জাতীয় ইয়ুথ দাবা চ্যাম্পিয়নশিপে তৃতীয় হয়েছে সাতক্ষীরার কলারোয়ার সন্তান আরিয়ান

জাতীয় ইয়ুথ দাবা চ্যাম্পিয়নশিপ-২০২২ এ সাতক্ষীরার কলারোয়ার সন্তান আরিয়ান তৃতীয় স্থান অর্জন করেছে।
তাশফিকুর রহমান আরিয়ান কলারোয়া উপজেলার মুরারীকাটি গ্রামের তৈয়েবুর রহমান (মিলন) ও আজমিন নাহার (জাকিয়া) দম্পতির জ্যেষ্ঠ পুত্র।
আরিয়ানের পিতা তৈয়েবুর রহমান (মিলন) বাংলাদেশ পুলিশের একজন কর্মকর্তা। তিনি বর্তমানে স্পেশাল ব্রাঞ্চের ঢাকা কার্যালয়ে কর্মরত। তার মাতা আজমিন নাহার (জাকিয়া) ঢাকা ন্যাশনাল আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজের একজন সিনিয়র শিক্ষিকা।

বাংলাদেশ দাবা ফেডারেশান সম্প্রতি রাজধানীর ফেডারেশান ভবনে শাহ সিমেন্টের পৃষ্ঠপোষকতায় জাতীয় ইয়ুথ দাবা চ্যাম্পিয়নশীপের আয়োজন করে। অনুর্ধ্ব ৮, ১০, ১২, ১৪, ১৬ ও ১৮, ওপেন ও বালিকা বিভাগে এই প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।
৭ বছর বয়সী আরিয়ান অনুর্ধ্ব-৮ গ্রুপে অংশগ্রহন করে।

দাবা ফেডারেশন প্রদত্ত তথ্য থেকে জানা যায়, সারা দেশ থেকে আগত আঞ্চলিক পর্যায়ে শীর্ষ স্থান অর্জন করা দুই শতাধিক শিশু এই অনুর্ধ্ব-৮ গ্রুপে অংশগ্রহন করে। আরিয়ান সেখানে তৃতীয় স্থান অর্জন করে।

উল্লেখ্য যে, আরিয়ানের পিতা তৈয়েবুর রহমান (মিলন) কলারোয়া জিকেএমকে পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র থাকা অবস্থায় দাবা খেলায় বিশেষ পারদর্শীতা অর্জন করেন। তিনি বাংলাদেশ পুলিশের হয়ে একাধিক জাতীয় প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহন করে তার সফলতার স্বাক্ষর রেখেছেন। দেশের হয়ে তিনি নেপাল, মালয়েশিয়া, পূর্ব তিমুর প্রভৃতি দেশে আন্তর্জাতিক দাবা প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহন করেছেন।

তিনি জানান, ‘তার পুত্র আরিয়ান ৩ বছর বয়স থেকে দাবা খেলায় আগ্রহী হয়ে উঠে। পরবর্তীতে সে বিভিন্ন দাবা ওয়ার্কশপে অংশগ্রহন করে। গত নভেম্বর-২০২১ মাসে জাতীয় দাবা ওয়ার্কশপে দেশের পাঁচ জন গ্রান্ড মাস্টারের কাছ থেকে সে আধুনিক কৌশল আয়ত্ব করে। আরিয়ানের স্বপ্ন সে একদিন বাংলাদেশের হয়ে বিশ্ব দাবায় প্রতিনিধিত্ব করবে। সে কলারোয়াসহ দেশবাসীর দোয়া ও অনুপ্রেরণা চায়।’

দাবা একটি জনপ্রিয় খেলা যা বোর্ড বা ফলকের উপর খেলা হয়। দাবা খেলার সর্বপ্রথম সূচনা হয় ভারতবর্ষে। যিনি দাবা খেলেন তাকে দাবাড়ু বলা হয়। দাবায় দু’জন খেলোয়াড় অংশগ্রহণ করে। দাবা খেলায় জিততে হলে বোর্ডের ওপর ঘুঁটি সরিয়ে বা চাল দিয়ে বিপক্ষের রাজাকে কোণঠাসা করে এমন স্থানে আনতে হয় যেখান থেকে রাজা আর স্থানান্তরিত হতে পারে না, দাবার পরিভাষায় একে বলে ‘কিস্তিমাত’।

যুদ্ধংদেহী ফলকক্রীড়া রূপে দাবা খেলার সুনাম রয়েছে। খেলার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে প্রতিপক্ষের ঘুঁটি আয়ত্তে আনার মাধ্যমে নতস্বীকারে বাধ্য করা। ফলকের উপর খেলা যায় এমন খেলাগুলোর মধ্যে এ খেলার বিশ্বব্যাপী অসম্ভব জনপ্রিয়তা রয়েছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী অগ্রসরতা ও আক্রমণ চিহ্নিত করার দক্ষতার মাধ্যমে দাবাড়ুর শক্তিমত্তা যাচাই করা সম্ভবপর। প্রত্যেক খেলোয়াড়েরই রাজা, মন্ত্রী, হাতি, ঘোড়া, নৌকা ও বোড়ের সমন্বয়ে গঠিত ১৬ ঘুঁটির সৈনিকদল একে-অপরের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অবতীর্ণ হয়। প্রত্যেক ঘুঁটিরই ক্রীড়াফলকে স্থানান্তরের বিশেষ ক্ষমতা রয়েছে। কোন কারণে ঘুঁটির মাধ্যমে প্রতিপক্ষের ঘুঁটিকে নিয়ন্ত্রণে আনতে পারলে তা অধিকৃত স্থানের পর্যায়ে পৌঁছে ও ক্রীড়াফলক থেকে সরিয়ে ফেলতে হয়।