নির্বাচন আসছে, গাছ আছে কষ্টে! গাছে গাছে পেরেক ঠুকে বিলবোর্ড

নির্বাচন আসছে, গাছ আছে কষ্টে! সাতক্ষীরার কলারোয়ায় গাছে গাছে পেরেক ঠুকে বিলবোর্ড, ব্যানার, ফেস্টুন আর প্লাকার্ড টাঙানো হচ্ছে। প্রতিদিন প্রতিনিয়ত এর সংখ্যাও বৃদ্ধি পাচ্ছে।

উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের সড়কের পাশের গাছে গাছে পেরেক ঠুকে লাগানো হচ্ছে আগামি নির্বাচনের সম্ভাব্য প্রার্থীদের ব্যানার-বিলবোর্ড। এতে গাছগুলো ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। মরে গেছে বা যাচ্ছে অনেক গাছও।

সম্প্রতি কলারোয়া উপজেলার গড়গড়িয়া বাজার, খোরদো, যুগিখালী বাজার, শাকদাহ বাজার, ছলিমপুর বাজার, হেলাতলা, সোনাবাড়িয়া বাজার, রায়টা বাজার, চন্দনপুর সড়কসহ উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের বিভিন্ন সড়ক ঘুরে দেখা গেছে এমনই চিত্র। সড়কের পাশের গাছে গাছে ঝুলছে বিভিন্ন আগামি নির্বাচনের লক্ষ্যে প্রচারণার অসংখ্য ডিজিটাল বিলবোর্ড। এগুলো পেরেক দিয়ে গাছে আটকানো হয়েছে। সম্ভাব্য প্রার্থী বা রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের ছবি সম্বলিত বিলবোর্ডের পাশাপাশি এসবের মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন স্থানীয় কোচিং সেন্টার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং অন্যান্য ব্যবসা ও সামাজিক প্রতিষ্ঠানেরও ফেস্টুন-বিলবোর্ড। পিছিয়ে নেই বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি কোচিং সেন্টারগুলোর বিজ্ঞাপনও।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কলারোয়ার সাবেক এক প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘গাছে পেরেক লাগানোর কারণে গাছের গায়ে যে ছিদ্র হয় তা দিয়ে পানি ও এর সঙ্গে বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক ও অণুজীব ঢোকে। এতে গাছের ওই জায়গায় পচন ধরে। ফলে তার খাদ্য ও পানি শোষণপ্রক্রিয়া ব্যাহত হয়। একসময় গাছটি মরে যায়।’

ইয়াচিন আলী নামের এক বাসিন্দা বলেন, ‘সড়কের পাশের প্রতিটি গাছে পেরেক মেরে ১৫ থেকে ২০টি বোর্ডও টাঙানো হয়েছে। গাছে নির্বিচারে পেরেক লাগানোর কারণে সড়কের অনেক গাছ মরে গেছে। গাছে পেরেক মারা বন্ধ না হলে গাছগুলোও মরে যাওয়ার ঝুঁকিতে পড়বে।’

গাছে গাছে এভাবে পেরেক লাগানো উচিত কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে বিলবোর্ড টাঙানোকালে এক যুবক বলেন, ‘মনে হয় লাগানো ঠিক না।’

বেসরকারি কলেজের এক শিক্ষক বলেন, ‘প্রাণিকুলের বেঁচে থাকার জন্য প্রধান উপাদান গাছ। এই গাছের যে প্রাণ আছে, অনুভূতিশক্তি আছে, তা প্রমাণিত। তবে গাছের বাকশক্তি নেই। গাছ সবকিছু বিলিয়ে দিয়ে আমাদের জীবন বাঁচিয়ে রাখছে। উপকারের প্রতিদান হিসেবে গাছে পেরেক মেরে মানুষ তার প্রতিদান দিচ্ছে। আমাদের বিবেককে জাগ্রত করা দরকার।’

সংশ্লিষ্টদের প্রতি গাছে গাছে পেরেক মেরে নির্বাচনসহ অন্যান্য বিলবোর্ড টাঙানো রোধ ও যেগেুলো ইতোমধ্যে স্থাপন করা হয়েছে সেগুলো অপসারণের দাবি জানিয়েছেন সচেতন মহল।