কারবালার শোক আর বিষাদময় আশুরা: আশুরা নিয়ে যা বললেন এবি পার্টি

এদেশের অধিকাংশ মুসলমানের কাছে কারবালা আর আশুরা একই ঘটনা হিসেবে মনে করা হয় কিন্তু হাজার হাজার বছরের পার্থক্যে ঘটে যাওয়া এই দুটি ঘটনার মিলের জায়গা হচ্ছে আরবী মাসের তারিখ আর জালেমের বিরুদ্ধে মজলুমের অব্যাহত লড়াই।

রাসুল সা. মদীনায় হিজরত করবার পরে দেখতে পেলেন যে ইহুদীরা ১০ই মহররম রোজা রেখে আল্লাহ তা’আলার শুকরিয়া আদায় করে- উনি কারন হিসেবে জানতে পারলেন যে ঐ দিনে মুসা (আ.) বনী ঈসরাঈলের ১২ টি গোত্রকে ফেরাউনের শত শত বছরের দাসত্ব ও জুলুম থেকে মুক্ত করতে মিশর থেকে লোহিত সাগর পেরিয়ে ফিলিস্তীনে আশ্রয় নেন। সেদিন থেকে তারা আল্লাহ তা’আলার প্রতি তাদের কৃতজ্ঞতা হিসেবে প্রতিবছর রোজা রাখেন; রাসূল সা. ও তার উম্মতকে একই দিনে রোজা রাখতে বলেছেন, সম্ভব হলে তার আগে বা পরেরদিন আরেকটি মিলিয়ে।

৬৮০ ঈসায়ী সালের ১০ অক্টোবর মোতাবেক ৬১ হিজরীর ১০ মুহাররম মক্কা থেকে কুফায় যাবার পথে ইরাকের কারবালার ময়দানে ঘটে যাওয়া যুদ্ধ ও শাহাদাত ছিল রাজনৈতিক ও ঐতিহাসিক ঘটনা। উমাইয়া শাসক মুয়াবিয়া রা. তার মৃত্যুর পূর্বে ছেলে ইয়াজিদ কে শাসক মনোয়নের সিদ্ধান্ত নিলে রাসূল সা.’র বেঁচে থাকা সাহাবীগণ এতে আপত্তি তোলেন এবং নতুন শাসকের আনুগত্য মেনে নিতে অস্বীকার করেন। রাসূল সা.’র নাতি হযরত হুসাইন ইবন আলী রা. ও ৭২ জন সফরসঙ্গীকে স্থানীয় উমাইয়া গভর্নর ওবায়দুল্লাহ ইবন জিয়াদের বাহিনী পথ আটকে হত্যা করে এবং বাকীদেরকে বন্দী করে।

এবি পার্টি মনে করে আজকের বাংলাদেশের ফ্যাসিবাদী শাসকগোষ্টী চরিত্রগতভাবে জালেম ফেরাউন আর উমাইয়াদের মত দেশের কোটি কোটি মানুষকে শোষন করে যাচ্ছে। ফেরাউন আর উমাইয়া রাজবংশ কারোরই শাসন করবার কোন গনসম্মতি ছিল না; উভয়েই ক্ষমতার নেশায় উন্মত্ত হয়ে ভিন্নমতকে খুন, গুম করা থেকে শুরু করে নিজ রাজ্যের/দেশের জনগনকে দাসত্বের শৃঙ্খলে আবদ্ধ করে রাখত যুগ যুগ ধরে।

এ দেশের মানুষ যেমন আজকে এই ভোট চোর, ডলার খেকো, বিদেশে টাকা পাচারকারী, খুনি জালেম সরকারের হাত থেকে বাঁচতে চায়, তেমনি চেয়েছিল বনী ইসরাঈলের মানুষেরা; এদেশের মানুষ যেভাবে বৈধ, নির্বাচিত আর ন্যায়পরায়ণ সরকার দ্বারা শাসিত হতে চায়, তেমনি ইরাকের কুফাবাসী সহ সকলে চেয়েছিল হুসাইন বিন আলীর রা. মত শাসকের আনুগত্য স্বীকার করতে।

এবি পার্টি তাই আজকে দেশবাসীকে আহবান জানাচ্ছে মজলুম জনগোষ্ঠীকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই জমানার এবং এই জমিনের ফেরাউনের বিরুদ্ধে তাদের প্রতিবাদ ও লড়াই অব্যাহত রাখতে- শামিল হতে মুক্তির মিছিলে। ঘরোয়া সমালোচনা, আয়োজন করে শোক পালন করা আর ক্রন্দন দিয়ে বিজয় অসম্ভব; দরকার সবরের সাথে লড়াই, ত্যাগ আর কুরবানী।