নারায়নগঞ্জে জয়বাংলা নাগরিক কমিটি গঠন

বন্দর নগরী নারায়ণগঞ্জের জন মানুষের নতুন ইচ্ছের প্রতিফলনে শ্লোগান ভিত্তিক সংগঠনের “জয় বাংলা নাগরিক কমিটি” আত্মপ্রকাশ ঘটেছে। বৃহস্পতিবার (৫ জুলাই) শহরের গাবতলী এলাকায় “জয় বাংলা নাগরিক কমিটি”র আপাত কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংগঠনটি আত্মপ্রকাশের ঘোষনা প্রদান করা হয়।

এসময় সংগঠনের লক্ষ্য উদ্দেশ্য এবং সুস্পষ্ট আদর্শিক অবস্থান নিশ্চিত করে উপস্থিত নেতৃবৃন্দ বলেন, আসন্ন নারায়নগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের জন্য যোগ্য প্রার্থী বাছাই করা সময়ের প্রয়োজনীয়তা। কারণ, একজন বিশ্বমানের নেত্রী শেখ হাসিনার সাথে তাল মিলিয়ে চলতে পারেননি ডাঃ সেলিনা হায়াৎ আইভি। সারাদেশ যখন শেখ হাসিনার উন্নয়নের অভিযাত্রায় এগিয়ে যাচ্ছে, ঠিক তখন একজন আইভি দায়িত্বশীল পর্যায়ে থেকে পিছিয়ে পড়া এক চরিত্র। যে আশা ভরসার জন্ম হয়েছিল আইভি নামের এক বিপ্লবীকে ঘিরে, তিনি ততটাই হতাশ করেছেন নারায়ণগঞ্জবাসীকে। বুর্জুয়া শ্রেণির প্রতিনিধি বনে গেছেন, নাসিক হয়ে গেছে সুফিয়ান সিটি কর্পোরেশন।

তারা বলেন, শুরু হল পথচলা। শহর রক্ষার আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়বার অঙ্গিকারে সব ধরণের পেশাজীবি জনগোষ্ঠী সংগঠনটিতে একাট্টা হয়েছেন। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর প্রতিভাধর তনয়া শেখ হাসিনার রাজনৈতিক দর্শন প্রজন্মের কাছে ছড়িয়ে দেয়ার অঙ্গিকারে বলছে তাঁরা, মানুষ হয়েই লড়তে চাই। হতে চাই নাগরিক। তাই, এবারের আন্দোলন, শহর রক্ষার আন্দোলন। নতুন করেই সাজাতে হবে প্রিয় নারায়ণগঞ্জকে। নাগরিক কমিটি হয়ে সোচ্চার হলে হবে না, ফিরিয়ে আনতে হবে মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটকে।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের রাজনৈতিক আহবানে সংহতি প্রকাশ করে জয় বাংলা নাগরিক কমিটি রাজপথে আড়ম্বর আয়োজনের মধ্য দিয়ে আত্মপ্রকাশ ঘটায়নি। যদিও সামাজিক দুরত্ব রেখে প্রায় তিন শতাধিক পেশাজীবিদের উপস্থিতিতে তারা ১০১ সদস্যবিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি ঘোষনা করা হয়েছে। আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২১ সালে ১০০১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হবে। কমিটিতে কোন আহবায়ক ও সদস্য সচিবের পদ রাখা হয় নাই। সাবেক ক্রিকেটার ও কোচ তপু সাহা, শিক্ষক মোস্তাক আহমেদ, সাংবাদিক এম এস ইসলাম আরজু, কবি মিতা প্রধান, শিক্ষক সেলিনা সুলতানা শিউলি ও মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্মের প্রতিনিধি খাজা মামুন মিয়া এই ছয় জন যুগ্ম আহবায়ক হিসাবে দায়িত্ব প্রদান করা হয়।

জয় বাংলা নাগরিক কমিটি আত্মপ্রকাশের দিনে বিশেষ ঐ সভাটির সভাপতিত্বে ছিলেন, জনাব হুমায়ুন কবির।

