ডেঙ্গু এবার পল্লীতে

দেশের বিভিন্ন জায়গার মতো এডিস মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গু পল্লীতে নেত্রকোনা জেলার দুর্গাপুর উপজেলায়। কেবল ঢাকা থেকে আসা নয় এখন স্থানীয়ভাবেও আক্রান্ত হচ্ছেন মানুষ। দিন দিন বাড়ছে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ফলে রোগটির ভয়াবহতা ঝুঁকির দিকে এগোচ্ছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়,গত তিন সপ্তাহে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ১৯ জন।তমধ্যে ১৭ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১২ জন। এরই মধ্যে শিশুসহ ২ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজে হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে।

অন্যদিকে হাসপাতালের বহিঃবিভাগের ২ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত ব্যক্তি বাসায় চিকিৎসা নিচ্ছেন। গত ২৪ ঘন্টায় নতুন করে হাসপাতালটিতে ৩ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়েছেন। তবে এখনো কোনো রোগী মারা যাওয়ার খবর পাওয়া যায়নি।

এদিকে ৫০ শয্যার এই হাসপাতালটিতে প্রতিদিনই প্রায় ৮০ জনের উপরে রোগী ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এরই মধ্যে দেখা দিয়েছে ডেঙ্গুর প্রকোপ। যার কারণে ডেঙ্গু রোগীদের জন্য আলাদা কোন ওয়ার্ড না থাকায় সাধারণ ওয়ার্ডেই আলাদা বেডে মশারি টানিয়ে চলছে ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসা। তবে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা আরো বাড়লে বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

উপজেলার বালিচান্দা গ্রাম থেকে আসা ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত পারভীন আক্তার(৩০)। তার মা সালেহা বেগম জানান,গত কয়েকদিন ধরে জ্বর ও পাতলা পায়খানা। স্থানীয়ভাবে ঔষধে না কমলে হাসপাতালে আসেন এবং চিকিৎসকের পরামর্শে পরিক্ষা নিরিক্ষার পর জানতে পরেণ পারভীন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে। তাৎক্ষণিক হাসপাতালে ভর্তি করেন।

কৃষ্ণপুর গ্রাম থেকে আসা কিশোর মোশারফ জানান, গত এক সপ্তাহ ধরে জ্বর ও পাতলা পায়খানা। এরপর গত শনিবার হাসপাতালে এসে পরিক্ষা নিরিক্ষার পর ডেঙ্গু আক্রান্ত জানতে পারেন।

এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও প:প: কর্মকর্তা ডাঃ সজীব রায় প্রতিনিধিকে বলেন,৫০ শয্যাবিশিষ্ট এই হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের জন্য নারী-পুরুষ আলাদা আলাদা ওয়ার্ড খোলার জায়গা নেই। আমাদের নির্দেশনা দেওয়া আছে আলাদা বেডে ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসার প্রদানের। তবে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা আরো বাড়লে বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তিনি আরও বলেন,সারাদেশেই এখন ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে অবশ্যই সচেতনতার বিকল্প নেই। নিজ নিজ উদ্যেগে সচেতনতা বাড়াতে হবে। ডেঙ্গু প্রতিরোধে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকার পাশাপাশি বাড়ির আশপাশে কোথাও যাতে পানি জমে না থাকে সে দিকে লক্ষ রাখতে সচেতন করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও)মোহাম্মদ রাজীব-উল-আহসান প্রতিবেদককে,ডেঙ্গু মোকাবেলায় ইতিমধ্যে মিটিং করা হয়েছে। এডিস মশা প্রতিরোধে পৌরমেয়রসহ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানদের স্ব-স্ব এলাকা পরিস্কার-পরিছন্ন করতে বলা হয়েছে।