চৈত্রের প্রচন্ড তাপ প্রবাহে খা খা করছে চুয়াডাঙ্গা

চৈত্র মাসের ৯ তারিখে রমজান শুরু হলেও মানুষের রোজা রাখতে তেমন একটা অসুবিধা হয়নি চুয়াডাঙ্গার মানুষের। রোজা রাখতে কষ্ট হওয়ার কথাও শোনা যায়নি রোজাদার ব্যক্তিদের কাছে। কিন্তু চৈত্রের খরতাপের যে দাপট দেখাচ্ছে গত ৬/৭ দিন ধরে যা দেশের উল্লেখযোগ্যের মধ্যে সর্বোচ্চ তাপের অনুভব করছে চুয়াডাঙ্গাবাসী।

৫/৭ দিন আগেও চুয়াডাঙ্গার রাস্তায় বিভিন্ন যানবাহন মানুষের অসহনীয় ভিড় দেখা যাচ্ছিল। কিন্তু এ কদিনে চৈত্রের সাহসিকতায় মৃদু খরতাপের কারণে এখন তার পুরোটাই উল্টে গেছে পরিবেশ। পাড়ামহল্লাসহ বাজারঘাটের রাস্তা যেন খা খা করছে। বিভিন্ন পশুপাখিও পানির তৃষ্ণা মেটাচ্ছে বিভিন্ন খাল নদীনালা পাড়ামহল্লার অবস্থিত টিউবওয়েলের জমে থাকা পানি দিয়ে।

এছাড়াও রোদের খরতাপে অস্থির হয়ে পড়ছে মানুষ। একটু ঠাণ্ডা অনুভূতির পাওয়ার লক্ষ্যে ছায়াযুক্ত জায়গা বেছে নিচ্ছে ফুটপাত ব্যবসায়ীসহ বাইরে থাকা মানুষগুলো।

আরমাত্র ১৩/১৪ টা রোজা বাকী রয়েছে। সেহিসেবে রোজার বাজারে লোকসমাগম ভরপুর থাকার কথা। কিন্তু চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে রোদের মৃদু খরতাপ বয়ে চলেছে। যাতে করে সাধারণ মানুষ বাইরে বের হচ্ছে না সহজে। ঈদ মৌসুম হলেও রমজানের নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসসহ সকল দ্রব্যের বাজারেও তুলনামুলক রোজা না রাখা মানুষ যতসামান্য দেখা গেলেও তেমন একটা দেখা যাচ্ছে না রোজাদার মানুষের। বিশেষ করে সকাল ১০টার পর থেকে সন্ধ্যার আগ পর্যন্ত এরকম পরিস্থিতি কদিন ধরেই চলছে চুয়াডাঙ্গায়। তবে সন্ধ্যার পর থেকে কিছুটা ভিড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

এদিকে, এই চৈত্রের খরতাপের উত্তাপে খেটেখাওয়া দিনমজুরা পড়েছে বেশি বিপাকে। রোদের অত্যাচারের মধ্যদিয়েই কাজ চালিয়ে যেতে হচ্ছে তাদের। ইচ্ছা থাকলেও রোদের কঠিন উত্তাপেও সরে যাওয়ার যেন কোন উপায় নেই তাদের।

এ বিষয়ে কালু নামের এক রিক্সাচালক একটা ঠাণ্ডা জায়গায় সিটের ওপর বসে বিরাম নিচ্ছেন। তাকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, যে রোদের তাপ পড়ছে রিক্সাচালানো খুবই কষ্টসাধ্য ব্যাপার। রোদের মধ্যে রিক্সা চালাতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ছি। তাই একটু গাছের ছায়ায় বসে একটু আরাম করছি। শুধু তাই নয় রাস্তায় রিক্সা চালানো দুস্কর হয়ে পড়েছে। রোদের খরতাপে পিচ রাস্তা এতই গরম হয়ে রয়েছে যে রিক্সার টায়ার বাস্ট হওয়ার আশঙ্কা বিরাজমান রয়েছে বলে তিনি জানান।

এদিকে, ফুটপাতে দিনের বেলায় জুতা সেলাইসহ বিভিন্ন ধরনের ব্যবসায়ীরা রোজগার করে থাকেন। তারাও পড়েছেন বিপাকে। খরতাপের এতই প্রভাব পড়ছে যে বাজারে সকাল ১০টার পর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সন্তোষজনক খরিদ্দার মিলছে তাদের। গত ৫/৬ দিন একই রকম হওয়ায় সংসারেও প্রভাব পড়েছে তাদের।
এদিকে, চুয়াডাঙ্গায় মৌসুম হিসেবে উল্লেখযোগ্যভাবে প্রচলিতও রয়েছে যে, শীতের সময় শীত যেমন বেশি পড়ে তেমনী গরমের সময়ও গরম বেশি পড়ে। যা দেশের মধ্যে দুয়েকটি জেলার মধ্যে অন্যতম চুয়াডাঙ্গা।

সেই হিসেবে গতকাল শুক্রবার রোদের তাপমাত্রা ছিল (৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস)। আজ (০৮ এপ্রিল) শনিবার সারাদিন ৩৮.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রোদে তাপপ্রবাহ অনুভূত হয়েছে। যা মৃদু হিসেবে ধরা হয় বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষক রকিবুল ইসলাম। তবে চুয়াডাঙ্গায় মাঝারী থেকে তীব্র গরমের আশঙ্কা করা যাচ্ছে। সেইহিসেবে ৩৮-৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে হবে মাঝারী তাপদাহ, ৪০-৪২ হলে হবে তীব্র তাপদাহ, ৪২ এর উপরে গেলে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ হয় বলে আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে।