চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় বিয়ে বাড়িতে মাংস কম দেয়ায় সংঘর্ষ

দক্ষিণ চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় বিয়ের অনুষ্ঠানে মাংস কম হওয়া নিয়ে বর-কনে উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে প্রায় ১০ থেকে ১২ জনের মতো আহত হয়েছে।

শনিবার (৩০ অক্টোবর) দুপুর ২টার দিকে সাতকানিয়া উপজেলার কালিয়াইশ ইউনিয়নের নিরিবিলি কমিউনিটি সেন্টারে এই ঘটনার সৃষ্টি হয়।

জানা যায়, বিয়ের অনুষ্ঠানে বরপক্ষকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী খাবার সরবরাহ করতে পারেনি কনে পক্ষ।খাবারে মাংস কম হয় বলে বর পক্ষের অভিযোগ। এ বিষয়টি নিয়ে কনেপক্ষ আর বরপক্ষের বাকবিতণ্ডার সৃষ্টি হলে উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
পরিস্থিতি খারাপ হওয়ায় খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে নিয়ন্ত্রণে আনে।

সংঘর্ষে উভয়পক্ষের প্রায় ১০ থেকে ১২ জন আহত হয় বলেও জানা যায়।

সাতকানিয়া থানা পুলিশ জানায়, বিয়েতে মাংস কম পড়া নিয়ে বর কনে উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়। পরে ৯৯৯ এ ফোন পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে সাতকানিয়া থানা পুলিশ।

সংঘর্ষে আহতদের সাতকানিয়া উপজেলার কেরাণীহাট আশ শেফা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে বলে জানা যায়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিয়েতে বরযাত্রীকে মাংস কম দেওয়া নিয়ে কথা কাটাকাটির জেরে বর ও কনে পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় বরসহ উভয় পক্ষের অন্তত ১০/১২ জন আহত হয়েছেন।

আহতদের মধ্যে কনের বাবা জসিম উদ্দিন ফারুক (৪৮), কনের মা রাশেদা বেগম (৩৫), মামা মো. বাবুল (৩০), বর মোহাম্মদ শাহজাহান (২৮), তার আত্মীয় মো. মানিক (২৯), মো. রফিক (৩০) ও স্থানীয় হুমায়ুনের (২০) নাম পাওয়া গেছে। আহতরা স্থানীয় বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে বলে জানা গেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দুপুরে উপজেলার ছদাহা পূর্ব কাজীর পাড়া (খামারপাড়া) কালা মিয়ার ছেলে মোহাম্মদ শাহজাহানের সঙ্গে নোয়াখালীর সুবর্ণচর চরওয়াবদা ৪নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা (বর্তমানে চট্টগ্রামের চন্দনাইশের হাছনদণ্ডীতে বাস করে) জসিম উদ্দিন ফারুকের কন্যা মুক্তা বেগমের বিয়ে পরবর্তী অনুষ্ঠান চলছিল। এই উপলক্ষে অতিথিদের জন্য প্রীতিভোজের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে খাবারের সময় বরপক্ষের এক ব্যক্তিকে তৃতীয়বার অতিরিক্ত গরুর মাংস এনে না দেওয়ায় কনে পক্ষের লোকজনের সঙ্গে কথা কাটাকাটি শুরু হয়। এক পর্যায়ে তা হাতাহাতি ও মারামারিতে রূপ নেয়। মারামারি চলাকালে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে তাদেরকেও মারধর করা হয়। এতে স্থানীয়সহ উভয় পক্ষের অনেকেই আহত হন। আহতরা স্থানীয় বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে বলে জানা গেছে।

এই ব্যাপারে কনের চাচা মো. আলাউদ্দিন সাংবাদিকদের জানান, বিয়েতে বর পক্ষের ৩০০ লোকের প্রীতিভোজের আয়োজন ছিলো। কিন্তু দুপুর দেড়টার মধ্যেই বরপক্ষের ৪০০ জনেরও বেশি লোককে খাওয়ানো হয়। এরমধ্যে খাবার টেবিলে বর পক্ষের এক ব্যক্তিকে তৃতীয়বার অতিরিক্ত গরুর মাংস এনে না দেওয়ায় কথা কাটাকাটি হয় এবং এক পর্যায়ে তা মারামারিতে রূপ নেয়। ঘটনা থামাতে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে তাদেরকেও মারধর করা হয়।

পরে বর নিজেও মারামারিতে জড়িয়ে পড়েন বলে জানান তিনি।

ছদাহা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মোসাদ হোসাইন চৌধুরী সাংবাদিকদের জানান, তুচ্ছ ঘটনায় বিয়েতে সামান্য মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এতে কয়েকজন আহত হয়। সাতকানিয়া থানা পুলিশ, কালিয়াইশ ইউপি চেয়ারম্যান হাফেজ আহমদ, সাতবাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান আহমদুর রহমান ও তিনি, বর ও কনে পক্ষসহ উভয়ে বসে বিষয়টি মীমাংসা করে রাত ১০টার দিকে কনেকে শ্বশুরবাড়িতে নেওয়া হয়েছে।

সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘বিয়েতে মাংস কম দেওয়ার ব্যাপারে মারামারির ঘটনা ঘটে। এতে বরসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। এ বিষয়ে উভয়পক্ষের বৈঠকের পর বিষয়টি মীমাংসা হয়।’

উল্লেখ্য, ২৪ অক্টোবর চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার বদরগঞ্জ দশমিপাড়ায় বিয়েবাড়িতে ভাত কম খেয়ে মাংস বেশি খাওয়ার অভিযোগে বরপক্ষের তিনজনকে পিটিয়ে আহত করে কনেপক্ষের লোকজন।