বঙ্গবন্ধুর নেপথ্য খুনিদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার নেপথ্য ষড়যন্ত্রকারীদের দ্রুত চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনা সম্ভব হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন আইনপ্রণেতারা।
তারা বলেছেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ড যারা ঘটিয়েছিল, যারা পাশে ছিল এবং হত্যার ক্ষেত্র প্রস্তুত করেছিল, সবাই সমদোষী। হত্যার ষড়যন্ত্রকারীরাও নেপথ্য খুনি। তাই তাদের চিহ্নিত করে বিচারের মাধ্যমে শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
বৃহস্পতিবার (১১ আগস্ট) পার্লামেন্ট মেম্বারস ক্লাব মিলনায়তনে বাংলাদেশ পার্লামেন্ট জার্নালিস্টস অ্যাসোসিয়েশন (বিপিজেএ) আয়োজিত আলোচনা সভায় এ আহ্বান জানান তারা।
জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সভায় সভাপতিত্ব করেন বিপিজেএর আহ্বায়ক নিখিল ভদ্র। আলোচনায় অংশ নেন জাতীয় সংসদের সাবেক চিফ হুইপ উপাধ্যক্ষ আব্দুস শহীদ, হুইপ মাহবুব আরা গিনি, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু, বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি র আ ম ওবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী, বিরোধী দলীয় সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ রওশন আরা মান্নান, বিপিজেএ’র সদস্য সচিব কাজী সোহাগ, সদস্য রফিকুল ইসলাম সবুজ, মিজান রহমান ও শাহজাহান মোল্লা।
সভায় বঙ্গবন্ধুকে বিশ্বনেতা উল্লেখ করে উপাধ্যক্ষ আব্দুস শহীদ বলেন, অনেকে বলেন বঙ্গবন্ধু হত্যার নেপথ্যে কারা? নেপথ্যে কারা সেটি তো পঞ্চম সংশোধনী দেখলেই বোঝা যায়। জিয়াউর রহমান কেন সেদিন পঞ্চম সংশোধনী করলেন? নিজেকে বাঁচানোর জন্যই সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনী এনেছিলেন। এখন তার উত্তরসূরিরা মাঝে মাঝে আন্দোলনের হুমকি দেয়। কিন্ত তাদের ডাকে মানুষ সাড়া দেয় না। বঙ্গবন্ধুকন্যার নেতৃত্বে দেশে শোষিতের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হবে।
হুইপ মাহবুব আরা গিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর মতো একজন মহাননেতার জন্ম হয়েছিল বলেই বাংলাদেশ পেয়েছি। অথচ তাকে স্বপরিবারে হত্যা করা হয়েছে। এমনকি বঙ্গমাতা, ছোট্ট রাসেলের কোনো দোষ না থাকলেও তাদের বাঁচতে দেওয়া হয়নি। ২০০৯ সালের নভেম্বরে বঙ্গবন্ধু হত্যার রায় ঘোষিত হয়েছে। সাজাপ্রাপ্ত ১২ খুনির মধ্যে কয়েকজনের রায় কার্যকর হয়েছে। অন্যদেরও শাস্তি কার্যকর হবে। এমনকি নেপথ্যের খুনিরাও চিহ্নিত হবে।
অ্যাডভোকেট শামসুল হক টুকু বলেন, বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হলে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ হতো না। আমাদের অর্থনৈতিক মুক্তি আসতো না। জাতির পিতা যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। সেই মুহূর্তে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করা হলো। জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করা হলো। এ হত্যাকাণ্ডের লক্ষ্য ছিলো বাঙালি জাতির মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধ্বংস করা। কিন্তু ষড়যন্ত্রকারীরা ব্যর্থ হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় মানুষ সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
র আ ম উবায়দুল মুকতাদির চৌধুরী বলেন, যে লক্ষ্য-উদ্দেশ্য নিয়ে আমরা দেশ স্বাধীন করেছিলাম তা প্রতিদিন ক্ষতবিক্ষত হচ্ছে। আমি খুবই মর্মাহত যখন দেখি বঙ্গবন্ধুর মুরাল বুড়িগঙ্গায় ফেলে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প ছড়ানো হয়। আমরা কতিপয় দুর্বৃত্তের হাতে দেশ ছেড়ে দিতে পারি না। দেশকে এগিয়ে নিতে ধর্মনিরপেক্ষ ও অসাম্প্রদায়িক চেতনার বিকাশ ঘটাতে হবে।
বিরোধীদলীয় সংসদ সদস্য রওশন আরা মান্নান বলেন, আওয়ামী লেীগের নেতৃত্বে দেশ স্বাধীন হয়েছিল; এটা অস্বীকার করার উপায় নেই। বঙ্গবন্ধু মাত্র ৫৫ বছর আমাদের মাঝে ছিলেন। কিন্তু তার ত্যাগ ছিলো হাজার বছরের সমা। ষড়যন্ত্র করে জাতির পিতাকে ইতিহাস থেকে বাদ দেওয়ার অপচেষ্টা হয়েছে। কিন্তু সেই অপচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। দেশের জনগণ এখন সঠিক ইতিহাস জানছে।
সভার শুরুতে বঙ্গবন্ধুসহ সব শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। আলোচনার সভার আগে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের ওপর প্রয়াত সাংবাদিক আব্দুল গফ্ফার চৌধুরী নির্মিত ‘পলাশী থেকে ধানমণ্ডি’ চলচ্চিত্রটি প্রদর্শিত হয়
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন