বিমান দুর্ঘটনার তদন্তে কোন বিষয়গুলো দেখা হয়?

নেপালে ইউএস বাংলার বিমান দুর্ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদনের বিষয়টি নিয়ে গত কয়েকদিন আবারো আলোচনা শুরু হয়েছে।

দুর্ঘটনার জন্যে বাংলাদেশের পাইলটের আচরণকে দায়ী করে নেপালের গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদকে কেন্দ্র করে প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে বাংলাদেশে।

নেপালের কাঠমান্ডু পোস্ট পত্রিকা এবং আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা এএফপি দাবি করেছে বিমান দুর্ঘটনা তদন্তের একটি খসড়া রিপোর্ট তাদের হাতে এসেছে।

যদিও নেপালের ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বাংলাদেশের ইউএস বাংলা বিমানটি কেন বিধ্বস্ত হয়েছিল সেটি বলার সময় এখন আসেনি বলে জানিয়েছেন তদন্তকারীরা।

কিন্তু একটি বিমান দুর্ঘটনার পর তদন্তের সময় তদন্তকারীরা কোন কোন বিষয়গুলোকে বিবেচনায় নেন?

বিবিসি’র এমন প্রশ্নের জবাবে একটি বেসরকারি বিমান চালনা অ্যাকাডেমির প্রধান নির্বাহী নজরুল ইসলাম বলেন, “কোন পরিস্থিতিতে দুর্ঘটনা হলো। কি কারণে হলো? হতাহতের সংখ্যা হতো? এগুলো প্রাথমিক ভাবে দেখা হয়”।

“প্রধান উদ্দেশ্য থাকে কারণ কি সেটি বের করা । আর কাউকে দোষারোপ নয় বরং পরে আর যাতে এটা না হয় তার সুপারিশ করতেই তদন্ত করা হয়। পরে ব্ল্যাক বক্স থেকে নতুন কোন তথ্য উপাত্ত পেলে সেটাও তদন্তে আনা হয়।”

২০১৫ সালে ১৪৪ জন যাত্রী ও ৬ জন ক্রু সহ দুর্ঘটনায় পড়ে সব যাত্রী নিহত হয়। পরে তদন্তে দেখা যায় পাইলট আত্মহত্যা প্রবণ ছিলেন। পাইলটের মানসিকতা কি কি দেখে নির্ধারণ করা হয়?

জবাবে মিস্টার ইসলাম বলেন এটা আগেই দেখা হয়। পরিস্থিতি বিবেচনার সময় দুর্ঘটনার কোনো কারণ খুঁজে না পাওয়া গেলে অনেক সময় সন্দেহ করা হয় যে আত্মহত্যা বা এ ধরনের কিছু হতে পারে।

“তারপরেও পাইলটের মেডিকেল রিপোর্ট বা অতীতের ইতিহাস নেয়া হয়। সেখানে তেমন কিছু পাওয়া গেলে হয়তো এমন সিদ্ধান্তে আসা যেতে পারে। পারিবারিক বা এ ধরনের সমস্যা ছিলো কি-না সেটা তথ্যানুসন্ধানে বের করা হয়”।

বিশ্বে বিভিন্ন সময় বিমান দুর্ঘটনার ঘটনার পর তদন্ত নিয়ে অনেক কথা হয়। কিন্তু তদন্ত রিপোর্ট কি সর্বসাধারণের জন্য প্রকাশ করা হয় বা এর সুযোগ আছে কি ?

এমন প্রশ্নের জবাবে নজরুল ইসলাম বলেন, “এমনটা আমার নজরে পড়েনি। পুরোটা প্রকাশ করা হয়না। হলেও অনেক পরে হয়। প্রাথমিক ভাবে কি করা উচিত বা কি করা উচিত না সেটা বলা হয়। মূলত মানুষের ভুল নাকি অন্য কারণে হয়েছে সেটাই বলা হয়”।

তদন্ত প্রতিবেদন কতটুকু প্রকাশ করা হবে সেটিই বা কিসের ভিত্তিতে করা হয় জানতে চাইলে তিনি বলেন এটার একটা নর্মস আছে। “আন্তর্জাতিক সংস্থার মাধ্যমে তদন্ত হয় এর প্রক্রিয়াই এমন। সেখানেই ঠিক করা হয় কতটুকু প্রকাশ করা হবে আর কতটুকু প্রকাশের প্রয়োজন নেই”।

তিনি বলেন নিরাপত্তার বিষয়টিকেই গুরুত্ব দেয়া হয় আর সেটিই অন্যদের জানানোর চেষ্টা করা হয় যে এমন পরিস্থিতি হলে কি করা যেতে পারে।