ওসব শহরে আমার মতো পাপিষ্ঠার জায়গা হয়নি : তসলিমা
২৭ মার্চ ছিল বিশ্ব নাট্য দিবস। এ উপলক্ষে নাটক নিয়ে নিজের আবেগ ও উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন ভারতে নির্বাসিত বাংলাদেশি লেখিকা তসলিমা নাসরিন।
দেশের বাইরে অবস্থান করায় বিশ্ব নাট্য দিবস উপলক্ষে তৈরি নাটকগুলো দেখা হয়নি তার। সে জন্য প্রচণ্ড আফসোস করেছেন তিনি।
তবে দুধের স্বাদ ঘোলে মেটাতে তিনি ভারতের দিল্লিতে বাংলা নাটক দেখেছেন। এ বিষয়ে তিনি আজ ( ১ এপ্রিল) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন।
তার সেই স্ট্যাটাসটি তুলে ধরা হলো –
‘ঢাকায় বা কলকাতায় থাকলে বিশ্ব নাট্য দিবস উপলক্ষে যে নাটকগুলো হয়েছে তা দেখে নিশ্চয়ই আমার প্রাণ জুড়াত। কিন্তু আমি তো আর সে কপাল নিয়ে জন্মাইনি। ওসব শহরে বড় বড় পূণ্যবান-পূণ্যবতী বাস করেন বলে আমার মতো পাপিষ্ঠার জায়গা হয়নি।
তবে বাংলা নাটক দেখা হয়েছে বাংলার বাইরে, দিল্লিতে। বাংলা সংস্কৃতির পীঠস্থান মুক্তধারা গতকালই পালন করেছে বিশ্ব নাট্য দিবস। মুক্তধারায় সারাদিন ২৪টি নাটক হয়েছে গতকাল। অসাধারণ সব নাটক। যে কটা নাটকই দেখেছি, চমৎকার।
কিছুদিন আগে চিত্তরঞ্জন ভবনে বাংলা নাটকের উৎসবেও দেখেছি কিছু নাটক। লক্ষ করেছি, সমাজ নষ্ট হয়ে গেলেও, রাজনীতি পচে গেলেও, মানুষ বদলে গেলেও, মূল্যবোধের অবক্ষয় হলেও নাটকে এখনও মানুষের কথা বলা হয়; এখনও বৈষম্যের বিরুদ্ধে, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে, অন্যায়ের বিরুদ্ধে, ঘৃণার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ শুনি।
শুদ্ধ কিছু, সুন্দর কিছু, স্বপ্নবান কিছু মানুষ যেন পৃথিবীর আবর্জনা থেকে, মিথ্যে থেকে নিজেদের সরিয়ে এখনও সত্য উচ্চারণ করার দুঃসাহস দেখাচ্ছেন।
২৭ মার্চ ছিল বিশ্ব নাট্য দিবস। ১৯৬১ সালে আন্তর্জাতিক থিয়েটার ইন্সটিটিউট ঘোষণা করেছিল এই দিবসটি। মূলত ইউরোপে পালন করা হতো বিশ্ব নাট্য দিবস। এখন তো সারা বিশ্বের নাট্যপ্রেমীরা পালন করেন এই দিবস।
শিল্প সংস্কৃতিতে যখন পচন ধরবে, বুঝবো যে আশা বলে কিছু আর কোথাও নেই। শিল্প সংস্কৃতি বেঁচে থাকুক। নাটক বেঁচে থাকুক। নাটক মানুষের কথা বলুক, মানুষকে চিরকাল সত্যের আর সুন্দরের স্বপ্ন দেখাক।’
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন