‘প্রধানমন্ত্রীকে হিজাব পরিয়ে ছাড়বে হেফাজত’

ধর্মভিত্তিক সংগঠন হেফাজতে ইসলামকে সরকার প্রশ্রয় দিচ্ছে এমন অভিযোগ করে শিক্ষাবিদ অধ্যাপক অজয় রায় বলেছেন, ‘এই যদি আমাদের সরকারের অবস্থান হয়, তাহলে আমি বলব হেফাজতে উন্মাদনা-সাম্প্রদায়িকতা এমন একটা পর্যায়ে যাবে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আমি বলতে বাধ্য হচ্ছি আপনাকেও হিজাব পরিয়ে ছাড়বে। সেটার জন্য আপনি প্রস্তুত হন।’

শুক্রবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটি এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।

অজয় রায় বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্টের সামনে থেকে যে ভাস্কর্য উচ্ছেদ করা হলো তার যথাযথ ব্যাখ্যা প্রধান বিচারপতিকে দিতে হবে। তার কী দুর্বলতা রয়েছে তাও দেশবাসী জানতে চায়। তাকে মনে রাখতে হবে যে, আমরা সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে কাজ করি। ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করি।’
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য দেন নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির। তিনি বলেন, ‘হেফাজতের মতো উগ্র মৌলবাদী ও সন্ত্রাসী সংগঠনের প্রতি সরকার হঠাৎ কেন নমনীয় হয়েছে, এর ব্যাখ্যা সরকারকে দিতে হবে। আমরা সরকারের কাছে বহুবার দাবি জানিয়েছি, জামায়াত-হেফাজতের মতো সংগঠনের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ না করা হলে মুক্তিযুদ্ধের যাবতীয় অর্জন ধ্বংস হয়ে যাবে।’

শাহরিয়ার কবির বলেন, ‘সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর হেফাজতে ইসলামের ধৃষ্টতা বেড়েই চলেছে। সুপ্রিম কোর্টের ভাস্কর্য সর্ম্পকে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে হেফাজত উল্লসিত হয়েছে। এর পরই রাতের অন্ধকারে ভাস্কর্য অপসারণ ও পুনঃস্থাপন করা হয়েছে। এমন নাটকটি দেশবাসী দেখেছেন। এখন তারা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। একের পর এক ভাস্কর্য ভাঙার হুমকি দিয়ে আসছে।’

নির্মূল কমিটির সভাপতি বলেন, ‘২০১৩ সালের ৫ মে হেফাজতে ইসলাম প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারকে উৎখাতের জন্য রাজধানীতে বর্বর তাণ্ডব চালিয়েছিল। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীকেও তারা বলেছিলেন নাস্তিক। ওই সময় প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, জামায়াত-হেফাজতকে আর ছাড় দেয়া হবে না। তখন হেফাজতে নেতাদের বিরুদ্ধে হত্যা, অগ্নিসংযোগ ও সন্ত্রাসের অভিযোগে শতাধিক মামলা হয়েছে। অথচ এরপর হেফাজতের মতো উগ্র মৌলবাদী ও সন্ত্রাসী সংগঠনের প্রতি সরকার হঠাৎ কেন নমনীয় হয়েছে, এর ব্যাখ্যাও সরকারকে দিতে হবে।’

সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন বিচারপতি শামসুল হুদা, বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, ভাস্কর ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণী, শিল্পী হাশেম খান, স্থপতি রবিউল হুসাইন, আলমগীর সাত্তার বীরপ্রতীক প্রমুখ।