প্রস্রাবের রঙ গাঢ় হলুদ মানেই বিপদের সংকেত!

প্রস্রাবের রঙ হলুদ হওয়া বেশ কিছু রোগের সংকেত দেয়। আমাদের শরীরে কিছু সমস্যা দেখা দিলে তার প্রথম আভাস আমরা প্রস্রাবের রঙ দেখেই বুঝতে পেরে থাকি। হলুদ প্রস্রাব হলে একদম প্রথমে আমাদের প্রচুর পরিমানে পানি খাওয়া উচিত। তার পরেও যদি হলুদ প্রস্রাব হয় তাহলে ডাক্তার দেখানো অতি আবশ্যক। কিন্তু অনেক সময় খুব কড়া ওষুধ খেলে তার ফলে আমাদের প্রস্রাবের রঙ হলুদ হয়ে যায়। তাই সব সময়ে প্রস্রাবের রঙ হলুদ হওয়া মনে কিছু সাংঘাতিক হয়েছে শরীরে এমন কিন্তু না।

ডিহাইড্রেশন: খুবই কম পরিমানের পানি খাওয়ার ফলে আমাদের প্রস্রাবের রং হলুদ হতে পারে। ডিহাইড্রেশন হলে আমাদের উচিত প্রচুর পরিমানে পানি খাওয়া। অনেক কারণে ডিহাইড্রেশন হতে পারে যেমন খুব বেশি বমি হলে, খুব চিন্তা বা ক্লান্তি অনুভব করলে, খুব ঘাম হলে ইত্যাদি। আমাদের পানি খেয়ে তারপর শরীরে পানির পরিমান বাড়ানো অতন্ত প্রয়োজনীয়। কারণ আমাদের শরীরে পানির পরিমান কমে গেলে আমাদের প্রস্রাব হলুদ হয়ে যায়।

হেপাটাইটিস: হেপাটাইটিসের ফলেও আমাদের প্রস্রাবের রং হলুদ হতে পারে। সাধারণত লিভার ফুলে গেলে হেপাটাইটিস হয়ে থাকে। হেপাটাইটিস ভাইরাল ইনফেকশনের থেকেও হতে পারে। অনেক সময় খুব বেশি পরিমানে মদ খেলে সেইটা হেপাটাইটিস রোগে পরিনিত হতে পারে।

আবার অনেক সময় দেখা গিয়েছে এমন কোনো ওষুধ খেলে যার মধ্যে বিভিন্ন হলুদ প্রস্রাব করানোর কেমিক‍্যাল আছে, এর ফলেও হেপাটাইটিস হয়। তাই হেপাটাইটিস রোগ ধরা পড়লে খুব তাড়াতাড়ি উচিত ডাক্তার দেখানো এবং সঠিক চিকিৎসা করা।

জন্ডিস: জন্ডিসের রোগ আমরা প্রথমেই বুঝতে পারি হলুদ প্রস্রাব দেখে। তারপর মলের রঙও গাঢ় হলুদ হয়ে থাকে। তীব্র শরীর খারাপের সাথে আমাদের গায়ের রঙ ও হলুদ হতে থাকে। জন্ডিস হয়ে থাকে খুব বেশি পরিমানের বিলুরুবিন যখন সৃষ্টি হয়ে যায় এবং আমাদের লিভার সেই বিলুরুবিন প্রস্রাবের সাহায্যে বাইরে বের করে দেয়। প্রস্রাব হলুদ হয়ে যাওয়া জন্ডিসের প্রথম লক্ষন। তাই জন্ডিস সঙ্কেত দেখলেই আমাদের উচিত ডাক্তার দেখানো।

সিরোসিস লিভার: লিভারের সমস্যা দেখা দিলে তা প্রস্রাবের রঙের উপর প্রভাব ফেলে। আমাদের লিভার আমাদের শরীরের একটা জরুরি অংশ। তাই হলুদ প্রস্রাব যখন লিভারের সমস্যার যখন দেখা দেয় তখন আমাদের উচিত প্রথমেই ডাক্তার দেখানো এবং নির্দিষ্ট পরীক্ষা করা। বহুদিন ধরে যদি আমাদের লিভারে অসুবিধা দেখা দেয় তাহলে প্রস্রাবের সাথে সাথে আমাদের পায়ের দিকের চামড়ার রঙ হলুদ হতে দেখা দেয়।

কিডনি স্টোন: প্রস্রাবের হলুদ হওয়া কিডনি স্টোনেরও সংকেত দেয়। তাই যদি প্রস্রাবের সময় কষ্ট অনুভব করেন আর প্রস্রাবও হলুদ হয় তাহলে খুবই জরুরি ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া। এই সবক্ষেত্রে দেরি করা একদমই উচিত না।

প্রস্রাবের রঙ গাঢ় হলুদ হলে আমাদের ভেবে দেখতে হবে যে আমরা বীট রুট জাতীয় কোনো খাবার খেয়েছি কিনা। যদি খেয়ে থাকি তাহলে শরীর নিয়ে চিন্তা করার কোনো কারণই নেই। যদি এমন কোনো ওষুধও খাই যার মধ্যে হলুদ প্রস্রাব হওয়ার কেমিক্যাল থাকে তাহলে উচিত আমাদের খুব পানি খাওয়া। খুব পানি খাওয়ার ফলে অনেক সময় ঠিক হয়ে যায় প্রস্রাবের রঙ। অনেক পানি খাওয়ার পরেও যদি হলুদ প্রস্রাব হয় তাহলে অবশ্যই ডাক্তার দেখানো অতি জরুরি।