করোনা: তৃতীয় ঢেউয়ের শঙ্কা রেখে স্থিতিশীল দ্বিতীয় ঢেউ

দীর্ঘ সাড়ে ছয় মাস পর করোনাভাইরাসের শনাক্তের হার ৫ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে। যার ফলে করোনা সামাজিক সংক্রমণ থেকে স্থিতিশীল সংক্রমণ পর্যায়ে চলে এসেছে। করোনার এই অবস্থাকে নিয়ন্ত্রিত বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

তাদের মতে, এখন একজন থেকে একজন সংক্রমণ ঘটাচ্ছে। বর্তমান অবস্থা ধরে রাখতে পারলে ক্রমান্বয়ে করোনা সংক্রমণ কমে শূন্যতে আসবে। তবে স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। তা নাহলে পরিস্থিতির আবার অবনতি ঘটতে পারে।

এ প্রসঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (অসংক্রমক রোগ নিয়ন্ত্রণ বিভাগ) ও প্রতিষ্ঠানের মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. রোবেদ আমিন বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, ‘করোনাভাইরাসের দৈনিক সংক্রমণ পাঁচ শতাংশের নিচে আসা মানে হচ্ছে স্টেবল ট্রান্সমিশন। এর মানে হল- ১:১, অর্থাৎ করোনা সর্বোচ্চ একজন থেকে একজনের ছড়াতে পারবে। আগের যেমন একজন থেকে দুই-তিনজনে ছড়াতো সেটি এখন হবে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘করোনার ট্রান্সমিশন আছে তবে জিরো (শূন্য) হয়নি। এখন যদি এভাবে রেখে দেয়া যায়, তাহলে আস্তে আস্তে কমে যাবে। শূন্য হয়ে যাবে। পরিস্থিতি সেদিকেই যাচ্ছে। এটি একটি ভালো খবর।’

আবার করোনা সংক্রমণ বাড়ার সম্ভাবনা আছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক ডা. রোবেদ আমিন বলেন, ‘হ্যাঁ আছে। ১:১ টান্সমিশন আছে, এখনো বন্ধ বা জিরো হয়নি। সুতরাং এখন আবার একজন থেকে আরেকজন, আরেকজন থেকে একাধিক জনের সংক্রমণ ঘটলে আবার বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এজন্য স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলতেই হবে। আত্মতুষ্টির সুযোগ নেই।’

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সর্বশেষ পরিসংখ্যান বলছে, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা শনাক্তের হার ৪.৬৯ শতাংশ। এরআগে গত ৮ মার্চ দৈনিক শনাক্তের হার ৫ শতাংশের নিচে ছিলো। সেদিন শনাক্তের হার ছিল ৪ দশমিক ৯৮ শতাংশ। মূলত সেদিন থেকেই করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হয়। এরপর থেকে ক্রমান্বয়ে বাড়তে বাড়তে দৈনিক শনাক্তের হার ৩০ শতাংশের বেশি উঠে যায়।

দেশে প্রথম করোনাভাইরাসের রোগী শনাক্ত হয় গত বছরের ৮ মার্চ। এরপর ১৮ মার্চ করোনায় দেশে প্রথম মৃত্যু ঘটে। পরে ২৬ মার্চ থেকে বিধি-নিষেধ জারি করে সরকার। কয়েক মাস সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার ঊর্ধ্বগতিতে থাকার পর নিয়ন্ত্রণে আসে। তখন শনাক্তের হারও ৫ শতাংশের নিচে নেমে এসেছিলো।

আজ মঙ্গলবার (২১ সেপ্টেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো করোনাবিষয়ক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় (সোমবার সকাল আটটা থেকে মঙ্গলবার সকাল আটটা) সারাদেশে এক হাজার ৫৬২ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। এ সময়ে করোনায় মারা গেছেন ২৬ জন।

সব মিলিয়ে দেশে এখন পর্যন্ত করোনা সংক্রমিত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১৫ লাখ ৪৫ হাজার ৮০০ জন। আর মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৭ হাজার ২৭৭ জনে। এছাড়া করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ১৫ লাখ ৪ হাজার ৭০৯ জন।