নীলফামারীতে এক মাসের ছুটি নিয়ে এক বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রে শিক্ষিকা

নীলফামারীর সৈয়দপুর শহরের রহমাতুল্লাহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোছা. আশরাফীর বিরুদ্ধে এক মাসের ছুটি নিয়ে এক বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

২০২১ সালের অক্টোবরে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান শিক্ষিকা মোছা. আশরাফী। এরপর থেকে সেখানেই পরিবার নিয়ে বসবাস করছেন।

সৈয়দপুর উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, রহমাতুল্লাহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আশরাফী ২০২১ সালের ১২ সেপ্টেম্বর থেকে ১১ অক্টোবর পর্যন্ত ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে বিদ্যালয় থেকে এক মাস ছুটি নেন। পরে তিনি সপরিবারে যুক্তরাষ্ট্র চলে যান। তারপর থেকে বিদ্যালয়ের সঙ্গে তিনি কোনো যোগাযোগ করেননি। ছুটি বাড়ানোর বিষয়েও কোনো ধরনের আবেদন করেননি।

এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান শিক্ষক হাফিজা খাতুন বলেন, এক মাসের ছুটির জন্য আবেদন করেন আশরাফী। আমি সুপারিশ করে শিক্ষা কর্মকর্তার মাধ্যমে শিক্ষা অধিদপ্তরে পাঠানো হয়। এরপর তিনি মহাপরিচালকের (ডিজি) অনুমতি সাপেক্ষে বিদেশে যান। তবে তিনি যাওয়ার সময় ছুটি মঞ্জুরের কোনো কাগজ বা প্রমাণপত্র বিদ্যালয়ে বা উপজেলা শিক্ষা অফিসে জমা দেননি। গৃহীত এক মাসের ছুটি শেষ হলেও তিনি কর্মস্থলে উপস্থিত না হওয়ার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে গত বছরের ১২ অক্টোবরের পর থেকে হাজিরা খাতায় তাকে অনুপস্থিত দেখিয়ে আসছি।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষক বলেন, আমার সহকর্মী মোছা. আশরাফী মূলত শাশুড়ির অসুস্থতার অজুহাতে যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জনের জন্য কোনো একটি প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত। পাশাপাশি সেখানে চাকরিও করছেন। বিষয়টি প্রধান শিক্ষক ও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করে রেখেছেন। আর আমাদের অতিরিক্ত খাটাচ্ছেন। তিনি কারও সঙ্গেই যোগাযোগ রাখেননি।

যোগাযোগ করা সম্ভব না হওয়ায় অভিযোগের বিষয়ে সহকারী শিক্ষিকা মোছা. আশরাফীর বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

মোছা. আশরাফীর ভাই কামাল ইকবাল ফারুকীর সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বোনের কর্মস্থলে অনুপস্থিতির বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

এ বিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শাহজাহান আলী মন্ডল বলেন, বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। তারা এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেবেন।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নবেজ উদ্দিন সরকার বলেন, বিষয়টি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার মাধ্যমে জানতে পেরেছি। আমরা প্রথমে ওই শিক্ষককে অনুপস্থিতির বিষয়ে শোকজ করবো। শোকজের জবাব না পেলে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।