দেশকে সবুজে সবুজে ভরে তুলতে কাজ করছে বন বিভাগ : পরিবেশ ও বন মন্ত্রী

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মোঃ শাহাব উদ্দিন বলেছেন, সুস্থ পরিবেশে নাগরিকদের বেঁচে থাকার পরিবেশ সৃষ্টিতে দেশকে সবুজে সবুজে ভরে তুলতে কাজ করছে বন বিভাগ।

সরকারের পাশাপাশি প্রত্যেকে অন্তত একটি করে বনজ, ফলদ ও ঔষধি গাছের চারা রোপণ করতে হবে এবং সবুজ অর্থনীতিনির্ভর ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলা বিনির্মাণে আত্মনিয়োগ করতে হবে। মন্ত্রী বলেন, বৃক্ষরোপণে ময়মনসিংহ বন বিভাগের অর্জন অসাধারণ। হাতি-মানুষ দ্বন্দ্ব নিরসনেও সফলতার সাথে এখানে কাজ করা হচ্ছে।

শনিবার (২২ জুলাই) শেরপুর ডিসি উদ্যানে আয়োজিত ‘গাছ লাগিয়ে যত্ন করি, সুস্থ প্রজন্মের দেশ গড়ি’ প্রতিপাদ্যে ‘বৃক্ষরোপণ অভিযান ও বৃক্ষমেলা-২০২৩’ এর উদ্বোধন ও ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে চারা বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মোঃ শাহাব উদ্দিন এসব কথা বলেন।

এ সময় ময়মনসিংহ বন বিভাগের কর্মকাণ্ডের উল্লেখ করে বনমন্ত্রী বলেন, ময়মনসিংহ বন বিভাগে ২০১৮ সাল হতে ২০২৩ সাল পর্যন্ত ৯ হাজার ৪৬৮ একর বাগান সৃজন করা হয়েছে। এছাড়া রাস্তার পাশে স্থানীয় জনগোষ্ঠীকে সম্পৃক্ত করে ২৭০ কিলোমিটার বাগান সৃজনের মাধ্যমে দুই লাখ সত্তর হাজার টি বিবিধ প্রজাতি বৃক্ষ রোপণ করা হয়েছে। এছাড়া বন বিভাগ নেত্রকোণা ও ময়মনসিংহ ৭০ কিলোমিটার সীমান্ত সড়কে সত্তর হাজারটি বৃক্ষের চারা রোপণ করা হয়েছে।

মন্ত্রী বলেন, ময়মনসিংহ বন বিভাগে ২০২১ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে ৫ জেলায় মোট ২ হাজার ৬৬৫ জন উপকারভোগীকে বিকল্প জীবিকায়নের জন্য প্রশিক্ষণ প্রদান করেছে এবং ইতোমধ্যে ২ হাজার ১১১ জনকে সাত কোটি নয় লাখ আটান্ন হাজার ছয় শত চল্লিশ টাকার ঋণ বিতরণ করা হয়েছে। এক কোটি বিয়াল্লিশ লাখ উনত্রিশ হাজার চার শত পঁচানব্বই টাকা ব্যয়ে মোট ১৫৬ টি অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে । এসময় ১ টি বিভাগীয় বন কর্মকর্তার অফিস কমপ্লেক্স, ১ টি অফিসার ডরমেটরি, ২ টি রেঞ্জ অফিস, ১ টি বিট অফিস, ৩ টি স্টাফ ব্যারাক নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে।

পরিবেশ মন্ত্রী বলেন, মানুষ-হাতি দ্বন্দ্ব নিরসনে ময়মনসিংহ বন বিভাগে শেরপুর জেলায় ৮ কিলোমিটার সোলার ও বায়োফেন্সিং স্থাপনের কাজ প্রায় শেষের পথে। আরো ৫০ কিলোমিটার সোলার ও বায়োফেন্সিং স্থাপনের জন্য প্রকল্প তৈরি করা হচ্ছে। বর্তমানে শেরপুর জেলার পাহাড়ি বনাঞ্চালে বন্যহাতির অভয়ারণ্য ও চলাচলের করিডোর ঘোষণার কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এছাড়া হাতি দ্বারা ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে ২০১৪ সাল থেকে অদ্যাবধি বিরানব্বই লাখ পঁচিশ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে।

মন্ত্রী বলেন, ময়মনসিংহ বন বিভাগে সামাজিক বনায়নের সাথে সম্পৃক্ত প্রায় ২০ হাজার ১২৬ জনকে এ পর্যন্ত প্রায় ৭৩ কোটি ৬১ লাখ টাকা বিতরণ করা হয়েছে এবং প্রতি বছর প্রায় ৫ কোটি টাকা বিতরণ করা হতে থাকে। ২০১৮-২০১৯ অর্থবছর হতে এ পর্যন্ত প্রায় ১৮ কোটি টাকা বিতরণ করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে জাতীয় সংসদের হুইপ বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব মোঃ আতিউর রহমান আতিক, বন অধিদপ্তরের সুফল প্রকল্পের পরিচালক গোবিন্দ রায় এবং হোসাইন মুহম্মদ নিশাদ সহ স্থানীয় প্রশাসন ও বন বিভাগের কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।