ঠাকুরগাঁওয়ে নিহত শিশু’র বাড়ীতে বিএনপি’র প্রতিনিধি দল

ঠাকুরগাঁও রাণীশংকৈলে গত বুধবার উপজেলা বাচোর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ইউপি সদস্যর ফলাফলকে কেন্দ্র করে পরাজিত প্রার্থী ও পুলিশের মাঝে সংঘর্ষে পুলিশের গুলিতে নিহত আট মাস বয়সী কন্যা শিশু সুরাইয়ার বাড়ীতে বিএনপির প্রতিনিধি দল শোকাস্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাতে এসেছিলেন ।

বৃহস্পতিবার (২৮ জুলাই) রাত ৮টায় বিএনপির প্রতিনিধি দল নিহত শিশু সুরাইয়ার বাড়ী মীরডাঙ্গী এসে পৌছান।
বিএনপির প্রতিনিধি দলে ছিলেন ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা তৈমুর রহমান,জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মামুন আলম,জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক তাজউদ্দীন তাজু,জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব হোসেন তুহিন।

এছাড়াও পীরগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও ঠাকুরগাঁও-৩ আসনের সংসদ সদস্য জাহিদুর রহমান, রাণীশংকৈল উপজেলা বিএনপির সভাপতি আতাউর রহমান, সম্পাদক আল্লামা আল ওয়াদুদ বিন নুর আলিফ, পৌর বিএনপির সভাপতি প্রভাষক শাহাজাহান আলী সম্পাদক মহসিন আলী,উপজেলা ছাত্রদলের আহবায়ক আওলাদ হোসেনসহ স্থানীয় নেতাকর্মিরা।
এ সময় বিএনপির নেতারা নিহত সুরাইয়ার বাবা বাদশাহ আলী ও মা মিনারা বেগমের কাছে ঘটনার বিস্তারিত শুনেন এবং তাদের প্রতি সমবেদনা পোষন করেন। পরে বিএনপির পক্ষ থেকে সুরাইয়ার মা ,বাবার হাতে নগদ ২০ হাজার টাকা সহযোগিতা স্বরুপ তুলে দেন।

সুরাইয়ার বাবা বাদশাহ আলী জানান, প্রশাসন আমাকে সহযোগিতা সাহস সবি দিচ্ছে। তবে আমি এ ঘটনার সঠিক বিচার চাই। একটি নিরপেক্ষ তদন্ত চাই। এক প্রশ্নের জবাবে বাদশাহ বলেন, এ ঘটনায় কোন নির্দোষ ব্যক্তি যেন পুলিশি হয়রানীর শিকার না হয় সে জন্য তিনি প্রশাসন সাংবাদিকসহ সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।

পরে জেলা বিএনপির সভাপতি তৈমুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, এটি একটি নিন্দনীয় ঘটনা, পুলিশ অতি উৎসাহী হয়ে গুলি ছুড়ে নিষ্পাপ শিশুটিকে হত্যা করেছে। আমরা তীব্র নিন্দা জানিয়ে এ ঘটনার সঠিক তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি দাবী করছি। তিনি আরো বলেন, এ পরিবারের প্রতি বিএনপি মহাসচিবের সমবেদনা রয়েছে। তাছাড়া পরিবারটির পাশে বিএনপি সব সময় থাকবে। এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপি নেতা তৈমুর রহমান বলেন,ঘটনা যেন ভিন্ন দিকে কেউ নিয়ে যেতে না পারে সেজন্য আমরা দৃষ্টি রাখছি।

উল্লেখ্য যে, রাণীশংকৈল ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বাচোর ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের ভিএফ নিন্ম মাধ্যমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে ভোট শেষে নির্বাচনী ফলাফল ঘোষনার পর পরাজিত প্রার্থী আজাদ ও খালেদুর পুনরায় ভোট গণনা করতে আহবান জানান। তবে তাদের আহবানে সাড়া না দিয়ে নির্বাচনী সামগ্রী নিয়ে চলে আসতে ধরলেই উত্তেজিত হয়ে পড়ে ওই দুই প্রার্থীর সমর্থকরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে পুলিশ গুলি ছুড়লে। ঘটনাস্থলের পাশেই একটি বাড়ীতে মায়ের কোলে থাকা সুরাইয়ার মাথায় আচমকা গুলি লেগে মাথা ছিন্ন বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। পুলিশের গুলিতে শিশু নিহতের ঘটনায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এতে একাধিক পুলিশ সদস্যকে মারপিটসহ তাদের গাড়ী ভাঙচুর করে উত্তেজিত জনতা। এ ঘটনায় শহর জুড়ে আতংক ছড়িয়ে পড়লে শহরের দোকান পাট বন্ধ হয়ে পড়ে। শিবদিঘী যাত্রী ছাউনি মোড়ে নিহত শিশুকে রেখে বিক্ষোভ মিছিল করার এক পযার্য়ে থানা ঘেরাও করে পুলিশের বিচার দাবী জানালে। থানা পুলিশ বিক্ষোভ মিছিল কারীদের প্রতি টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেন।

নিহত শিশুর মরদেহের ময়না তদন্তের পর বৃহস্পতিবার দুপুর তিন টায় উপজেলা প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় এবং তাদের অংশগ্রহণে মীরডাঙ্গী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জানাজা নামাজ শেষে। মীরডাঙ্গী মাদ্রাসা সংলগ্ন গোরস্থানে দাফন সর্ম্পন করা হয়।