‘বাংলাদেশেও গাড়ি হামলার পরিকল্পনা ছিল জঙ্গিদের’

ইউরোপের বিভিন্ন জনসমাগমস্থলে বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালিয়ে অনেককে হত্যা করেছে জঙ্গিরা। একইভাবে বাংলাদেশেও জঙ্গিরা গাড়ি হামলার পরিকল্পনা ও প্রশিক্ষণ নিয়েছিল। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতায় তারা হামলা চালাতে পারেনি।

শনিবার ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম(সিটিটিসি) ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম।

এর আগে শুক্রবার রাতে রাজধানীর খিলক্ষেত থেকে নব্য জেএমবির দুজনকে গ্রেফতার করে সিটিটিসি ইউনিট। গ্রেফতারকৃতরা হলেন- নাঈম আহমেদ ওরফে আনাস ওরফে আবু হমজা ওরফে আরিশা কুনিয়া এবং আনোয়ার হোসেন।

সংবাদ সম্মেলনে সিটিটিসি প্রধান বলেন, আনোয়ার সাভারের হেমায়েতপুরের একটি মোটরগ্যারেজে কাজ করতো। ২০১৫ সালে সে কথিত মাস্টারের মাধ্যমে নব্য জেএমবির দাওয়াত পায়। তার সঙ্গে নব্য জেএমবির সারোয়ার জাহান মানিক, রিপন, নোমা, আল-বানী ও ডনদের যোগাযোগ ছিল। তারা থ্রিমায় যোগাযোগ করতো বলে পুলিশের কাছে তথ্য-প্রমাণ রয়েছে। সেও জিজ্ঞাসাবাদে একই কথা জানিয়েছে। আনোয়ার নব্য জেএমবির শুরা সদস্যদের পরামর্শে গাড়ি হামলার জন্য নিজের গ্যারেজে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছিল।

তিনি আরও বলেন, হলি আর্টিসানের হামলার আগে ওই গাড়ি হামলার জন্য ড্রাইভিং এবং গাড়িবোমা তৈরির প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। তবে আর্টিসানের হামলার পর পুলিশ যে অভিযানগুলো চালিয়েছে এতে তারা দুর্বল হয়ে পড়ে এবং তাদের পক্ষে হামলা চালানো সম্ভব হয়নি। আনোয়ার নব্য জেএমবির সাভার অঞ্চলের প্রধান আশ্রয়দাতা ছিল। গ্যারেজে কাজ করার পাশাপাশি মাঝে মাঝে সে নব্য জেএমবির সাংগঠনিক কাজ এবং অর্থের জোগানও দিত।

সংবাদ সংস্থা বিবিসি’র তথ্য মতে, গত চার বছরে ইউরোপের ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য ও সুইডেনে আটটি গাড়ি হামলার ঘটনা ঘটে। এসব হামলায় ১২৯ জন নিহত ও আহত হন প্রায় ১২৭ জন।

সংবাদ সম্মেলনে গ্রেফতার নাঈমের বিষয়ে মনিরুল ইসলাম বলেন, নাঈম ও বাশারুজ্জামান চকলেট (পুলিশের অভিযানে নিহত) একটি বেসরকারি আইটি প্রতিষ্ঠানে কাজ করতো। তারা দু’জন ২০১৫ সালে একসঙ্গে নব্য জেএমবিতে যোগ দেয়।

সম্প্রতি মিরপুরের দারুসসালামে আত্মঘাতী বোমা বিস্ফোরণে নিহত ‘জঙ্গি’ আব্দুল্লাহর বিষয়ে সিটিটিসির কাছে কী তথ্য রয়েছে- জানতে চাইলে তিনি বলেন, র্যা বের পক্ষ থেকে গত তিনদিনে আব্দুল্লাহর বিষয়ে যথেষ্ট তথ্য দেয়া হয়েছে। এখন আমাদের কাছে থাকা তথ্যগুলো বলা সমীচীন হবে না।

গ্রেফতারের সময় আসামিদের কাছ থেকে বোমা তৈরির ৩০টি ডেটোনেটর এবং উগ্রপন্থী মতাদর্শের কিছু বই উদ্ধার করা হয় বলে সংবাদ সম্মেলনে জানান তিনি।