পঞ্চগড়ে সর্বনিম্ন তাপমাত্রার কারনে রোগবালাইয়ের দুঃশ্চিন্তায় আলু চাষিরা

দেশের সর্বউত্তরের হিমালয় খ্যাত সীমান্তবর্তী জেলা পঞ্চগড়। ভারতের সীমান্ত কাঞ্চানজংহা, ডার্জিলিং, হিমালয় পর্বত খুব কাছে হওয়ায় এজেলায় শীতের প্রকোপ দিনের দিন বৃদ্ধি হতে থাকে এবং দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বিরাজ করে থাকে সব সময়। একারণে ঘন কুয়াশা মাঝে মাঝে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি সহ প্রচন্ড শীতের ঠান্ডার তাপমাত্রা নিম্ন হতে থাকে। এমন কি ৫ থেকে ৭ দিন পর্যন্ত সূর্যের মুখ পর্যন্ত দেখা যায় না। জানুয়ারির শেষের দিকে এ জেলায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বিরাজ করছে।

গত শনিবার সকাল ৯টা থেকে ৬ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করে পঞ্চগড় তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অধিদপ্তর।

সোমবার (২৩ জানুয়ারী) সকাল ৯ টা হতে ৮ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ। তিনি আরও জানান,ঘন কুয়াশার সাথে তিব্রতাপমাত্রা বিরাজ সহ ঠান্ডা প্রকোপ বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে।

এদিকে এজেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বিরাজ করায় আলুর বাম্পার ফলনের আশায় দুঃশ্চিন্তা ও বিপাকে পরেছে স্থানীয় আলু চাষিরা। ঘন কুয়াশা আর তাপমাত্রা নিম্ন হওয়ায় আলু কৃষকদের কপালে পড়েছে দুঃশ্চিন্তার ভাঁজ। জেলা ও উপজেলার বিভিন্ন এলাকা জুড়ে দেখা যায় মাঠে বিস্তীর্ণ আলু ক্ষেত। এসব ক্ষেতে চাষিরা তাদের কাংক্ষিত ফসলের জন্য মাঠ চুষে করছে কাজ।

দেবীগঞ্জ উপজেলার সোনাহার ইউনিয়নের আলু চাষি ওয়াহেদ আলী তিনি জানান, বর্তমান শীতে যেভাবে ঘন কুয়াশা ঝড়ছে তাতে করে আলু ক্ষেতে বিভিন্ন ধরণে রোগবালাই সৃষ্টি হচ্ছে। আর এই রোগবালাইয়ের কারণে কাংক্ষিত লক্ষমাত্রা অর্জন ও উৎপাদনে ব্যাঘাত ব্যয় বাড়বে।

পঞ্চগড় সদর উপজেলার গড়িনাবাড়ি ইউনিয়নের ভাউলা পাড়া এলাকার জয়নুল বলেন, ১৫ বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছি। ভাল জাতের আলু রোপন করেছি আশা করছি ফলন ভাল হবে। কিন্তু চলতি মৌসুমে যেভাবে ঘনকুয়াশা নিম্নতাপমাত্রা উঠামানা করছে তাতে আলু গাছে মোড়ক রোগ লাগার সম্ভাবনা রয়েছে।

সদর উপজেলার ধাক্কামারা ইউনিয়নের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা গুলজার রহমান আনসারী বলেন, এখন কৃষকের আলু ক্ষেত খুব ভাল রয়েছে এবং ফলনও আশানুরুপ হবে। বৈরী আবহাওয়া ও তাপমাত্রা কমবেশির কারণে আলু ক্ষেতে ব্লাইট রোগ হওয়ার সম্ভাবনা আছে। তবে আলু চাষিদের প্রতিনিয়ত আমরা পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি।

পঞ্চগড় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর অফিস সূত্রে জানা যায়, এবার চলতি মৌসুমে আলুর লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৯ হাজার ৯ শত ২০ বিশ হেক্টর জমি আর চাষাবাদ হয়েছে ৯ হাজার ৮ শত হেক্টর জমি তবে লক্ষমাত্রার চেয়ে বেশি অর্জিত হবে বলে জানান উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ আনোয়ার সাদেক।

এদিকে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ রিয়াজ উদ্দিন তিনি জানান, চলতি মৌসুমে এবার আলুর বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। তবে তাপমাত্রা তারতম্য ও ঘন কুয়াশার কারণে আলু ক্ষেতের রোগ বালাই এর সমস্যা হতে পারে। প্রতিকুল সময়ে পরিবেশ মোবাবিলা করার জন্য আমাদের মাট পর্যায়ে কৃষি উপ-সহকারী কর্মকর্তারা সার্বক্ষণিক কৃষকের সাথে যোগাযোগ রেখে পরামর্শ প্রদান করছেন।