ঞতা বোধ থাকে তাহলে আমরা সবাই অন্তত তাদের ত্যাগ এবং অবদানকে অস্বীকার করতে পারি না। বরং তাদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করতে পারি বাংলাদেশের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসকে সঠিক ভাবে সংরক্ষণ করে।

তিনি আরও বলেন, ১৭ এপ্রিল মুজিবনগর দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে বাংলাদেশের প্রথম সরকার শপথ গ্রহণ করে। বঙ্গবন্ধুকে রাষ্ট্রপতি করে এই সরকার গঠন করা হয়। বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে উপ রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম অস্থায়ী রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেন, তাজউদ্দীন আহমদ প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী, এ এইচ এম কামারুজ্জামান মন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

সোহেল তাজ বলেন, আমার খুব আশ্চর্য লাগে যখন অনেক বিজ্ঞ মানুষদের মুখ থেকে শুনি আর তাদের লেখায় পড়ি যে এই সরকার নাকি অস্থায়ী সরকার ছিল। তারা আসলে যেন জেনে না জেনে ইতিহাসকে গুবলেট বানিয়ে ফেলেছে- অস্থায়ী রাষ্ট্রপতির সাথে গোটা সরকারকেই অস্থায়ী বানিয়ে দিয়েছে যা ইতিহাস বিকৃতির শামিল এবং আমি মনে করি তা বঙ্গবন্ধু, জাতীয় চার নেতা এবং বাংলাদেশকে অবমাননা করার শামিল।

ফেসবুক স্ট্যাটাসে এ বিষয়ে নিজের ব্যাখ্যায় তিনি লেখেন, অস্থায়ী সরকার বলে কোনো সরকার ছিল না- এটা ছিল গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের প্রথম সরকার। বঙ্গবন্ধু ছিলেন এই সরকারের রাষ্ট্রপতি (প্রথম রাষ্ট্রপতি) এবং ওনার অবর্তমানে উপ রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম অস্থায়ী রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে ১৯৭২ সালের জানুয়ারি মাসে বঙ্গবন্ধু স্বাধীন বাংলাদেশে ফিরে আসার পর ১২, জানুয়ারি ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ সরকার বিশেষ অর্ডিন্যান্স জারি করে। এই অর্ডিন্যান্স জারির মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব ভার গ্রহণ করেন এবং একই সঙ্গে মন্ত্রীসভার ১১ জন সদস্যের নামের তালিকা পেশ করেন। মহান মুক্তিযুদ্ধের পরিচালনাকারী বাংলাদেশের প্রথম সরকারই হচ্ছে পরবর্তী সকল সরকারের ভিত্তি মূল, তাই এই সরকারকে অস্থায়ী সরকার বলার কোনো সুযোগ নাই।

এর আগে শুক্রবার ১৭ এপ্রিল মুজিবনগর দিবস (যেদিন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের প্রথম সরকার শপথ গ্রহণ করে) উপলক্ষে একটি সরকারি প্রজ্ঞাপনে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন সোহেল তাজ। শনিবার একই বিষয়ে আরেকটি স্ট্যাটাস দিলেন তিনি।