গাইবান্ধায় সময়ের আলোর চতুর্থ বর্ষপূর্তি এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা সম্মাননা

কেক কাটা, মোড়ক উন্মোচন, বীর মুক্তিযোদ্ধা সম্মাননা, শুভেচ্ছা কথন, আলোচনা ও কবিতা পাঠের মধ্য দিয়ে গাইবান্ধায় বৃহস্পতিবার (২ মার্চ) সময়ের আলোর ৪র্থ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত হয়েছে।

এসব কর্মসূচীতে প্রধান অতিথি ছিলেন গাইবান্ধা পৌরসভার মেয়র মো. মতলুবর রহমান, সম্মানীয় অতিথি ছিলেন প্রবীণ সাংবাদিক ও সাহিত্যিক গোবিন্দলাল দাস, গাইবান্ধা প্রেস ক্লাব সভাপতি কে.এম রেজাউল হক, বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা গণ উন্নয়ন কেন্দ্রের নির্বাহী প্রধান এম. আবদুস সালাম ও উদীচী গাইবান্ধার সভাপতি অধ্যাপক জহুরুল কাইয়ুম।

এদিন সকাল ১১টায় গাইবান্ধা নাট্য ও সাংস্কৃতিক সংস্থা (গানাসাস) মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সাংবাদিকরা ছাড়াও মুক্তিযোদ্ধা, বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও নারী সংগঠনের নেতাকর্মীরা অংশ নেন। অনুষ্ঠানের শুরুতেই মুক্তিযুদ্ধে শহিদদের স্মরণ ও প্রয়াত সহকর্মীদের শ্রদ্ধা জানিয়ে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এরআগে অতিথিদের ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়। এরপর সময়ের আলো গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি কায়সার রহমান রোমেলের স্বাগত বক্তব্য শেষে আনুষ্ঠানিকভাবে সময়ের আলো প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী সংখ্যার মোড়ক উন্মোচন করেন অতিথিরা। এরপর কবিতা আবৃত্তি করেন মোহাম্মদ আমিন। পরে সম্মানীয় অতিথি ও বিশিষ্টজনরা প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কেক কাটেন।

অনুষ্ঠানে দেশের মুক্তি সংগ্রামে অসামান্য অবদানের জন্য ১১নং সেক্টরের মানকারচর সাব-সেক্টরের অধীন রঞ্জু কো¤পানির এক্সপ্লোসিভ বিশেষজ্ঞ বীর মুক্তিযোদ্ধা ওয়াসিকার মো. ইকবাল মাজুকে সম্মাননা দেয়া হয়। তাঁর হাতে ফুল, ক্রেস্ট, সম্মাননা পত্র ও প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর লোগো সম্বলিত মগ তুলে দেয়া হয়।

অনুষ্ঠানে সময়ের আলোর উপজেলা সংবাদদাতা হিসেবে সুন্দরগঞ্জের সুদীপ্ত শামীম, গোবিন্দগঞ্জের মানিক সাহা, ফুলছড়ির হাবিবুর রহমান ও সাদুল্লাপুরের মো. শামীম সরদারকে পরিচয় করিয়ে দেয়া হয়। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন সাংবাদিক, রাজনীতিক রেজাউন্নবী রাজু, কবি ও বাচিকশিল্পী দেবাশীষ দাশ দেবু, সমাজকর্মী জাহাঙ্গীর কবীর তনু, কালেরকন্ঠ ও দেশ টিভির গাইবান্ধা প্রতিনিধি অমিতাভ দাশ হিমুন, জেলা জাসদ সাধারণ সম্পাদক জিয়াউল হক জনি, সাংবাদিক গৌতমাশিস গুহ সরকার, রজতকান্তি বর্মন, মানবাধিকার কর্মী গোলাম রব্বানী মুসা, গাইবান্ধা নাট্য সংস্থার সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. একেএম হানিফ বেলাল, মেঘদূত নাট্য সংস্থার সাধারণ স¤পাদক শিরিন আকতার, নাট্যকর্মী শাহ আলম বাবলু, সময় টিভির গাইবান্ধা প্রতিনিধি এস.এম বিপ্লব ইসলাম, আনন্দ টিভির জেলা প্রতিনিধি মিলন খন্দকার, ফুলছড়ি প্রেসক্লাবের সাধারণ স¤পাদক শাহ আলম যাদু প্রমুখ। অনুষ্ঠানে সময়ের আলোর জেলা প্রতিনিধি কায়সার রহমান রোমেলকে ফুল ও ক্রেস্ট দিয়ে শুভেচ্ছা জানান গণ উন্নয়ন কেন্দ্রের নির্বাহী প্রধান এম. আব্দুস সালাম ও কালেরকন্ঠের প্রতিনিধি অমিতাভ দাশ হিমুনের নেতৃত্বে শুভ সংঘ।

সম্পা দেব-এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় গাইবান্ধা পৌরসভার মেয়র মো. মতলুবর রহমান বলেন, সময়ের আলো শুরু থেকেই বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতার দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে অগ্রযাত্রার মুখপত্র হিসেবে কথা বলে আসছে। ইতিবাচক ও উন্নয়ন সাংবাদিকতার প্রত্যয় নিয়ে এগিয়ে যাক দৈনিক সময়ের আলো। সময়ের আলোর জন্ম মহান স্বাধীনতার মাসের দ্বিতীয় দিনে। ফলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় পত্রিকার ভূমিকা উল্লেখযোগ্য। সময়ের আলো দেশের উন্নয়নে সমস্যা চিহ্নিত করেছে, আবার সমাধানের পথও জানিয়েছে।

প্রবীণ সাংবাদিক ও সাহিত্যিক গোবিন্দলাল দাস বলেন, ‘সমাজের সব অনিয়মের বিরুদ্ধে সময়ের আলো যেভাবে নিরলস কাজ করে এসেছে, আগামীতেও সেভাবে কাজ করুক। দায়িত্বশীল ও সাহসী সাংবাদিকতার জন্য সময়ের আলো পাঠকের আস্থা অর্জন করেছে।’ দেশ, জাতি, মাটি, মানুষ আর মুক্তিযুদ্ধের কথা নিরন্তর বলায় তিনি সময়ের আলোকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানান।

গাইবান্ধা প্রেস ক্লাব সভাপতি কে.এম রেজাউল হক বলেন, ‘দেশসেরা তরুণ ও চৌকস টীম দিয়ে সময়ের আলো যাত্রা শুরু করে দেশের বিদ্যমান অনেকগুলো বড় পত্রিকার মধ্যে নিজেদের স্থান করে নিয়েছে কমসময়ে। দেশ গড়ার কাজে সময়ের আলোর অগ্রণী ও সাহসী ভূমিকার প্রশংসা করে তিনি বলেন, যেকোন মূল্যে সেই নীতিতে অবিচল থাকতে হবে।’

অনুষ্ঠানে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা গণ উন্নয়ন কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী প্রধান এম. আবদুস্ সালাম বলেন, ‘সত্য প্রকাশে আপসহীন’ দৈনিক সময়ের আলোর পথচলার চার বছর পূর্ণ হলো আজ। এরই মধ্যে পত্রিকাটি পাঠকের অকুন্ঠ ভালোবাসা পেয়েছে। সময়ের আলো শুরু থেকে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ, বাঙালি সংস্কৃতি, অসা¤প্রদায়িক চেতনাকে লালন ও ধারণ করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নীতিতে অবিচল থেকেছে। জনগণের পাশে থেকেছে, জনগণের স্বার্থেই কাজ করেছে।’