পঞ্চগড়ে গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কারের নামে চলছে লোপাট, দেখার কেউ নেই
![](https://ournewsbd.net/wp-content/uploads/2023/04/নুচরাপাড়া-পেলকুজোত-পতিপাড়া-ও-জোতহাসনা-রাস্তার-কাজ-পিক-880x450.jpg)
![](https://ournewsbd.net/wp-content/uploads/2025/02/475351977_1256003665483861_2959209934144112011_n.jpg)
পঞ্চগড় সদর উপজেলায় গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার (কাবিটা, কবিখা ও টিআর)’র নামে চলছে লোপাটের পাঁয়তারা, দেখার কেউ নেই।
জানা যায়, পঞ্চগড় সদর উপজেলায় গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার (কাবিটা, কবিখা ও টিআর) এর ১ম ও ২য় পর্যায়ের ‘সাধারন’ খাতে বিভিন্ন প্রকল্পের নামে এবার ১ম পর্যায় কাবিটা থেকে ৪২ লাখ ৯১ হাজার ৯শ’৬২ টাকা, কাবিখা খাদ্যশস্য (চাল) থেকে ২৮ দশমিক ৬১৩৪ মেট্রিক টন ও কাবিখা খাদ্যশস্য (গম) থেকে ২৮ দশমিক ৬১৩৪ মেট্রিক টন এবং টিআর থেকে ৩০ লাখ ৭৫ হাজার ৪শ’ ৩৯টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। ২য় পর্যায় কাবিটা থেকে ৪২ লাখ ৮৪ হাজার ৯শ’৮০ টাকা, কাবিখা খাদ্যশস্য (চাল) থেকে ২৮ দশমিক ৫৯৯ মেট্রিক টন ও কাবিখা খাদ্যশস্য (গম) থেকে ৫৭ দশমিক ১৯৮ মেট্রিক টন এবং টিআর থেকে ১৫ লাখ ৮৭ হাজার ৯শ’ ১১টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখতে ও জানতে পারা যায়, সদর উপজেলার সাতমেড়া ইউনিয়নের ‘জোতহাসনা তিন রাস্তার মাথা হতে মকবুলের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা সংস্কার’, ‘পেলকুজোত গোরস্থান হতে পখিলাগা ডাঙ্গাপাড়া পর্যন্ত রাস্তা সংস্কার’ এবং ‘নুচরাপাড়া হাসিবুলের বাড়ি হতে পেলকুজোত পাকা রাস্তা পর্যন্ত রাস্তা সংস্কার’ এর নাম মাত্র কাজ দেখিয়ে টাকা লোপাট করা হয়েছে।
এদিকে পতিপাড়া পাকা রাস্তা হতে বন্দিপাড়া নতুন মসজিদ পর্যন্ত রাস্তার কোনোই কাজ করা হয়নি। এই প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়েছিল ৪লাখ টাকা এবং ১১ মেট্রিক টন চাল। এছাড়াও ওই ইউনিয়নে আরও চোখে পড়ার মতো কাজ রয়েছে। প্রতিটি প্রকল্পই ১ম পর্যায়ের বলে জানা গেছে। অন্যদিকে ২য় পর্যায়ের কাজ গুলো এখন পর্যন্ত রানিং রয়েছে শেষটি লক্ষ্য করা যায়নি। তবে ২য় পর্যায়ের কোন কোন কাজ এখনও শুরুই করা হয়নি এমনটি দেখা গেছে। শুধু তাই নই, সদর উপজেলায় ঘুরে দেখলে লক্ষ্য করা যাবে প্রায় প্রতিটি প্রকল্প যেমনটি সিডিউল অনুসারে বাজেট বরাদ্দ হয়েছে তেমনটি কাজ হচ্ছে না। শতকরা অর্ধেকেই লোপাট করছেন প্রকল্প কমিটি।