বরিশাল নির্বাচন অফিসে প্রমাণপত্র দিয়েও সংশোধন হলোনা জাতীয় পরিচয়পত্র

বরিশাল আঞ্চলিক নির্বাচন অফিসে চাহিদার বিপরীতে সকল প্রমাণপত্র দিয়েও জাতীয় পরিচয়পত্রে মায়ের নাম সংশোধন করতে পারেননি এক নারী।

জানাযায়, ভোলার বোরহানউদ্দিন ৪ নং কাচিয়া ইউনিয়নের চকঢোষ গ্রামের আজিমুন তাহের দীপ্তি নামের এক ব্যক্তি তার জাতীয় পরিচয়পত্র মায়ের মূল নামে ভুল থাকায় সংশোধনের জন্য বোরহানউদ্দিন উপজেলা নির্বাচন অফিসের মাধ্যমে আবেদন করেন। যার নং ০৯০৯২২২৭৬৪১৪৯। সেখানে উল্লেখ করা হয়, তার মায়ের প্রকৃত নাম ফজিলাতুন নেছা, কিন্তু জাতীয় পরিচয়পত্রে এসেছে মোসাঃ লায়লা। ৬ মাস আগে করা আবেদনটি পর্যালোচনার ও সংশোধনের জন্য সর্বশেষ বরিশাল আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দিনের বরাবরে পাঠানো হয়। দীর্ঘ ৩ মাস ধরে তিনি একটার পর একটা কাগজ জমা দিতে বলেন।

সেই অনুযায়ী সর্বশেষ আজিমুন তাহের স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান হতে নাম সংশোধনে প্রত্যয়ন পত্র, জন্ম নিবন্ধন, ৭ বোন ও ৪ ভাইয়ের জাতীয় পরিচয়পত্র, দুই মায়ের আলাদা, আলাদা ওয়ারিশনামা সনদ জমা দেন। তিনি বলেন, আমার আপন মা মারাগেছেন ২২ বছর আগে, এরপর বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করেন।আমার বাবা আব্দুর রব জীবিত রয়েছেন। তার বয়স এখন প্রায় ৮০ বছর। বাবার জাতীয় পরিচয়পত্রে দ্বিতীয় স্ত্রীর নাম উল্লেখ রয়েছে। আজিমুন তাহেরের প্রথম মাতা কোন সম্পদের ওয়ারিশও নন। তিনি কোনো চাকরিও করিনা।

এ বিষয়ে বোরহানউদ্দিন উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. শহিদুল্লাহ্ কয়েকবার তদন্ত করে সত্যতা উল্লেখপূর্ব দুইটি রিপোর্ট বরিশাল আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার বরাবরে প্রেরণ করেন।তিনি আরো বলেন, জাতীয় পরিচয়পত্রে মায়ের প্রকৃত নাম ফিরে পেতে কেন আমাকে এতো হয়রানি হতে হবে। প্রয়োজনে বিষয়টি উচ্চ পর্যায় হতে সরেজমিন তদন্ত করা হোক।

এ প্রতিনিধি ৩ অক্টোবর দুপুর ১ টায় বরিশাল আঞ্চলিক নির্বাচন অফিসের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দিনের সাথে আলাপ করতে গেলে তিনি সাংবাদিক পরিচয় শুনে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। তাঁর মতে ‘চাহিদার বিপরীতে কাগজপত্র দিলেই হবেনা, সিদ্ধান্ত নেয়ার এখতিয়ার তার! এক পর্যায়ে বলেন, বেশি কথা বললে এনআইডি বাতিল করে দেবেন।’

একইদিন কতিপয় দর্শনার্থী এই নির্বাচন কর্মকর্তার সাথে সাক্ষাত করতে আসলে তাদেরকেও কয়েক ঘন্টা বসিয়ে রাখেন, এসময় তারাও নির্বাচন কর্মকর্তা মোঃ আলাউদ্দিনের ওপর অসন্তোষ প্রকাশ করেন।

সারাদেশে জাতীয় পরিচয় পত্রে ছোটখাটো অসংখ্য ভুল রয়েছে। এ ভুল অনেক ক্ষেত্রে নিজে ভোটার নিজে করেননি, দায়িত্বপ্রাপ্ত নিবন্ধন কর্মীর অদক্ষতার কারণে ভুলগুলো পরিচয়পত্রে এসেছে। অথচ, ভুল সংশোধন করতে গিয়ে প্রতিনিয়ত সংশ্লিষ্ট নির্বাচন অফিসে ভোটারদের হয়রানি ও দুর্নীতির শিকার হতে হচ্ছে। দিতে হচ্ছে মোটা অংকের উৎকোচ। তেমনি একটি হয়রানি অনিয়মের জায়গায় পরিণত হয়েছে বরিশাল আঞ্চলিক নির্বাচন অফিস এই কর্মকর্তার দপ্তরটি।

এবিষয়ে উর্ধতন কর্তৃপক্ষ নজর দেয়া জরুরি বলে মনে করছেন ভুক্তভোগি জনগণ।