কলকাতায় পাচার হচ্ছে ইলিশ; কেজি সাড়ে ৩ হাজার টাকা

মাছের রাজা ইলিশ। বাংলাদেশে পহেলা বৈশাখে পান্তা ইলিশের যেমন কদর বেড়ে যায় বহুগুণ। তেমনি দুর্গাপূজাকে সামনে রেখে পদ্মার সুস্বাদু ইলিশ পেতে মরিয়া কলকাতার মানুষ।

দুর্গাপূজা সামনে রেখে পশ্চিমবঙ্গে ইলিশ নিয়ে রীতিমতো চলছে কাড়াকাড়ি। প্রচুর চাহিদার কারণে ইলিশের দাম ঠেকেছে আকাশচুম্বী। প্রতি কেজি ইলিশ বিক্রি হচ্ছে তিন হাজার রুপিতে, বাংলাদেশি টাকায় যার দাম প্রায় সাড়ে তিন হাজার টাকায়। এর জেরে বাংলাদেশের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে ভারতে পাচার হচ্ছে ইলিশ।

সম্প্রতি ভারতের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এসব তথ্য। কলকাতার লেক মার্কেটের এক মাছ বিক্রেতা টাইমস অব ইন্ডিয়াকে জানিয়েছেন, দুই কেজির একটি ইলিশ ছয় হাজার রুপি দিয়ে কিনছেন ক্রেতারা।

বর্তমানে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যকার কূটনীতির অন্যতম হাতিয়ার হয়ে উঠেছে ইলিশ। পশ্চিমবঙ্গ সরকার তিস্তা নদীর পানিবণ্টন চুক্তির বিরোধিতা করার পর ২০১২ সালে ভারতে ইলিশ রপ্তানি নিষিদ্ধ করে বাংলাদেশ। সেই নিষেধাজ্ঞা বহাল রয়েছে এখনো। তবে গত বছর দুর্গাপূজা সামনে রেখে ভারতে ১ হাজার ৪৭৫ মেট্রিক টন ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দিয়েছিল সরকার। কিন্তু চলতি বছর পূজা ঘনিয়ে এলেও এখনও ইলিশ পাঠানোর কোনো ইঙ্গিত নেই বাংলাদেশ। এমন পরিস্থিতিতে কলকাতাবাসীর মুখের তৃপ্তি মেটানোর একমাত্র ভরসা হয়ে উঠেছে পাচার হয়ে যাওয়া ইলিশ।

টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে আরও জানানো হয়, কলকাতায় পৌঁছানো বেশিরভাগ ইলিশ যাচ্ছে নদীপ্রধান আঙ্গরাই-হাকিমপুর সীমান্ত দিয়ে। উত্তরবঙ্গের পাহাড়ি সীমান্ত দিয়েও পাচার হচ্ছে ইলিশ। সম্প্রতি একটি সীমান্তচৌকিতে তল্লাশি চালিয়ে বিপুল পরিমাণ ইলিশ জব্দ করে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ।

বাবলু নস্কর নামে লেক মার্কেটের এক মাছ বিক্রেতা টাইমস অব ইন্ডিয়াকে জানিয়েছেন, চলতি বছর মৌসুমের শেষ দিকে চোরাচালানের মাধ্যমে বাজারে প্রবেশ করছে ইলিশের অনেক চালান। ফলে মাছের সরবরাহ বেশ স্থিতিশীল এবং চাহিদাও রয়েছে প্রচুর।

এদিকে ইলিশ পাচারের বিষয়টি স্বীকার করে পশ্চিমবঙ্গের মৎস্যমন্ত্রী অখিল গিরি জানিয়েছেন, বাংলাদেশ থেকে কিছু ইলিশ তাদের বাজারগুলোতে যাচ্ছে। যদিও এটি চাহিদার তুলনায় অনেক কম বলেও মন্তব্য করেন মৎস্যমন্ত্রী অখিল গিরি।