এক কম্বলে শীত কাটে না চুয়াডাঙ্গার গরীব অসহায় ছিন্নমূলদের

মনে রাখার মত একাধারে চলছে শীত। সারা দেশের মধ্যে এবার চুয়াডাঙ্গায় শীতের সাহস দেখেছে জেলাবাসী। গরমের সময় গরম শীতের সময় শীতে জড়োসড় হয়ে পড়ে চুয়াডাঙ্গা জেলার মানুষ।

মাঝারী মৃদু ও তীব্র শৈত্য প্রবাহ পড়ার রেকর্ড থাকে চুয়াডাঙ্গায়। সেই অংশ হিসেবে এবারও দেশের সর্বনিম্ন শীত বয়ে যাচ্ছে এ জেলার উপর দিয়ে। গতকালও দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৬.৩ ডিপ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড হয় চ্য়ুাডাঙ্গায়।

তবে আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে আগামী ১৬ জানুয়ারীর পর থেকে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ অনুভুত হতে পারে।
যার ফলে আবারও স্থবির হয়ে যেতে জনজীবন। কর্মজীবন হয়ে উঠতে পারে কঠিন। শীত এলেই বিশেষ করে খেটে খাওয়া শ্রমিক পর্যায়ের মানুষগুলো জীবীকা নির্বাহে বিশালভাবে ধাক্কা খায়। এককথায় শীত প্রকৃতির ডাক হলেও তাদের জন্য যে বিষঁেফাড়া। প্রকৃতির ছাপ নির্ধারিত, শীত আসবেই। আর পুরো শীতকে ঘিরে চুয়াডাঙ্গার গরীব অসহায় ছিন্নমূল মানুষের শীতের ছোয়ায় অসহনীয় কষ্টে জীবন অতিবাহিত করতে হয় তাদের। এজন্য শীত নিবারণে সরকারী বেসরকারীভাবে হাজার হাজার কম্বল বিতরণ করলেও তারমধ্যেও বাদ পড়ে যায় অনেক গরীব অসহায় ছিন্নমূল মানুষ। যা বাস্তবিক পক্ষে প্রতি বছরই শোনা যায় কম্বল না পাওয়ার অভিযোগ অনেকের। অথচ সরকারী ও বেসরকারীভাবে কষ্ট লাঘবে বিতরণ করা হয় হাজার হাজার কম্বল।

তাহলে সরকারী বেসরকারীভাবে কম্বল দেয়া হয় কাদেরকে। যারা এ ভালো কাজে অংশগ্রহণ করে তাদেরকে সাধুবাদ। কিন্তু খোলা চোখেও তাদের চোখে পড়ে না অনেক সরকারী বেসরকারী সংস্থাগুলোর। এতেই বোঝা যায় দায়িত্ববোধ না থাকায় বাদ পড়ে যায় কম্বল পাওয়ার যোগ্য মানুষগুলো। তাছাড়া যারা পাওয়ার যোগ্য নয় তাদের অনেকেই সেসব কম্বল পাওয়ার গুঞ্জন প্রচলিত রয়েছে। তাই শীত আসলেই প্রকৃত গরীব অসহায় ও ছিন্নমূল মানুষে খুঁজে বের করে তাদের শীতের হাত রক্ষা করতে হবে।

তবে এ কাজগুলো পুরোপুরি জনসেবামুলক এবং জনপ্রতিনিধিত্বের কাজ। অথচ এ কাজগুলো রাজনৈতিক জনপ্রতিনিধিত্বের মূল দায়িত্ব থাকলেও শীত নিবারণে কর্তব্য পালন করে না বেশিরভাগ নেতারাই।

