বাগেরহাটের শরণখোলায় আদম দম্পত্তির খপ্পরে পড়ে আসাদ নামের এক যুবক সর্বশান্ত

বাগেরহাটের শরণখোলায় আদম দম্পত্তির খপ্পরে পড়ে আসাদ হাওলাদার নামের এক যুবক সর্বশান্ত হয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে। পরের কাছ থেকে ধার দেনা করে পাঁচ লাখ দশ হাজার টাকা দিয়ে দুবাই গিয়ে অর্ধাহারে ও অনাহারে থেকে ২মাস ২৬ দিন পর দেশে ফিরে আসে।

এখন পাওনাদারের চাপে অসহায় হয়ে পড়েছেন। শনিবার, ৪ মার্চ সকাল ১১ টার দিকে শরণখোলা উপজেলা প্রেসক্লাবে তিনি সংবাদ সম্মেলনে বলেন, উপজেলার পশ্চিম রাজাপুর গ্রামের বাসিন্দা আঃ আজিজ হাওলাদারের পুত্র মোঃ জাকির হাওলাদার ও তার স্ত্রী পাখি বেগমের সাথে আমার ছোট মুদি দোকানে বসে পরিচয় হয়।

তারা জানায় আমরা দুবাইতে ৮০/৯০ হাজার টাকা বেতনে লোক পাঠাই তুমি যদি চাও তাহলে যেতে পারো। তাই তাদের কথা শুনে আত্মীয় স্বজনের সাথে পরামর্শ ক্রমে বিদেশ যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেই। পরে ধার দেনা করে ইসলামী ব্যাংক শরণখোলার রায়েন্দা বাজার শাখা ও আমড়াগাছিয়া এজেন্ট ব্যাংকিং শাখা থেকে ৩ বারে ৫ লাখ ১০ হাজার টাকা তাকে পরিশোধ করি। পরে আমাকে বিমানের একটি ভুয়া টিকেট ধরিয়ে দিয়ে ঢাকা নিয়ে যায়। সেখানে ১০ দিন থাকার পর আবার বাড়ি ফিরে আসি। পরে ২০২২ সালের ২৩ আগষ্ট রাত ১১টায় ঢাকা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে দুবাই বিমান বন্দরে চলে যাই। সেখান থেকে জাকিরের শ্যালক মঞ্জুর মাধ্যমে একটি বাসার উঠি। পরে জাকিরের শ্যালক মঞ্জু আমার ওয়ার্ক পারমিট করার জন্য পাসপোর্ট নিয়ে নেয়। বেশ কয়েক দিন কেটে গেলেও কোন কাজের অনুমতি পাইনি। পরে জানতে পারি আমাকে প্রতারণা করে জাকির টুরিষ্ট ভিসায় দুবাই নিয়েছে।

ওয়ার্ক পারমিট না থাকায় কোথাও কোনো কাজে যোগদান করতে পারি নাই। পরে কাজের জন্য জাকিরকে চাপ দিলে। জাকির চালাকি করে তার শ্যালক মঞ্জু দালালের মাধ্যমে বাসা থেকে প্রায় ১০০০ কিলোমিটার দূরে মরুভূমির মধ্যে ফেলে আসে। সেখানে প্রায় ৪দিন পর অর্ধাহারে ও অনাহারে থেকে অন্য এক লোকের মাধ্যমে ওই বাসায় এসে পৌছাই। ওই বাসায় ২ মাস ২৬ দিন থাকার পর বাড়ি থেকে ৪০ হাজার টাকা নিয়ে পূণরায় টিকেটে কেটে বাংলাদেশে চলে আসি।
আসাদ আরো জানায় ২ মাস ২৬ দিন দুবাই থাকা অবস্থায় কোনো দিন পেট পুরে ভাত খাইনি। কখনও দিনে একটা রুটি, কখনও না খেয়ে কেটেছে তার। বর্তমানে পাওনাদাররা টাকার জন্য চাপ প্রয়োগ করলেও তা দিতে পারছি না। পরে জাকির ও তার স্ত্রী মঞ্জু বেগমের কাছে বিদেশে যাওয়ার টাকা ফেরত চাইলে তারা আমাকে খুন জখমের হুমকি দেয়।

এ ঘটনায় জাকির হাওলাদার, পাখি বেগম, জাকিরের ভাই আমির হোসেন, আনোয়ার হোসেন, মঞ্জু হাওলাদারের নামে বাগোরহাট চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা দায়ের করলে তার তদন্ত শরণখোলা থানা পুলিশের উপর ন্যাস্ত করে। কিন্তু গত ৪ মাসেও কোন তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল না করায় মামলাটি নিস্পত্তি হচ্ছে না। দালালরা দুর্দান্ত ও বেপরোয়া প্রকৃতির হওয়ায় তাদের ভয়ে আমি নিরাপত্তা হীনতায় ভুগছি। তাই প্রশাসনের কাছে সুষ্ঠ বিচার দাবি করি।

এ ব্যাপারে জাকির হোসেন বিদেশে থাকায় তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি, তবে তার স্ত্রী মঞ্জু বেগমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে বলেন আমার স্বামী এ ব্যাপারে বিস্তারিত বলতে পারবেন।