চলনবিলে ঘরে উঠছে সোনালী আশ, কৃষকের মুখে স্বস্তির হাঁসি

বৃহত্তর চলনবিল খ্যাত তাড়াশ উপজেলায় কৃষকের ঘরে উঠতে শুরু করেছে নতুন পাট ‘সোনালী আঁশ’। বাজারে দামও বেশ ভালো যাচ্ছে। পাটের সোনালী আঁশ সংগ্রহ, ধোয়া ও শুকানোর কাজ পুরোদমে শুরু হয়েছে চলনবিল খ্যাত তাড়াশে।

সোনালী আঁশের রংয়ে ভরে গেছে কৃষকের ঘর। দাম ভালো থাকায় পাটের আঁশ ছড়ানো, ধোয়া ও রোদে শুকানোর ধুম পড়েছে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের কৃষকের আঙিনায়, বাড়িতে।

সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, অনুকূল আবহাওয়া ও পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাতের কারণে চলতি মৌসুমে এ উপজেলায় পাটের ভালো ফলন হয়েছে। চলতি বছর তাড়াশে পাটের আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ২ শত ৬০ হেক্টর। কিন্তু গত বছর দাম ভালো পাওয়ায় এবার লক্ষ্যমাত্রা থেকে ২ শত ৭০ হেক্টর জমিতে বেশী আবাদ হয়ে এ উপজেলায়।

সোমবার (৪ জুলাই) উপজেলার মহেশরৌহালী, পংরৌহালী, পৌর এলাকা ও সাড়া ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, এলাকার শত শত নারী-পুরুষ রাস্তার দু’পাশে ও বাড়ির আঙ্গিনায় বসে জাগ দেওয়া পাট গাছ থেকে পাটের আঁশ সংগ্রহে ব্যস্ত রয়েছে তারা। কেউ কেউ আবার পাট শুকানোয় ব্যস্ত সময় পার করছেন।

উপজেলার নওগাঁ ইউনিয়নের মহেশরৌহালী গ্রামের কৃষক আরমান আলী জানান, এবার তিনি ৪ বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছেন। ইতিমধ্যেই ৩ বিঘা জমির পাট কেটেছেন। এ পাট জাগ দিয়ে আঁশ সংগ্রের পর এখন বাঁশের আড়ের উপর শুকাচ্ছেন।

মৌসুমের শুরুতেই পাট বিক্রি করে ভাল দাম পাচ্ছেন কৃষকরা। ফলনও হয়েছে ভাল। উপজেলার হামকুড়িয়া, আমবাড়িয়া, ঘরগ্রাম, চাকরৌহালী ও নওগাঁ হাট-বাজার গুলোতে প্রতিমণ পাট ২ হাজার ৭ শত থেকে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত দরে বিক্রি হচ্ছে। তাই ভাল ফলন ও আশানুরূপ দাম পেয়ে বিগত বছর গুলোর লোকসানে পড়া কৃষকদের মুখে এবার পাটের দাম ভাল পাওয়ায় ফুটে উঠেছে রঙিন হাঁসি।

আবহাওয়া পাট চাষের অনুকূলে থাকায় পাটের এমন ফলন হয়েছে এবং ইতিমধ্যেই প্রায় ৭০ ভাগ জমির পাট কাটা শেষ হয়েছে বলছেন কৃষি অফিস।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ লুৎফুন্নাহার বলেন, এবার লক্ষ্যমাত্রার থেকেও বেশী জমিতে পাট চাষ করা হয়েছে। এ বছর পাটের রোগ বালাই ও পোকামাকড়ের আক্রমণ তেমন ছিল না। পাটও বেশ ভালো হয়েছে। বাজারে পাটের দামও ভাল থাকায় এ বছর কৃষকরা বেশী লাভবান হবেন।