পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় আমনের বাম্পার ফলন, কৃষকের মুখে হাসি

সর্বউত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় প্রকৃতির বুকে এসেছে শীত। শীতের আগমনে ঘাসের ডগায় শিশিরের স্পর্শ। শিউলি ফুলের ঘ্রাণ আর টুপটাপ শিশির ঝরার শব্দ, কুয়াশাচ্ছন্ন সকাল এবং ভোরের মিষ্টি রোদের ঝিকিমিকি এনে দেয় শীতের সৌন্দর্যের পরিপূর্ণতা।

শীতের আগমনে শীতকালীন নানা রকমের সবজির পাশাপাশি আমন ধান ঘরে তোলার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন উপজেলার চাষিরা। এবার উপজেলায় আমন ধানের বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে ফুটেছে সোনা ধানের মতো হাসি। চলতি মৌসুমে আমন চাষে বাম্পার ফলন হয়েছে। চাষিরা মনে করছেন তাঁরা কাক্সিখত দাম পেলে লাভবান হবেন।

উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্যমতে, চলতি মৌসুমে উপজেলায় এ বছর ১১ হাজার ২৫০ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষ করা হয়েছে। যার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১১ হাজার ২২৫ হেক্টর জমি। এর মধ্যে উফশী ধান ১০ হাজার ২৫০ হেক্টর, হাইব্রিট সাড়ে ৭’শ হেক্টর এবং স্থানীয় ২২৫ হেক্টর।

সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার বুড়বুড়ি ইউনিয়নের কালদাসপাড়া গ্রামের মফিজুল, হামিদুল, আলতাফসহ অনেকেই ধান কাটছেন।

কথা হয় কৃষক মফিজুলের সঙ্গে। তিনি জানান, এ মৌসুমে তিন বিঘা জমিতে আমন ধানের চাষ করেছেন। তিনি ধান কাটা প্রায় শেষ করেছেন। ধান কাটা এখনো শেষ না হওয়াতে তিনি ফলনের পরিমাণ বলতে পারেননি। তবে বাম্পার ফলনের আশা ব্যক্ত করেন। কাক্সিখত দাম পেলে কৃষক ধান চাষে লাভবান হবেন বলে জানান তিনি।

এছাড়াও অন্যান্য কৃষকরা জানান, আমন ধানের রোগবালাই খুব কম। ফলন আশার চেয়ে বেশি হয়েছে। সাধারণত অগ্রহায়ণ মাসের শেষ দিকে আমন ধান কাটা হয়। এবার মাস খানিক আগেই এই ধান পাকতে শুরু করেছে। সব খরচ বাদ দিয়ে এবার লাভবান হবেন বলে আশা করছেন কৃষকরা।

উপজেলার শালবাহান বাজারের ধান ব্যবসায়ী অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য আলমগীর হোসেন ও সফিউল ইসলাম ওরফে পহাতু এবং খুচরা ব্যবসায়ী মোঃ রিয়াজুল জানান, বর্তমানে ধানের প্রকারভেদে অনুযায়ী আজ (১৯ নভেম্বর) প্রতি মন ধান ৯’শ থেকে সর্বোচ্চ ১১’শ টাকায় কেনাবেচা হচ্ছে। তবে ধান কাটার শুরুর দিকে ধানের দাম আরোও বেশি ছিলেন বলে জানা যায়।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ভালো ফলন পেতে মাঠ পর্যায়ে আমি ও উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা কৃষকদের বিভিন্নভাবে পরামর্শ দিয়েছি। এতে চলতি রোপা আমন মৌসুমে ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। কৃষক ধানের কাক্সিখত দাম পাওয়ায় আগের চেয়ে চাষ বেড়েছে। এছাড়া অনুক‚ল আবহাওয়া আর কৃষি বিভাগের তৎপরতায় চলতি মৌসুমে আমন ধানের এই বাম্পার ফলন হয়েছে। আশা করছি আগামীতে কৃষকরা আরোও লাভবান হবেন।