কাঁটাতারে আটকে গেলো প্রেম, ফিরে গেলো প্রেমিকা!

প্রেমিকের হাত ধরে পালিয়ে বাংলাদেশে চলে আসা এক ভারতীয় তরুণীকে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করা হয়ছে।

প্রায় ৮ মাস বাংলাদেশের সেফহোমে থাকার পর মঙ্গলবার (২২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে চুয়াডাঙ্গার দর্শনা জয়নগর চেকপোস্ট দিয়ে প্রীতি পন্ডিত নামের ওই তরুণীকে ভারতীয় থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে বাংলাদেশ পুলিশ।

এসময় উপস্থিত ছিলেন ভারতের পক্ষে বিএসএফ’র গেঁদে কোম্পানি কমান্ডার অশোক মেহি, ইমিগ্রেশন ইনচার্জ গোপাল চন্দ্র দে, কাস্টমস ইন্সপেক্টর অজয় নারায়ন, কৃষ্ণগঞ্জ থানার ইন্সপেক্টর বাপিন মূর্খাজি, ডিআইও সাধন মণ্ডল, মানবাধিকারকর্মী চিত্তরঞ্জন দে।

বাংলাদেশের পক্ষে ছিলেন বিজিবির আইসিপি কমান্ডার সুবেদার শহিদুল ইসলাম, দর্শনা ইমিগ্রেশন ইনচার্জ এসআই আব্দুল আলীম, দর্শনা থানার এসআই হারুন অর রশীদ, রংপুর সিআইডি ইন্সপেক্টর এনায়েতুর রহমান ও এসআই রাব্বি।

জানা যায়, প্রেমের টানে দেশ ছেড়ে প্রেমিকের হাত ধরে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছিল প্রীতি পন্ডিত। প্রেমিক মিলনের বাড়ি বাংলাদেশের রংপুর জেলায়। সেখানে চলে যায় প্রীতি। তারপর তার পরিবার কৃষ্ণনগর থানায় জিডি করে। রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে শুরু হয় খোঁজাখুঁজি। অবশেষে সন্ধান মেলে প্রীতির। এরপর শুরু হয় প্রেমের পরাজয়। রংপুর কোতায়ালি থানা পুলিশ প্রীতিকে উদ্ধার করে। ঠাঁই হয় রংপুর শেখ রাসেল শিশু প্রশিক্ষণ ও পূর্নবাসন কেন্দ্রে। সেখানেই ৮ মাস ছিল প্রীতি।

মেয়েটির মা ইতি পন্ডিত বলেন, ভারতের পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার কৃষ্ণনগরের বাসিন্দা ও কৃষ্ণনগর মিলনীনি গার্লস হাইস্কুলের ১০ম শ্রেণির ছাত্রী ছিল সে। তারা থাকতেন কৃষ্ণনগর শহরের ভাতজংলা এলাকায়। মেয়ে যেদিন প্রেমিকের হাত ধরে পালিয়ে যায় সেসময় তিনি বাড়িতে ছিলেন না।

তিনি বলেন, দুপুরে বাড়ি ফিরে দেখেন মেয়ে বাড়িতে নেই। তখন স্কুল, প্রাইভেট স্যার সব জায়গায় খোঁজ করেন। তারপর একটি ছোট ছেলে জানায় তার মেয়েকে টোটোতে (ইজিবাইক) একটি ছেলের সঙ্গে চলে যেতে দেখেছে। ঐ এলাকায় আলামিন নামে আরও একজন বাংলাদেশি ছেলে কাজ করত। সে জানায়, ‘প্রীতি মিলনের (প্রীতির প্রেমিক) সঙ্গে পালিয়ে গেছে।’ এরপর থানায় জিডি করেন প্রীতির মা ইতি পন্ডিত।

তিনি আরও বলেন, ২০২১ সালের ২১ জুন সকালে নিখোঁজ হয় তার মেয়ে। মিলন ও আলামিন অবৈধভাবে ভারতে গিয়ে কৃষ্ণনগর শহরে কাজ করত। তাদের এলাকায় থাকত।

রংপুরের সিআইডি ইন্সপেক্টর এনায়েতুর রহমান জানান, গত ২৬ জুন সকালে রংপুর কোতোয়ালি থানা পুলিশ উদ্ধার করে প্রীতিকে। সেই থেকে তাকে রাখা হয় রংপুর শেখ রাসেল শিশু প্রশিক্ষণ ও পূর্নবাসন কেন্দ্রে। প্রেমিক মিলনের হাত ধরে বেনাপোল বর্ডার দিয়ে পালিয়ে বাংলাদেশে চলে আসে প্রীতি।

তিনি বলেন, প্রীতিকে উদ্ধারের পর তার প্রেমিক মিলন (২২) ও তার সহযোগী হাবিবুর (২৩) এর বিরুদ্ধে মানব পাচার আইনে মামলা দায়ের করে পুলিশ। তাদের আটক করা হয়। এরপর তারা জামিনে মুক্ত হয়। এদের বাড়ি রংপুর সদরের পালিচরা এলাকায়।