তবে মানবতার বিভিন্ন সংস্থার আয়োজনে শীতবস্ত্র দেয়ার সকল কার্যক্রমে জেলার সকল সেসকল নির্বাচিত দায়িত্বপ্রাপ্ত রাজনৈতিক নেতারা শুধু অংশগ্রহণ করে কম্বল বিতরণে সংবাদের শিরোনামে ওঠে। কিন্তু সেসকল অনেক শীর্ষনেতাদের নিজ নিজ অর্থায়নে কম্বল বিতরণ খুব একটা চোখে পড়ে না; যা দুঃখজনক। কিন্তু সারাদেশের মধ্যে শীতের জেলা হিসেবে চুয়াডাঙ্গা অন্যতম বলে আখ্যায়িত রয়েছে। শীত নিবারণে সমাজে যাদের নিজ নিজ অর্থায়নে গরমকাপড় কেনার সামর্থ রয়েছে তারাও কিন্তু ঠিকই কমপক্ষে তিনটা চারটা এমনকি পাচটা দামীদামী জামাকাপড় জ্যাকেট সোয়েটারসহ বিভিন্ন ধরনের মোটা মোটা বস্ত্র পড়লেও শীত অনুভব করে থাকে। তাহলে ওইসকল গরীব অসহায় ছিন্নমুল মানুষের মাত্র একটা কম্বলে শীত নিবারণ কীভাবে হতে পরে তা সচেতন মানুষের কোনভাবেই বোধগম্য নয়।

এদিকে, সমাজে যারা বর্তমানে রাজনৈতিক নেতা হিসেবে প্রতিনিধিত্বকারী বিভিন্ন সরকারী বেসরকারী সংস্থাসহ সমাজের বিত্তশালীরা রয়েছে তারা যদি সবাই এগিয়ে আসে তাহলে একেকটা গরীব অসহায় ছিন্নমূল মানুষগুলো একটার পরিবর্তে তিন চারটা করে কম্বল পায় তাহলে শীতের ভয়াবহ কষ্ট থেকে অনেকটাই রক্ষা পাবে তারা। কিন্তু তা না হয়ে কিছু সংখ্যক বিত্তশালীরা একটা করে কম্বল দিয়ে উপকার করে ঠিকই কিন্তু দেশের সর্বনিম্ন রেকর্ড তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায় বয়ে যাওয়ায় একটা কম্বলে শীত নিবারণ হচ্ছেনা বলেও দাবী করেছে অসহায়দের অনেকেই। এতেই বোঝা যায় সমাজের সবারই একই অবস্থা বলে মন্তব্য সচেতন মানুষেরও। এখনও শীতের সুযোগ যেহেতু রয়েছে সেহেতু সরকারী বেসরকারী সংস্থাসহ বিত্তশালীরা এগিয়ে আসার মানসিকতা তুলে ধরার সুযোগ রয়েছে। সেইসাথে আগামীতেও এমন উদ্যোগ গ্রহণ করার আগাম প্রস্তুতি নিবেন এমনটাই কামনা সচেতন মানুষের।

গরীব রাবেয়া খাতুন বলেন, এ শীতে আমি একটা কম্বল পেয়েছি কিন্তু যে শীত পড়ছে একটা কম্বলে কিছুই হচ্ছে না। তিন চারটা কম্বল হলে হয়তো ভালো হতো। আমাদের তো লেপও নেই শুধু একটা কম্বল দিয়ে যে শীত তা ঠেকানো যাচ্ছে না। অনুসন্ধানে দেখা গেছে এমন অবস্থা সব অসহায়দেরই।
একটা কম্বলে শীত কতটুকু কাটে সে বিষয় নিয়ে বাংলাদেশ ক্যাব’র চুয়াডাঙ্গা জেলার সভাপতি অ্যাড. মানিক আকবর বলেন, চুয়াডাঙ্গায় প্রতিবারের ন্যায় এবারও দেশের সর্বনিম্ন শীত পড়ছে চুয়াডাঙ্গায়। এ শীতে আমরা তিন চারটা জামাকাপড় সোয়েটার জ্যাকেট পড়েও শীতে কাবু হয়ে পড়ছি। সেতুলনায় গরীব অসহায় ছিন্নমূল মানুষের একটা কম্বলে শীত নিবারণ হওয়ার কথা নয়।

সমাজের যত বিত্তশালীরা আছে সবার সহযোগিতায় যদি একেকজনকে তিন চারটা করে কম্বল পায় তাহলে অন্তত শীতের কষ্ট থেকে অনেকটাই রক্ষা পাবে তারা।