অনুষ্ঠানে আলোচিত নতুন মুখের রাজনীতিক কামরুল ইসলাম বাবু, যিনি সম্প্রতি নাসিক নির্বাচনে অংশ নেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি তার শুভেচ্ছা বক্তব্যে বলেন, বিএনপি- জামায়াত ও মৌলবাদী গোষ্ঠী সতর্ক হয়ে যাও, নারায়ণগঞ্জের মাটিতে তোমাদের একটি সভা পর্যন্ত করতে দেব না। কারণ, তোমরা জনস্বার্থে রাজনীতি করতে জানো না। আর যারা তোমাদেরকে আশ্রয় দিয়ে ও ভোট নিয়ে নাসিকের বড় চেয়ারে বসে মধুর হাঁড়িতে মুখ লাগিয়ে চাটছেন, তাঁকে বিদায় নিতে হবে। তিনি একজন শেখ হাসিনাকে ঠকিয়েছেন, ঠকিয়েছেন নারায়ণগঞ্জবাসীকে।

জয় বাংলা নাগরিক কমিটির পক্ষে যুগ্ম আহবায়ক শিক্ষক মোস্তাক আহমেদ বলেছেন, দেশে লক ডাউন না থাকলে মেয়াদ পূর্তির আগেই জনাবা সেলিনা হায়াৎ আইভিকে পদত্যাগের দাবীতে সোচ্চার থাকা হবে। আসতে পারে হরতালের মত কর্মসূচীও। কাজেই রাজপথে দেখা হবে পরিবেশ পরিস্থিতি অনুযায়ী। তবে একটি চমক আসছে আগস্টের প্রথম সপ্তাহেই। আমরা তখন প্রমাণ করব, কেন এই শহরের জনগোষ্ঠী আমাদের উন্নত চিন্তাগুলি গ্রহন করবে ! আর চমক আসছে, রাজনৈতিক সমীকরণ বদলাচ্ছে, যা এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। আমরা একই সঙ্গে শোকের মাস আগস্ট ঘিরে সাংস্কৃতিক দিক ঠিক রেখে কর্মসূচী বাস্তবায়নে থাকব।

এদিকে কমিটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, শহরের মানুষগুলোর জন্য নাগরিক অধিকার সমুন্নত রাখবার উদ্যোগে যেতে হবে নগর সেবকের। নাগরিক থেকে সু নাগরিক হওয়ার চেষ্টা করবে এই শহরের জনগণ। কিন্তু, দায়িত্বশীল পর্যায়ের কর্পোরেশনটিকে বড়সড় দায়িত্ব নিতে হবে। যিনি (সেলিনা হায়াৎ আইভি) দায়িত্ব পালন করছেন, তিনি নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে পারেননি। তিনি সবুজ নারায়ণগঞ্জ করবার চেষ্টায় সঁপে দেয়া বিশেষ চরিত্র হতে পারেননি। শহরটাকে সুন্দর করতেও ব্যর্থ তিনি। ময়লা আবর্জনার স্তুপে শহরটার রঙ জীর্ণ হয়ে বড়ই বিবর্ণ হয়ে পড়েছে। কিন্তু, তাঁর কথার ফুলঝুরি আছে। এভাবে আর কত দিন? তাই চলতে পারে না। শহর রক্ষার আন্দোলনে যেতে হবে। পাড়া মহল্লায় সন্ত্রাস কমে নাই। চলছে মাদকের রমরমা ব্যবসা। কিন্তু, এসব অনৈতিক কর্মগুলোর সাথে নিজের বিশেষ অন্ধকার বাহিনী জড়িত থেকেও অন্যের ঘাড়ে দোষ চাপাতে তিনি সিদ্ধহস্ত। সব চাইতে বড় অভিযোগ হল, তিনি স্বাধীনতা বিরুদ্ধ শক্তির সাথে নেপথ্যে ও প্রকাশ্যে হাত মিলিয়ে চললেও কেহই মুখ খুলছে না।