এমপিওভুক্তির জন্য ৬৪১২ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আবেদন

এমপিওভুক্তির জন্য সারা দেশের প্রায় সাড়ে ছয় হাজার স্কুল-কলেজ আবেদন করেছে। সোমবার বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত অনলাইনে এ আবেদন জমা পড়ে। গত ১৫ দিনে এসব অনলাইন আবেদন জমা পড়েছে বলে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জানা গেছে।

মঙ্গলবার দুপুরে এমপিওভুক্তি প্রতিষ্ঠান যাচাই-বাছাই কমিটির আহ্বায়ক এবং মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (বেসরকারি মাধ্যমিক) জাবেদ আহমেদ বলেন, এমপিওভুক্তির জন্য সাধারণ স্কুল-কলেজ থেকে ছয় হাজার ৪১২টি প্রতিষ্ঠানের আবেদন জমা হয়েছে। গত ৫ আগস্ট থেকে শুরু হয়ে সোমবার রাত ১২টা পর্যন্ত আবেদন কার্যক্রম চলে।

কতগুলো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাকে তালিকা করার দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল এখন সরকার সিদ্ধান্ত নেবে। ঈদের ছুটির পর আবেদনকারী প্রতিষ্ঠানের তালিকা ও যোগ্যতার ওপর একটি প্রতিবেদন তৈরি করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে দেয়া হবে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, আগামী ৮ সেপ্টেম্বরের পর আবেদন করা প্রতিষ্ঠানের যাচাই-বাছাই কাজ শুরু হবে। এরপর খসড়া তালিকা মন্ত্রীর কাছে উপস্থাপন করা হবে। চলতি অর্থবছরে স্কুল-কলেজ এমপিওভুক্তিতে ৪৩২ কোটি দুই লাখ ৭৩ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। গত বছর মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর (মাউশি) সারা দেশের এমপিওবিহীন সাত হাজার ১৪২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করতে বার্ষিক দুই হাজার ১৮৪ কোটি ২৭ লাখ ৫২ হাজার ২৫০ টাকা চাহিদা পাঠিয়ে ছিল মন্ত্রণালয়ে। এ হিসাবে বরাদ্দকৃত অর্থে পাঁচ শতাধিক প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা সম্ভব হবে। সংসদীয় আসনপ্রতি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করার নীতিগত সিদ্ধান্ত মন্ত্রণালয়ের। সেভাবেই সফটওয়ারের মাধ্যমে গ্রের্ডিং করা হয়েছে।

জানা গেছে, গত ৫ আগস্ট থেকে আবেদন নেয়া শুরু হলে মন্ত্রী-এমপিরা নিজ নিজ এলাকার স্কুল-কলেজ এমপিও করতে তদবির শুরু করেছেন। এরই মধ্যে ডিও লেটারের স্তূপ জমেছে মন্ত্রণালয়ে। তাদের চাহিদা পূরণ করতে হলে অন্তত পাঁচ হাজার প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করতে হবে।

এদিকে, এমপিওভুক্তির জন্য স্কুল-কলেজ আবেদন কার্যক্রম শেষ হলেও কারিগরি ও মাদরাসার এমপিওভুক্তির আবেদন প্রক্রিয়া এখনো শুরু হয়নি। এমপিও নীতিমালাও জারিতেও বিলম্ব করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগ।

জানতে চাইলে এমপিওভুক্তির জন্য প্রতিষ্ঠান (কারিগরি ও মাদরাসা) যাচাই-বাছাই কমিটির আহ্বায়ক এবং কারিগরি ও মাদরাসা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন ও উন্নয়ন) এ কে এম জাকির হোসেন ভুঞা বলেন, সচিব বিদেশে থাকায় এমপিওভুক্তির আবেদন কার্যক্রম শুরু করতে দেরি হচ্ছে। আগামী ২৬ আগস্ট থেকে আবেদন শুরু হবে। ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আবেদন করা যাবে।

উল্লেখ্য, ২০১০ সালের পর থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তি বন্ধ রয়েছে। গত ১০ জুন থেকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এমপিওভুক্তির দাবিতে বেসরকারি নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা অনশনসহ নানা কর্মসূচি পালন করেন। পরে সরকারের আশ্বাসে তারা বাড়ি ফিরে যান। এর আগে গত ডিসেম্বর মাসেও জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আন্দোলন করেছেন। ২০১৩ সাল থেকে শিক্ষকরা দাবি আদায়ে নানা কর্মসূচি পালন করছেন। তাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতেই সরকার নতুন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির সিদ্ধান্ত নিয়েছে।