সংবাদ প্রকাশ না করার অনুরোধ মালিকের

নেত্রকোনার দুর্গাপুরে আবাসিক হোটেল বানিজ্যের আড়ালে চলছে অনৈতিক কর্মকান্ড

সীমান্তবর্তী নেত্রকোনার দুর্গাপুরে লাইসেন্স বা নিবন্ধন বিহিন আবাসিক হোটেলে (গেস্ট হাউস) দিনে-রাতে অবাধে চলছে রমরমা দেহ ব্যবসা। প্রশাসনের সামনেই এইসব চললেও প্রশাসন কিছু করছে না বলে অভিযোগ উঠেছে।

২০ টিরও বেশী নামে-বেনামে আবাসিক হোটেল রয়েছে দুর্গাপুর পৌর সদরসহ বিরিশিরি, উৎরাইল এলাকায়। সীমান্তবর্তী এই অঞ্চলটি পর্যটন এলাকা হওয়ায় দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে এখানে ঘুরতে আসে লোকজন। তাদের মধ্যে অনেকের গেস্ট হাউসে রাত্রি যাপনের চাহিদায় থাকে নারী যৌনকর্মী।

তাছাড়াও স্থানীয় উঠতি বয়সের স্কুল-কলেজ পড়ুয়া ছেলেদের শারীরিক মেলামেশার জন্য নিরাপদ স্থান এই হোটেলগুলো। এখন হোটেলগুলোর আয়ের সবচেয়ে বড় মাধ্যম হয়ে দাঁড়িয়েছে এসব অনৈতিক কার্যকলাপ।
অভিযোগ রয়েছে,দেহ ব্যবসার পাশাপাশি আবাসিক হোটেল গুলো নির্ভয়ে মাদক সেবনের আস্থানায় পরিনত হয়েছে।

এতো সব অনৈতিক আয়োজনের কর্মকান্ড নির্বিঘ্নে করার সুযোগ করে দেয় এই হোটেলের দায়িত্বরত হোটেল বয় থেকে ম্যানেজার ও মালিক পক্ষের লোক। অন্যদিকে আবাসিক হোটেল (গেস্ট হাউস) পরিচালনায় যেসব বিধি-নিষেধ সেগুলোর প্রয়োজন কিছুই মান্য করছে না মালিকপক্ষ।

দীর্ঘদিনের মৌখিক অভিযোগের ভিত্তিতে সরেজমিনে গেলে অনৈতিক কার্যকলাপের সত্যতাও মেলে। বিষয়টি নিয়ে মালিক পক্ষের সঙ্গে আলাপচারিতায় উঠে এসেছে,থানায় মাসোহারা দিয়েই নির্বিঘ্নে চলে নারী দিয়ে দেহ ব্যবসা। তাই সব জেনেও নিরব ভূমিকায় থাকছে প্রশাসন। তাছাড়াও থানা পুলিশের অনুমতি নিয়ে তারপর সাংবাদিকদের হোটেলে প্রবেশ করতে হবে জানিয়েছে এক হোটেল মালিক।

সরেজমিনে গিয়ে আরও দেখা গেছে,পৌর শহরের উৎরাইল এলাকার বিচিত্রা গেস্ট হাউসে নারী দিয়ে দেহ ব্যবসা চলছে। এই দেহ ব্যবসায় জড়িয়ে পরা এক অসহায় নারী জানালেন জীবনের করুণ কাহিনী। অভাবের তাড়নায় এসেছেন এই পেশায়। একই এলাকার নদী বাংলা গেস্ট হাউসে গেলে ভিতরে প্রবেশের জন্য নিষেধ করেন হোটেল মালিক। বিরিশিরির ঘোড়াইত এলাকায় মৌসুমি গেস্ট হাউস নামের আবাসিক হোটেলেও মেলে নারীর উপস্থিতি।

এক হোটেল বয় এর সঙ্গে কথা বললে সে জানায়, ভিআইপি কাস্টমার যারা আসেন তাদেরও চাহিদা থাকে এই নারী। তাই নারী যৌন কর্মী রাখা হয়েছে।

জানতে চাইলে বিচিত্রা গেস্ট হাউসের মালিক আশিশ সাংমা তার হোটেলে দেহ ব্যবসার কথা স্বীকার করেছেন। তিনি জানান, শুধু তার এখানেই নই অন্যগুলোতেও এসব অনৈতিক কার্যকলাপ চলে। এখন ব্যবসা ভালো নেই। আগে ব্যবসা ভালো ছিলো তাই প্রতিমাসে মাসে ১২ হাজার টাকা থানায় দিতে হতো। পাশাপাশি তার হোটেলের ঘটনাটি সংবাদ প্রকাশ না করার জন্য সংবাদকর্মীদের অনুরোধ জানান তিনি।

অপর দিকে একই এলাকার নদী বাংলা গেস্ট হাউস নামের আবাসিক হোটেলে এক নারী যৌন কর্মী ও দুই জোড়া যুবক-যুবতী অবস্থানের তথ্যে সেখানে গেলে হোটেল মালিক সাবেক পৌর মেয়র আলা উদ্দিন আলালের ছেলে প্রভাবশালী আজহারুল ইসলাম আরিফ তাঁর হোটেলের (গেস্ট হাউস) ভিতরে সাংবাদিকদের ঢুকতে ফোনের মাধ্যমে নিষেধ করেণ।

তিনি বলেন,থানার অনুমতি নিয়ে তারপর তাঁর হোটেলে যাওয়ার কথা। এছাড়া আর যেন সাহস না হয় তার এখানে যাওয়ার বলে হুমকি প্রদান করেন তিনি।

এ ব্যাপারে দুর্গাপুর থানার ওসি উত্তম চন্দ্র দেব এর সাথে এবিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, সাংবাদিকরা তথ্য আনার জন্যে কোথায় যাবেন সেটা পুলিশকে অবহিত করতে হবে এটা ঠিক নয়, তবে পুলিশ নিয়ে সেখানে যেতে হবে সেটা বলা তার উচিত হয়নি, আমি দেখছি।তিনি আরো বলেন আমাদের জনবল কম থাকায় অনেক সময় অনেক কিছু খেয়াল রাখার সুযোগ হয়ে উঠেনি,একন থেকে বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখবো।

এ ব্যাপারে নির্বাহী কর্মকর্তা এম.রকিবুল হাসান বলেন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় নিয়ে আপনারা হাটছেন এ জন্য ধন্যবাদ। আমি গুরুত্বের সাথে বিষয়টি দেখবো।