নিজেদের কমিটি দিয়ে রাখাইনে তদন্তের ঘোষণা মিয়ানমারের

রাখাইনে রোহিঙ্গা গণহত্যার জন্য মিয়ানমার সেনাবাহিনীকে দায়ী এবং দেশটির কার্যত সরকার প্রধান অং সাং সুচিকে ব্যর্থ হিসেবে জাতিসংঘের প্রতিবেদন প্রকাশের পর তদন্ত কাজ শুরু করছে মিয়ানমার সরকারের গঠন করা আন্তর্জাতিক তদন্ত কমিটি।

রাখাইনে রোহিঙ্গাদের নির্যাতনের তদন্ত করতে গত মাসে চার সদস্যের আন্তর্জাতিক তদন্ত কমিটি গঠন করে মিয়ানমার সরকার। আজ বুধবার থেকে তদন্ত শুরুর কথা জানিয়েছে এই কমিটি।

ফিলিপাইনের কূটনীতিক ফিলিপিন্সের কূটনীতিক রোজারিও মানলোর নেতৃত্বে কাজ করবে এই কমিটি। মানলো আজ বুধবার মিয়ানমারের রাজধানী নেইপিদোতে অন্য তিন সদস্যের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। সেখানে তদন্তের কাজ কীভাবে করা হবে এ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবেন তারা। খবর মিয়ানমার টাইমসের।

চার সদস্যের ওই আন্তর্জাতিক তদন্ত কমিটিতে রয়েছেন, ফিলিপাইনের কূটনীতিক রোজারিও মানলো ও জাপানের কূটনীতিক কেঞ্জো ওশিমা। এছাড়া মিয়ানমারের দুই আইনজীবীও এই কমিটিতে রয়েছেন। এর মধ্যে একজন অং তুন থেট, যিনি গত বছর রোহিঙ্গা নির্যাতনের বিষয়ে স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চির মুখপাত্র হিসেবে কাজ করেছেন; তবে তিনি রোহিঙ্গাদের জাতিগত নিধনের অভিযোগ অস্বীকার করেছিলেন। অন্যজন মিয়ানমারের সাংবিধানিক ট্রাইব্যুনালের প্রাক্তন চেয়ারম্যান ইউ মাই থিয়েন।

মিয়ানমার সরকারের গঠন করা এই আন্তর্জাতিক তদন্ত কমিটি এমন সময়ে রাখাইনে তদন্ত কাজ শুরু করছে যখন জাতিসংঘ রাখাইনে গণহত্যা চালানো হয়েছে বলে সরাসরি অভিযোগ করেছে। এছাড়া অং সাং সুচিকে ব্যর্থ হিসেবে উল্লেখ করেছে জাতিসংঘ।

সোমবার প্রকাশিত হওয়া জাতিসংঘের ওই তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গণহত্যা এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে দেশটির শীর্ষ ছয়জন সামরিক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্ত এবং বিচার হওয়া দরকার। এই প্রতিবেদনের মাধ্যমে জাতিসংঘের দিক থেকে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে কঠোর ভাষায় নিন্দা জ্ঞাপন করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গণহত্যার অভিযোগে মিয়ানমারের শীর্ষ ছয় সামরিক কর্মকর্তার বিচার হওয়া প্রয়োজন। রোহিঙ্গাদের ওপর সহিংসতা থামানোর জন্য হস্তক্ষেপ করতে ব্যর্থ হওয়ায় মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চি’র কড়া সমালোচনাও করা হয়েছে এ প্রতিবেদনে। এছাড়া, ঘটনা বিচারের জন্য বিষয়টি আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে পাঠানোর জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে জাতিসংঘের এ প্রতিবেদনে।

এ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘সামরিক প্রয়োজনে নির্বিচারে হত্যা, গণধর্ষণ, শিশুদের ওপর হামলা এবং পুরো গ্রাম জ্বালিয়ে দেবার বিষয়টি কখনো সমর্থনযোগ্য হতে পারে না।’ এ প্রতিবেদনে রাখাইন অঞ্চল ছাড়াও মিয়ানমারের কাচিন এবং শান অঞ্চলের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে।