পুরো হাতে চামড়া পেল মুক্তামনি

রক্তনালির টিউমারে আক্রান্ত সাতক্ষীরার কিশোরী মুক্তামনির হাতের বাকি অংশে সোমবার সকালে চামড়া প্রতিস্থাপন করা হয়েছে।এতে করে তার পুরো হাতেই চামড়া লাগানো সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন।

অস্ত্রোপচার শেষে তিনি এ কথা জানান।

সামন্ত লাল বলেন, ‘গত ১০ অক্টোবর প্রথমবারের মতো মুক্তামনির অর্ধেক হাতে চামড়া লাগানো হয়েছিল। কথা ছিল দুই সপ্তাহ পর বাকি অংশে লাগানো হবে। কিন্তু, মুক্তামনির শারীরিক অবস্থা বিবেচনা করে আজ বাকি অংশে চামড়া লাগানো হয়েছে।’

তিনি জানান, সোমবার সকাল নয়টায় মুক্তামনিকে অস্ত্রোপচার রুমে প্রবেশ করানো হয়। অস্ত্রোপচার শেষ করে সকাল সাড়ে ১১টার দিকে তাকে আইসিইউতে পাঠানো হয়।

সামন্ত লাল আরও জানান, খুব ভালভাবেই মুক্তামনির হাতে চামড়া লাগানোর কাজ শেষ হয়েছে। আশা করছি, সবকিছু ঠিকঠাকভাবেই হবে।

মুক্তামনির বাবা ইব্রাহীম হোসেন জানান, অস্ত্রোপচার শেষে মুক্তাকে আইসিইউতে রাখা হয়েছে। পরে কেবিনে দেওয়া হবে।

তবে হাতটি অনেক মোটা দেখা যাওয়ায় কিছুটা চিন্তিত মুক্তামনির পরিবার। কবে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসবে তা নিয়ে ভাবনার শেষ নেই তাদের। তবে চিকিৎসকদের ওপর তাদের পূর্ণ আস্থা রয়েছে বলে জানান ইব্রাহীম হোসেন।

সাতক্ষীরার সদর উপজেলার কামারবায়সা গ্রামের মুদি দোকানি ইব্রাহীম হোসেনের মেয়ে মুক্তামনি (১২)। জন্মের দেড় বছর পর মুক্তামনির হাতে একটি ছোট মার্বেলের মতো গোটা দেখা দেয়। এরপর থেকে সেটি বাড়তে থাকে।

দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে নিয়েও তার কোনো চিকিৎসা হয়নি। তার আক্রান্ত ডান হাত ছোট আকারের গাছের গুড়ির রূপ নেয়। এতে পচন ধরে এবং পোকা জন্মে। দিন রাত চুলকানি ও যন্ত্রণায় অস্থির হয়ে থাকতো মুক্তামনি।

মুক্তামনির এ বিরল রোগ নিয়ে দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এরপরই তাকে ঢাকায় পাঠিয়ে সরকারি ব্যবস্থাপনায় চিকিৎসার উদ্যোগ নেয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এরপর গত ১১ জুলাই মুক্তামনিকে ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়।