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রাস্তা সংস্কারে প্রকল্পের দায়িত্বরত ইউপি সদস্য কিংবা চেয়ারম্যান কয়েকটি দিন মুজুর নিয়ে কাঁচা রাস্তার উপরের ঘাস-মাটিসহ কেটেছেঁটে কাজের বিনিময়ে খাদ্য (কাবিখা) ও কাজের বিনিময়ে টাকা (কাবিটা) প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পেলকুজোত গ্রামের এক মহিলা জানান, ‘রাস্তাটার কোনোটে ভাঙা নাই, ভালো রাস্তা, খুব শক্ত। সিদ্দিক মেম্বার কয়েকজন লোক নিয়ে রাস্তার দুই ধারের ঘাস মাটিসহ তুলে ফেলছে।’ ওই এলাকার আরও এক ব্যক্তি বলেন, ‘শক্ত মাটি কোদাল দিয়ে খুঁড়ে আলদা করে ভালো রাস্তাটা খারাপ বানাইছে। পানি হইলে রাস্তাটা এখন ভাঙে যাবে। কাদো হবে। এইগলা দেখার কী কাঁয়ো নাই।
দশমাইল ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের কয়েকজন জানান, পতিপাড়া পাকা রাস্তা হতে বন্দিপাড়া নতুন মসজিদ পর্যন্ত রাস্তায় কোনো কাজ করা হয়নি। অন্যদিকে আরেকজন কৃষক বলেন, জোতহাসনা তিন রাস্তার মাথা হতে মকবুলের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তাটি মেম্বার কয়েকজন লোক নিয়ে বন গুলো চেঁচিয়ে ফেলেছেন। এক ট্রলি মাটিও ফেলানি এই রাস্তার উপর। এছাড়াও নুচরাপাড়া হাসিবুলের বাড়ি হতে পেলকুজোত পাকা রাস্তা পর্যন্ত রাস্তার উপরের ঘাস-মাটিসহ কেটেছেঁটে ফেলা হয়েছে। মাঝে মধ্যে নামে মাত্র দুই এক কোদাল মাটি দেয়া হয়েছে।
সাতমেড়া ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, বর্তমানে এইভাবে আপাতত কাজটি করা হয়েছে। চুড়ান্ত বিলের সময় মাটি ভরাট করেই বিল তোলা হবে।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা(পিআইও) জিয়াউর রহমান বলেন, ‘আপনি কি নতুন সাংবাদিক? না, ২০১৪ সাল থেকে, কেন? তিনি বললেন আমি নতুন এসেছি এ সম্পর্কে কিছুই জানিনা। এটা তো এমপির কাজ আপনার এখানকার এমপি কেমন? এই কাজটি করছেন ইউপি সদস্য আর এমপি মহোদয়ের কাজগুলোতো করেন উনার নিযুক্ত কোন ব্যক্তি। তিনি বলেন এটিও তার কাজ। শেষে তিনি বলেন, এখনো চুড়ান্ত বিল দেয়া হয়নি বিষয়টি দেখবো। প্রকল্পের কাজ গুলো দেখেন কে এমন জিজ্ঞাসায় তিনি বলেন, আরিফুল ইসলাম।’ এদিকে কার্যসহকারী আবু হানিফ প্রথমে বিষয়টি অস্বীকার করেন পরে বলেন হ্যাঁ আমি দেখি তবে স্যারও দেখেন। তাহলে রাস্তা সংস্কার মানেকি রাস্তার ঘাস-কেটেছেঁটে দেয়া তিনি বলেন, এখনো চুড়ান্ত বিল দেয়া হয়নি রাস্তার কাজ দেখেই বিল দেয়া হবে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও) মাসুদুল হক বলেন, ‘এখনো চুড়ান্ত বিল দেয়া হয়নি কাজ দেখেই বিল দেওয়া হবে। তিনি এ বিষয়ে পিআইওকে বলবেন এবং রাস্তার ঘাস-কেটেছেঁটে দিয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন বিষয়টি দেখতে চেয়েছেন।
![](https://ournewsbd.net/wp-content/uploads/2024/12/469719549_122234398946008134_2936380767280646127_n.jpg)
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন