চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা ৪১.৭ ডিগ্রি; সর্তকতায় মাইকিং

গত কয়েকদিন ধরেই সূর্যের তাপদাহে পুড়ছে চুয়াডাঙ্গার জনজীবন। আর এতে করে খেটে খাওয়া সব ধরনের শ্রেণীপেশার মানুষ পড়েছে বিপাকে। তারা ঘর থেকে বেরিয়ে তাদের কর্মযজ্ঞ চালাবে সেটাও কঠিন হয়ে পড়েছে একমাত্র তাপদাহের কারণে। ফলে এদিনগুলোতে জীনযাত্রায় প্রভাব পড়েছে রিকসাচালক, কৃষক, ফুটপাতে বসে থাকাসহ বিভিন্ন পেশার কর্মজীবিদের। রোদ্রের খরতাপে খুব বেশি প্রয়োজন ছাড়া লোকজন বাজারে না আসায় ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখেও ব্যবসা মন্দা চলছে তাদের।

এখানে দেশের অন্যান্য জেলার তুলনায় দুএকটি জেলা ছাড়া প্রতিবারই রেকর্ড গরম অনুভূত হয় চুয়াডাঙ্গাতে। এবারও তার কমতি নেই। চৈত্র মাসে গরম পড়বে স্বাভাবিক কিন্তু মাসের শুরুর দিকে ততটা তাপদাহ শুরু না হলেও অর্ধেক মাস থেকে একাধারে লেগে রয়েছে গরমের অস্থিরতায় মৃদু আর মাঝারী তাপমাত্রার আকার ধারণ করছে চুয়াডাঙ্গায়।

এগার আগে গতকাল বৃহস্পতিবারও ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বয়ে গেছে। কিন্তু আজ (১৪ এপ্রিল) শুক্রবার বিকেল ৩টার দিকে ৪১.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসের এ তীব্র তাপদাহে বিশেষ করে রোজাদার মানুষগুলো কাহিল হয়ে পড়ছে বেশি। বাইরে কিছু মানুষ বের হলেও একটু শান্তির পরশ এবং খরতাপের হাত থেকে রক্ষা পেতে ছায়াযুক্ত জায়গায় অবস্থান করছে অনেকেই।

এ চৈত্রের তীব্র তাপদাহে অস্থির হয়ে নিস্তেজ হয়ে পড়েছে জনজীবন। খুব জরুরি দরকার ছাড়া ঘরের বাইরে না যাওয়ার জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জনসাধারণকে সতর্ক করতে চুয়াডাঙ্গার বিভিন্ন জায়গায় মাইকিং করা হয়েছে। এছাড়াও চিকিৎসায় বিশেষ ব্যবস্থা করার জন্য সদর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা দিয়েছেন চুয়াডাঙ্গার জেলা প্রশাসক আমিনুল ইসলাম খান।

এদিকে, এ তীব্র তাপদাহের ঝুঁকিতে রয়েছে হিটস্ট্রোক ও ডায়রিয়া রোগীরা। তাই হিট স্ট্রোক ও ডায়রিয়া রোগীদের চিকিৎসায় বিশেষ ব্যবস্থা করার জন্য সদর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন চুয়াডাঙ্গার জেলা প্রশাসক আমিনুল ইসলাম খান।

তবে চুয়াডাঙ্গার আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের পর্যবেক্ষক জামিনুর হক জানিয়েছেন আগামী ২১ এপ্রিলের পর থেকে কমতে পারে তাপদাহ। অফিস সূত্রে আরও পূর্বের খবর জানা যায়, ২০১৪ সালের ২১ মে চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৪৩ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা আবহাওয়ার তথ্য মতে অতি তীব্র তাপদাহ হিসেবে ধরা হয়।

এদিকে, ২০০৫ সালের ২ জুন ৪৩ ডিগ্রি, ২০১২ সালে ৪ জুন ৪২ দশমিক ৯ ডিগ্রি, ২০০৪ সালের ১৩ মে ৪২ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পরিণত হয়। সর্বশেষ ২০০৯ সালের ২৭ এপ্রিল সর্বোচ্চ ৪১ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আওলিয়ার রহমান বলেন, হিট স্ট্রোক রোগীদের জন্য তীব্র তাপদাহ ঝুঁকিপূর্ণ। এসব রোগীদের অতি প্রয়োজনীয় কাজ ছাড়া বাইরে না বের হওয়ায় বলে তিনি জানিয়েছেন।

তিনি জানান, সারাদিন রোজা রেখে পানি শূন্যতা তৈরী হয়। সেজন্য সন্ধ্যার পর থেকে বেশি বেশি পানি ও ফলমুল খাওয়ার পাশাপাশি যারা শিশু কিশোর রোজা না রাখে তাদেরকেও ঘন ঘন ঠাণ্ডামিশ্রিত পানি ও শরবত খাওয়ার পরামর্শ দেন ডা. আওলিয়ার রহমান।

চুয়াডাঙ্গার জেলা প্রশাসক আমিনুল ইসলাম খান বলেন, জেলার সবজায়গায় মাইকিং করে জনসাধারণকে সতর্ক করা হচ্ছে। তারা যেন খুব প্রয়োজন ছাড়া যেন ঘর থেকে বের না হয়। স্ট্রোক, ডায়রিয়াসহ গরমজনিত রোগীদের চিকিৎসায় বিশেষ ব্যবস্থা করার জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সদর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।