পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় স্কুল ম্যানেজিং কমিটি গঠনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে আদালতে মামলা

পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার বাঁশবুনিয়া রাশেদিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নির্বাচিত ম্যানেজিং কমিটির অনুমোদন এবং বৈধতা নিয়ে আদালতে মামলা হয়েছে। কাওসার নামে একজন অভিভাবক বাদী হয়ে পিরোজপুর জেলা জজ আদালতে ৩ নভেম্বর মামলাটি দায়ের করেন।

জানা গেছে, আদালতে দায়ের করা ওই মামলায় বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানকে বিবাদী করা হয়। বোর্ড চেয়ারম্যান ১০ অক্টোবর আদালত থেকে কারন দর্শানোর নোটিশ প্রাপ্ত হন। নোটিশ পাওয়ার পর বোর্ড চেয়ারম্যান ১২ অক্টোবর মামলায় উল্লেখিত নিয়মিত ওই কমিটির অনুমোদন দেন।আবার ১৬ অক্টোবর এ কমিটি বাতিল করেন।

২০১৭ সালের এপ্রিল মাস পর্যন্ত বিদ্যালয়টির সর্বশেষ ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ছিলেন মুরাদ মিয়া।এরপর শুরু হয় ৬ মাস মেয়াদি এডহক কমিটি। সর্বশেষ এডহক কমিটিরও সভাপতি ছিলেন মুরাদ মিয়া।তফসিল অনুযায়ী ২০২২ সালের ৮ তারিখ ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনেও সভাপতি নির্বাচিত হন মুরাদ মিয়া।এ কমিটির বিরুদ্ধে বরিশাল শিক্ষা বোর্ডে অভিযোগ দেন স্থানীয় ইউপি সদস্য ও অভিভাবক মনির হোসেন।বোর্ড থেকে অভিযোগটি তদন্তের জন্য মঠবাড়িয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট অগ্রগামী করা হয়। নির্বাহী অফিসার দায়িত্ব দেন সাফা ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোঃ ফজলুল হককে।তিনি মুরাদ মিয়ার কমিটিকে বৈধ বলে প্রতিবেদন দাখিল করেন।

১৬ অক্টোবর বিদ্যালয়ে নতুন ম্যানেজিং কমিটির প্রথম মিটিং অনুষ্ঠিত হয়।ঢাকঢোল পিটিয়ে অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানে মিটিং শেষ হতে না হতেই কমিটি বাতিল হয়ে যাওয়ার খবর প্রকাশ পায়।এরপর এডহক কমিটি অনুমোদন দেয় শিক্ষা বোর্ড। এতে মঈনুল ইসলাম মিরন মিয়াকে সভাপতি মনোনীত করা হয়।

এদিকে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ২ লক্ষ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়। অভিযোগের ভিত্তিতে পূর্বের এডহক কমিটির নির্দেশে বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক জগদীশ চন্দ্র সমদ্দারকে আহ্বায়ক করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।তদন্ত কমিটির তদন্তে অর্থ আত্মসাতের সত্যতা পাওয়া যায়।বর্তমান এডহক কমিটি ওই প্রতিবেদন মিথ্যা বলে দাবি করে পুনরায় তদন্ত কমিটি গঠন করতে চায়।

এ ব্যাপারে বাঁশবুনিয়া রাশেদিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) আব্দুল হামিদ খান জানান,অবৈধভাবে কমিটি গঠনের জন্যই আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ এনে তদন্তের নামে হয়রানি করা হয়েছে।আমার অনুপস্থিতিতে (মেডিকেল ছুটি) সহকারী শিক্ষক (বিপিএড) জগদীশ চন্দ্র সমদ্দারকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক করে ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচন সম্পন্ন করা হয়েছে। শিক্ষা বোর্ড এ কমিটি বাতিল করে দিয়েছে। দীর্ঘদিন নিয়মিত কমিটি না থাকায় বিদ্যালয়ে কোন উন্নয়ন নেই।মূল ভবনের পলেস্তারা খসে পড়ছে।স্যানিটেশন ও বিশুদ্ধ খাবার পানির কোন ব্যবস্থা নেই।সব মিলিয়ে বিদ্যালয়টি অস্তিত্ব সংকটে রয়েছে।

নির্বাচনকালীন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক এবং বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (বিপিএড) জগদীশ চন্দ্র সমদ্দার জানান,ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচন হয়েছে। তবে কত তারিখ হয়েছে এটা আমার মনে নেই।কাগজ দেখে বলতে হবে।