বাংলাদেশ থেকে অস্থায়ী ভিত্তিতে কৃষি শ্রমিক নিতে গ্রিসের আগ্রহ প্রকাশ

গ্রিসের অভিবাসন বিষয়ক মন্ত্রী নোটিস মিতারাকি -এর সাথে রাষ্ট্রদূত আসুদ আহ্‌মেদের সাক্ষাতকালে অভিবাসন বিষয়ক মন্ত্রী মিতারাকি তার দেশের বৈধ ও নিরাপদ অভিবাসনকে উৎসাহিতকরণে নীতিগত অবস্থান তুলে ধরার পাশাপাশি বাংলাদেশ থেকে অস্থায়ী ভিত্তিতে কৃষি শ্রমিক নিয়োগের বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেন।

গতকাল গ্রিসে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আসুদ আহ্‌মেদ গ্রিসের অভিবাসন বিষয়ক মন্ত্রী নোটিস মিতারাকি -এর সাথে এথেন্সে তার দপ্তরে সাক্ষাৎ করেন। সাক্ষাতকালে তারা অভিবাসন এবং গ্রিসে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের বিভিন্ন স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করেন।

এ সময় গ্রিসের কৃষিক্ষেত্রে কর্মরত বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশি নাগরিকদের নিয়মিতকরণের বিষয়টি বিবেচনা করার জন্য রাষ্ট্রদূত অভিবাসন বিষয়ক মন্ত্রীকে অনুরোধ জানান। তিনি বাংলাদেশের কৃষি শ্রমিকদেরকে রেসিডেন্স পারমিট প্রদান করে অথবা কৃষি শ্রমিক হিসেবে নিবন্ধিত করার মাধ্যমে নিয়মিত করার প্রস্তাব দেন। এ সময় তিনি আরো বলেন, আইনগতভাবে নিয়মিত হলে এই বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশি কৃষিশ্রমিক যারা তাদের কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে গ্রিসের অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখছে তারা স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা, আবাসন ও আইনগত সুবিধাসহ বৈধ নাগরিকদের জন্য প্রযোজ্য সকল সুযোগ-সুবিধা পাবেন।

অভিবাসন বিষয়ক মন্ত্রী জানান, এই বছর গ্রিক সরকার ১৫ হাজার -এর বেশি অনিয়মিতভাবে বসবাসকারী কৃষি শ্রমিকদের ওয়ার্ক পারমিট প্রদান করবে। তবে এ সময় তিনি অনিয়মিতভাবে আসা অভিবাসীদের সকল আইনি প্রক্রিয়া শেষে নিজ নিজ দেশে সসম্মানে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে গ্রিক সরকারের কঠোর অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেন।

এ সময় তিনি বিপদসংকুল পথে অনিয়মিত অভিবাসন এবং মানব পাচারের মতো অপরাধ প্রতিহত করার লক্ষ্যেই গ্রিক সরকারের এই শক্ত অবস্থানের বিষয়টি তুলে ধরেন। বাংলাদেশ হতে কৃষি শ্রমিক নিয়োগের বিষয়ে একটি আইনগত কাঠামো বা চুক্তি সম্পাদনের বিষয়ে রাষ্ট্রদূত আসুদ আহ্‌মেদের প্রস্তাব -এর প্রেক্ষিতে অভিবাসন বিষয়ক মন্ত্রী তাঁর সরকারের এই ধরনের প্রস্তাব গ্রহণে আন্তরিকতা এবং আগ্রহের বিষয়টি ব্যক্ত করেন। এ সময় তিনি জানান, গ্রিস বৈধভাবে কৃষি শ্রমিকদের নিয়োগে সহায়তা করতে প্রস্তুত; এক্ষেত্রে বাংলাদেশের কৃষি শ্রমিকদের দুই বছর মেয়াদী কৃষি ভিসা প্রদান করার যৌক্তিক হবে বলে তিনি মত প্রকাশ করেন।

প্রবাসী বাংলাদেশিদের অবসরকালীন পেনশনের বিষয়টিও অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নিষ্পন্ন করবেন বলে তিনি রাষ্ট্রদূতকে আশ্বস্ত করেন। উল্লেখ্য গ্রিস প্রবাসী বাংলাদেশিদের বাংলাদেশে অবসর কাল যাপনের ক্ষেত্রে পেনশন প্রদানের বিষয়টি গ্রিস এবং বাংলাদেশ সরকারের মধ্যে আলোচনাধীন রয়েছে। এছাড়া, বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত করোনা মহামারি কালীন সময়ে বাংলাদেশে আটকে পড়া প্রবাসী বাংলাদেশিদের গ্রিসে ফিরে আসতে সহায়তা করার জন্য এবং পর্যায়ক্রমে প্রবাসীদের রেসিডেন্স এবং ওয়ার্ক পারমিট স্বয়ংক্রিয়ভাবে নবায়নের ব্যবস্থা করার জন্য অভিবাসন বিষয়ক মন্ত্রীকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।

সাক্ষাতকালে তারা প্রবাসীদের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড, কৃষি শ্রমিকদের জন্য টেকসই আবাসন ব্যবস্থা এবং যৌথভাবে গ্রিসের স্বাধীনতার দ্বিশতবার্ষিকী ও বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদ্‌যাপন বিষয়েও আলোচনা করেন।
তথ্যবিবরণী-পিআইডি