নিজ কার্যালয়ে রাতে বাল্যবিবাহ দিলেন নওগাঁর বদলগাছী উপজেলা চেয়ারম্যান

নওগাঁর বদলগাছীতে রাতে নিজ অফিসে বসে বাল্যবিবাহ দিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান মো. সামছুল আলম খান। ঘটনাটি শুক্রবার রাত ৯ টায় উপজেলা পরিষদ অফিসে ঘটে। বিষয়টি নিয়ে আলোচনা সমালোচনা ঝড় বইছে উপজেলা জুড়ে।

জানা যায়, বৈকুন্ঠপুর গ্রামের মো. শামীম হোসেনের ছেলে আবু সাঈদ (১৬) আর ব্যাসপুর গ্রামের মোছা: মরিয়ম আক্তার(১৫) প্রেমের টানে ঘর ছাড়ে কিছু দিন আগে। এরপর তারা গ্রামে ফিরলে, সহযোগিতা চান নব-নির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যানের কাছে। চেয়ারম্যান ছেলে- মেয়েসহ উভয় পরিবার কে উপজেলা পরিষদে ডেকে নেয়। উভয়ের পরিবার নিয়ে রাত নয় টায় নিজ অফিসে বসে আধাইপুর ইউনিয়ন এর কাজী জাকির হোসেনের মাধ্যমে বাল্যবিবাহ দেন।

এরপর গোপন সংবাদের ভিক্তিতে খবর পাওয়ার পর স্থানীয় কয়েকজন সাংবাদিক উপস্থিত হোন উপজেলা পরিষদে। এবং সেখানে গিয়ে সত্যতা পায় স্থানীয় সাংবাদিকরা। এবং উপজেলা চেয়ারম্যানকে প্রশ্ন করে। ছেলে মেয়ে উভয়ের বয়স হয়েছে কি- না। এবং জন্ম নিবন্ধন কিংবা ভোটার আইডি দেখে বিবাহ দেওয়া হচ্ছে কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে চেয়ারম্যান বিবাহ বন্ধ না করার অনুরোধ করেন সাংবাদিকদের।

এরপর তাৎক্ষণিকভাবে সহকারী কমিশনার ভূমি মোসা. আতিয়া খাতুনকে স্থানীয় সাংবাদিকরা জানালে, তার কিছুক্ষণ পর একে একে সবাই উপজেলা পরিষদ থেকে বের হতে দেখা যায়। প্রায় ১ ঘন্টা অপেক্ষা করার পরও আইন প্রয়োগকারী কাউকে ঘটনাস্থলে পাওয়া যায়নি।

আধাইপুর ইউনিয়ন এর কাজী জাকির হোসেন বলেন,আমাকে ফোন করে ডেকে আনে চেয়ারম্যান। লেখালেখি শুরু করতেই আপনারা এসেছেন। জন্ম নিবন্ধন বা ভোটার আইডি দেখতে চাইলে ব্যাগ থেকে আনার কথা বলে ঘটনার স্থান ত্যাগ করেন ঐ কাজী।

এ বিষয়ে চেয়ারম্যান মো. সামছুল আলম খান বলেন, মেয়েটি এতিম। তাই উভয় পরিবারের লোকজন নিয়ে বিবাহের কাজ করছিলাম। তবে বিবাহ হয়নি। আপনার অফিসে রাত নয়টায় বাল্য বিবাহ দিতে পারেন কি না। এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি চুপ ছিলেন।

এ বিষয়ে জানতে সহকারী কমিশনার ভূমি মোছা. আতিয়া খাতুনের মুঠোফোনে বারবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তা সম্ভব হয়নি।

এদিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (চ.দা) মো কামরুল হাসান সোহাগ বলেন, ঘটনাটি সম্পর্কে আমি জানিনা। না জেনে মন্তব্য দেওয়া ঠিক হবে না। তবে আপনার মাধ্যমে যতটুকু জানলাম। বাল্য বিবাহ উপজেলা পরিষদে শুধু না সব জায়গায় সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। এবং সহকারী কমিশনার (ভূমি) আতিয়া খাতুন কে অবগত করার পরও কোন আইনগত পদক্ষেপ নেয় নি এ বিষয়ে কি বলবেন, আপনার কাছে ঘটনার তথ্য প্রমান থাকলে হোয়াটসঅ্যাপে দিন। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।