ইবিতে পূর্বের ঘটনার জের ধরে শিক্ষার্থীকে মারধর

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) পূর্বের ঘটনার জের ধরে এক শিক্ষার্থীকে মারধরের ঘটনা ঘটেছে। এতে ফলিত পুষ্টি ও খাদ্য প্রযুক্তি বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শরীফুজ্জামান শোভন মারধরের শিকার হোন।

রবিবার (৯ জুলাই) দুপুর সাড়ে ১১ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ঝালচত্ত্বরের কপি শপের সামনে এ ঘটনা ঘটে। পরে দুপুর দেড়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর শাহাদৎ হোসেন আজাদ বরাবর নিরাপত্তা চেয়ে একটি অভিযোগ পত্র দাখিল করেছেন ভুক্তভোগী।

জানা যায়, গত ২৫ মে ফলিত পুষ্টি ও খাদ্য প্রযুক্তি বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শরীফুজ্জামান শোভনের সাথে একই বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ওলিউর রহমান ওলির ব্যক্তিগত কার্যকালাপ ও মতের অমিলের কারণে ধাক্কাধাক্কি হয়। এক পর্যায়ে শোভন ওলিকে চড় মারেন। এতে ওলি ক্ষুব্ধ হয়ে ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ইংরেজি বিভাগের মাসুদ রানা, বাংলা বিভাগের তাওহীদ তালুকদার ও হিউম্যান রিসোর্স এন্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সজিব আহমেদসহ তার বেশ কয়েকজন বন্ধুকে শোভনকে মারার জন্য ডাকে। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে এ নিয়ে দু:পক্ষের মধ্যে মারামারি ঘটনা ঘটে। এতে মাসুদসহ উভয় পক্ষের বেশ কয়েকজন আহত হয়।

পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা সমিতির সাধারণ সম্পাদক ওয়ালিদ হাসান (মুকুট) ও ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা দু:পক্ষের মাঝে বিষয়টি সমাধান করে দেন।

তবে আজ সোমবার বেলা ১১ টার দিকে ওই ঘটনার জের ধরেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ঝালচত্ত্বরের কপি শপের সামনে সোমবার মাসুদ, তাওহীদ, সজিবসহ ১০-১২ জন শোভনের উপর অতর্কিত হামলা করে। এতে তার নাক, মুখ, মাথায় ও হাতের আঙ্গুলে মারাত্মক আঘাতপ্রাপ্ত হোন। এছাড়াও তাকে যদি ক্যাম্পাসে পূনর্বার দেখে, তাহলে মেরে ফেলার হুমকি দেয়।

এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পত্রে ভুক্তভোগী বলেন, আমি ক্লাস করার পর আনুমানিক ১০.৩০ মিনিটে ক্যাম্পাসের ডায়না চত্ত্বরের দিকে যাই। ঠিক সেই মুহূর্তে ১০-১২ জনের একটি সংঘবদ্ধ দল ২০২০-২০২১ শিক্ষাবর্ষের ইংরেজি বিভাগের ছাত্র মোঃ মাসুদের নেতৃত্বে হিউম্যান রিসোর্স এন্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সজিব, বাংলা বিভাগের তৌহিদ (২০২০-২১) আমার উপর অতর্কিত হামলা করে কিল ঘুষি লাথিসহ রাস্তার উপর ফেলে মাথায় আঘাত করতে থাকে। এতে করে আমার মাথায় মারাত্মক ভাবে ক্ষতি হয়েছে। নাক-মুখ হাতের আংঙ্গুল জখমসহ রক্তপাত হয়েছে এবং আমার হাতঘড়ি, চশমা, মানিব্যাগ তারা কেড়ে নিয়ে আমার উপর অমানুষিক নির্যাতন করে। এমনকি তারা বলতে থাকে তোকে যেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে আর না দেখি তোকে দেখলে মেরে ফেলবো।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী মাসুদ রানা বলেন, ক্যাম্পাস বন্ধের আগে আমাদের উপর অতর্কিত হামলা চালানো হয়েছিল। ওই বিষয়ে প্রক্টর বরাবর অভিযোগ দিয়েছিলাম। কিন্তু কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। আজকে সকালে আমরা ঝাল চত্বরে ছিলাম। তখন শোভন আমাদের দেখে খুবই বাজে ভাবে কথা বলছিল। তার বাজে অঙ্গভঙ্গির ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করতে গেলে সে আমার শার্টের কলার ধরে মারধর করার চেষ্টা করে। তখন কিছুটা হাতাহাতি হয়।

এছাড়া হাতঘড়ি, চশমা, মানিব্যাগ কেড়ে নেওয়ার অভিযোগ অসত্য বলে জানান তিনি।

আরেক অভিযুক্ত সজিব আহমেদ বলেন, ঘটনার সময় আমি হলে ছিলাম। এ ব্যাপারে আমি কিছু জানি না। আমি আমার গেস্টের জন্য নাস্তা আনতে ঝালচত্ত্বরে গিয়েছিলাম। তখন মারামারি হয়েছে কিনা জানি না।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত তাওহীদ তালুকদারের সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তিনি ফোন ধরেনি।

এ বিষয়ে কর্তব্যরত ড. ওয়াহিদুল ইসলাম বলেন, ওই শিক্ষার্থীর মাথার পিছনের চামড়া ছিড়ে গেছে। এতে সে মারাত্মক আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছেন। আঘাতপ্রাপ্ত হওয়ার কারণে মাথায় কোন জটিল সমস্যা হয়েছে কিনা? এটা জন্য তাকে সিটিস্ক্যান করতে পরামর্শ দিয়েছি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর শাহাদাৎ হোসেন আজাদ বলেন, আমরা অভিযোগ পত্র হাতে পেয়েছি এবং বিষয়টি আমলে নিয়েছি। আগামীকাল ছাত্র-উপদেষ্টার সাথে কথা বলে আমরা পরবর্তী সিদ্ধান্ত নিবো।