চাঁপাইনবাবগঞ্জের বরেন্দ্র অঞ্চলে ৬ মাসে ৬ লাখ টাকার তুলা বিক্রির আশা চাষীদের

চাঁপাইনবাবগঞ্জের বরেন্দ্র অঞ্চলের উঁচু জমিতে সেচ সংকটে ধান-সবজি চাষের প্রবণতা কমে গেছে। সেখানে এখন তুলা চাষে আগ্রহ তৈরি হয়েছে কৃষকদের মধ্যে। কৃষকরা বলছেন কম সেচ ও বৃষ্টির পানিতে চাষ হওয়ার তুলা চাষে ঝুঁকছেন তারা।

সরজমিনে গিয়ে জেলার গোমস্তাপুর উপজেলার তুলা চাষীদের সঙ্গে কথা বলে যানা যায়। তুলার ফলন ভালো হলে বিঘায় ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকা আয় হয় এবং কোন খরচ হয়না। আষাঢ় মাসের বৃষ্টির পানিতে বীজ বপণ করে অগ্রহায়ণ মাসে তুলা ঘরে তোলা যায়। এতে তারা বেশি লাভবান হচ্ছেন।

উপজেলার বড় দাদপুর গ্রামের রাসেল বলেন, গত এক বছর থেকে ১৭ বিঘা জমিতে তুলার চাষ করছি। এর আগে ঢাকাতে চাকরি করতাম। কিন্তু মহামারী করোনার কারণে চাকরি ছাড়তে হয়েছিল সেই থেকে বাড়িতে এসে এলাকার চাষীদের দেখে উদ্বুদ্ধ হয়ে তুলা চাষ করছি। ১৭
বিঘা জমি এ পর্যন্ত খরচ হয়েছে প্রায় ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা।
আশা করছি সব খরচ বাদ দিয়ে ৬ থেতে সাড়ে ৬ লাখ টাকা পাব। আর সেই বাগানেই আছে আম্রাপালি আমের গাছ তা থেকেও কিছু টাকা পাবা। তিনি আরও বলেন, চাকরি ছেড়ে দেওয়ার কারণ হচ্ছে শহরের জীবন ছেড়ে
প্রকৃতির মাঝে থাকতে চাই। বাড়ি ফিরে কাজের অংশ হিসেবে গড়ে তুলেছেন নার্সারী ও আমের বাগান।
মরসালিন নামের আরো এক তুলা চাষী বলেন, বরেন্দ্র অঞ্চলে পানির স্তর দিনে দিনে নিচে নামছে। সেচের পানির সংকট দেখা দিচ্ছে।

সেখানে একবার অথবা কোনো সেচ না দিয়েই তুলা চাষ হচ্ছে। আমি গত চার বছর ধরে তুলা চাষ করছি। গত বছর দু্ই জমিতে তুলা চাষ করেছিলাম। খরচ হয়েছিল প্রায় ২৪ হাজার টাকা। এতে তুলা হয়েছিল প্রায় ২৫ মণ। ৩ হাজার টাকা মণ দরে বিক্রি করে প্রায় ৭৫
হাজার টাকায় বিক্রি করেছিলাম। তবে এবার ফের তুলার দাম বেশি।

এখন বর্তমান মূল্য ৩৬শ টাকা মণ। এবার ফের দুই বিঘা জমিতে তুলার বীজ রোপণ করেছি এবার আশা করছি আরও বেশি টাকা পাব। তিনি আরও বলেন, এই জমিতে উৎপাদিত তুলা আমাদেরকে বাজারে গিয়ে বিক্রি করতে হয় না। স্থানীয় তুলা উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা আমাদের কাছ থেকে কিনে নেয়। এবার দাম বলছে ৩৬শ
টাকা মণ।

গোমস্তাপুর উপজেলার বড় দ্বাদপুর ইউনিটের তুলা উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা মুর্শেদ আলী জানান, এ বছর আমার ইউনিটে প্রায় ১২০ বিঘা জমিতে তুলা চাষ হয়েছে। আমাদের পক্ষ থেকে তুলা উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক চাষীদের প্রদর্শনী দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া আমি তুলার রোগ বালাই পর্যবেক্ষেণ করে চাষীদের পরামর্শ দিয়ে থাকি। এই
বরেন্দ্র অঞ্চলে পানির সমস্য অনেকদিন থেকেই তাই এই জমিগুলো তুলা চাষের জন্যই উপযোগী। কারণ এখানে অন্য ফসল খুব কম হয়।