খদ্দেরের মোবাইল থেকে থানায় ফোন, যৌনপল্লী থেকে তরুণী উদ্ধার

দৌলতদিয়া যৌনপল্লীর বন্দী দশা হতে এক তরুণীকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ সময় গ্রেফতার করা হয়েছে ঘটনার মূল হোতা পল্লীর বাড়ীওয়ালা কনক মণ্ডলকে (৩০)।

কনক গোয়ালন্দ বাজার আড়ৎপট্টির মোশাররফ মণ্ডলের ছেলে। তার মা প্রয়াত কল্পনা বেগম পতিতাপল্লীর বাড়িওয়ালী ছিলেন।

বুধবার সকালের দিকে এক খদ্দেরের মোবাইল হতে তরুণী গোপনে থানায় ফোন করলে পুলিশ গিয়ে তাকে উদ্ধার করে এবং বাড়িওয়ালাকে গ্রেফতার করে।

এ ঘটনায় তরুণী নিজেই বাদী হয়ে গোয়ালন্দ ঘাট থানায় মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে মামলা দায়ের করেছেন।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, উদ্ধার হওয়া তরুণীর বাড়ি ফরিদপুর জেলার নগরকান্দা উপজেলায়। ৪ বছর আগে পার্শ্ববর্তী এলাকায় তার বিয়ে হয়। দরিদ্র বেকার স্বামীর সংসারে অভাব-অনটন লেগেই থাকত। যে কারণে ভাগ্য বদলের আশায় তারা ঢাকার সাভারে এসে দুইজনেই গার্মেন্টসে কাজ নেয়।

বেতন কম হলেও দু’জনের মোটামুটি চলছিল। সম্প্রতি এক অজ্ঞাত নারীর সঙ্গে ওই তরুণী গৃহবধূর পরিচয় হয়। অজ্ঞাত নারী মূলত নারী পাচারকারী চক্রের একজন সদস্য।

ভালো বেতনে চাকরির কথা বলে মহিলা তরুণীর সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তোলেন। নতুন চাকরিতে যোগদানের কথা বলে মহিলা তরুণীকে গত ২৭ মার্চ বিকালে দেশের সর্ববৃহৎ দৌলতদিয়া পতিতাপল্লীতে নিয়ে আসে। পরে সে বাড়িওয়ালা কনকের কাছে তরুণীকে মোটা অংকের টাকায় বিক্রি করে পালিয়ে যায়।

কনক তরুণীকে তার বাড়ীর একটি কক্ষে তালাবন্ধ করে রাখে এবং ইচ্ছার বিরুদ্ধে তার ঘরে খদ্দের পাঠিয়ে জোরপূর্বক দেহ ব্যবসা করাতে থাকে। কনক তরুণীর ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনটিও ভেঙে ফেলে।

গত বুধবার সকালের দিকে এভাবে তার কক্ষে এক খদ্দের পাঠায় বাড়িওয়ালা কনক। এ সময় তরুণী কৌশলে ওই খদ্দেরের মোবাইল ফোন হতে গোয়ালন্দ ঘাট থানায় ফোন করে তাকে উদ্ধারের আকুতি জানায়। এরপর থানা পুলিশের একটি দল পল্লীতে গিয়ে তরুণীকে কনকের বাড়ির একটি কক্ষের বন্দীদশা হতে উদ্ধার করে। এ সময় পুলিশ বাড়ির মালিক কনককেও গ্রেফতার করে।

এ প্রসঙ্গে গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি আব্দুল্লাহ আল তায়াবীর জানান, ‘এ ঘটনায় বাড়িওয়ালা কনক এবং তাকে পাচার করে আনা অজ্ঞাত নারীর বিরুদ্ধে তরুণী মামলা করেছেন। গ্রেফতারকৃত আসামি কনককে আদালতের মাধ্যমে রাজবাড়ীর কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অজ্ঞাত নারীকে খোঁজা হচ্ছে।’
সৌজন্যে: যুগান্তর