পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া ইকোপার্কে অযত্নে মারা গেল চিত্রা হরিণ

পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া ইকোপার্কের অযত্নে একটি চিত্রা হরিণ মারা গেছে। শনিবার (১২ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে হরিণটি মারা যায়। অযত্নে অবহেলিত অসুস্থ্য হরিণটি বাহিরে থাকা কুকুরের আওয়াজ পেয়ে গাছের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে মারা গেছেন বলে ইকোপার্কের এক কর্মচারী জানিয়েছেন।

জানা যায়, পর্যটকদের দৃষ্টিনন্দনের জন্য ২০২১ সালে ডাকবাংলোর পিকনিক কর্নারের চত্বরের পাশে বন বিভাগের দশ একর জমির উপর এই ইকোপার্কটি গড়ে তোলা হয়। এখানে নানা ধরনের প্রাণী সংরক্ষণ ও প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করা হয়। দিনাজপুর বন বিভাগ থেকে এক জোড়া হরিণ আনা হলে এদের মধ্যে নারী হরিণটি বাচ্চা প্রসব করলেও হরিণ শাবকটি মারা যায়। পরে নারী হরিণটি অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে আবার দিনাজপুর রামসাগর ইকোপার্কে চিকিৎসার জন্য পাঠিয়ে দেওয়া হয়। পরে আবারও আনা হয় জোড়া পুরুষ হরিণ। তিনটি পুরুষ হরিণের মধ্যে বর্তমানে দুটি হরিণ জীবিত রয়েছে।

সরেজমিনে গিয়ে আরোও জানা যায়, অল্প বৃষ্টিতেই হরিণের বসবাসের ঘরে পানি জমে থাকে। এতে দায়িত্বে থাকা বন বিট অফিসার দেখেও কোন ব্যবস্থা না নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ইকোপার্কের এই বন্যপ্রাণীদের থাকতে হয় অযত্নে ও অবহেলায়। এছাড়াও বন্যপ্রাণীদের তেমন খাবার চাহিদা মেটানো হচ্ছে না।

স্থানীয়রা জানান, ইকোপার্কটি গড়ে ওঠার পর স্থানীয়দের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়। প্রতিদিন অসংখ্য দর্শনার্থী ইকোপার্কটি পরিদর্শন করে। তবে ইকোপার্কে পরিবেশ তেমন ভালো নয়, নিরাপত্তার অভাব রয়েছে।

তেঁতুলিয়া বন বিভাগের বিট কর্মকর্তা শহীদুল ইসলাম জানান, হরিণটি গাছের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে ব্রেইন স্ট্রোকে মারা গেছে। উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার পরীক্ষার পর হরিণটিকে মাটিতে পুতে দেয়া হয়েছে। হরিণটি অসুস্থ্য ছিল কিনা বা ব্রেইন স্ট্রোকে মারা যাওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, বাহিরে কুকুরের উপদ্রব থাকায় গাছের সঙ্গে থাক্কা খেয়ে হরিণটি মারা যায়। কিন্তু শনিবার (১২ নভেম্বর) এক গণমাধ্যমের প্রতিবেদনের সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, হরিণটি ভালোই ছিল, হরিণটির হঠাৎ শারীরিক অসুস্থতা দেখা দেয়। পরে সকালে দেখি হরিণটি মারা গেছে। কিন্তু হরিণটি কিভাবে মারা গেছে তা তিনি বলতে পারেননি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সোহাগ চন্দ্র সাহা ইকোপার্কের হরিণটি মারা যাওয়ার খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন।