বিশ্ব এইডস দিবসে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বাণী

রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘বিশ্ব এইডস দিবস’ উপলক্ষ্যে বাণী প্রদান করেছেন।

তথ্য অধিদপ্তরের তথ্যবিবরণীতে দেয়া এক পত্রে এটি জানানো হয়েছে।

বাণীতে রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ বলেন, “বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশেও ‘বিশ্ব এইডস দিবস-২০২০’ উদ্‌যাপনের উদ্যোগকে আমি স্বাগত জানাই। এবারের বিশ্ব এইডস দিবসের প্রতিপাদ্য ‘সারা বিশ্বের ঐক্য, এইডস প্রতিরোধে সবাই নিব দায়িত্ব’ (Global Solidarity, Shared Responsibility) অত্যন্ত সময়োপযোগী ও যথার্থ হয়েছে বলে আমি মনে করি।’

তিনি বলেন, ‘এইডস একটি মরণঘাতী রোগ। বাংলাদেশে সাধারণ জনগোষ্ঠীর মধ্যে এইচআইভি সংক্রমণের হার কম হলেও ভৌগোলিক অবস্থান, অসচেতনতা, ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর অনিয়ন্ত্রিত আচরণ, কুসংস্কার ও ভ্রান্ত ধারণার জন্য এইডস এর ঝুঁকি যথেষ্ট প্রবল। তাই প্রতিকারের পাশাপাশি এইডস প্রতিরোধে সচেতনতা সৃষ্টি, কুসংস্কার দূরীকরণ ও আচরণ পরিবর্তনে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ আবশ্যক। এইডসের কোনো প্রতিষেধক এখনও আবিষ্কার না হলেও বর্তমানে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা রয়েছে। এ রোগের প্রচলিত চিকিৎসা পদ্ধতি অত্যন্ত ব্যয়বহুল এবং আমৃত্যু এ চিকিৎসা চালিয়ে যেতে হয়। তাই এইডস রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির সহজলভ্য এবং মানসম্পন্ন চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট সকল প্রতিষ্ঠান সমন্বিত প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে – এ প্রত্যাশা করি।’

রাষ্ট্রপতি আরো বলেন, ‘সরকার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মাধ্যমে ২০১২ সাল থেকে এইডস আক্রান্তদের বিনামূল্যে ঔষধ প্রদান ও এইডস প্রতিরোধে সামাজিক স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। জাতিসংঘের ঘোষণা অনুযায়ী, ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে এইডস নির্মূল করতে হলে সমাজের সর্বস্তরের জনগণের সম্পৃক্ততা খুবই জরুরি। এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে আমি সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, দাতা সংস্থা এবং গণমাধ্যমসমূহকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাচ্ছি।’
‘আমি ‘বিশ্ব এইডস দিবস-২০২০’ উপলক্ষ্যে গৃহীত সকল কর্মসূচির সাফল্য কামনা করছি।’

বিশ্ব এইডস দিবসে প্রধানমন্ত্রীর বাণী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘বিশ্ব এইডস দিবস’ উপলক্ষ্যে বাণীতে বলেন, “বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশেও ‘বিশ্ব এইডস দিবস-২০২০’ উদ্‌যাপিত হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত। এ উপলক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট সকলকে আমি আন্তরিক অভিনন্দন জানাচ্ছি।
দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘সারা বিশ্বের ঐক্য, এইডস প্রতিরোধে সবাই নিব দায়িত্ব (Global Solidarity, Shared Responsibility) বর্তমান প্রেক্ষাপটে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আমি মনে করি।
আমাদের সরকার টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এসডিজি) এইচআইভি/এইডস বিষয়ক লক্ষ্য অর্থাৎ ২০৩০ সালের মধ্যে দেশ হতে এইডস রোগটি নির্মূল করার জন্য জাতিসংঘের নিকট প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সকলে মিলে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করলে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আমরা এইডস নির্মূল করতে সক্ষম হবো। আমরা প্রতিটি এইচআইভি/এইডস আক্রান্ত ব্যক্তির স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। ফলে সম্পূর্ণ সরকারি ব্যবস্থাপনা ও তত্ত্বাবধানে এইচআইভি সনাক্তকরণ পরীক্ষা করা হচ্ছে এবং আক্রান্ত ব্যক্তিদের বিনামূলো এইডস এর চিকিৎসা ও ঔষধ প্রদান করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে এইচআইভি সংক্রমণের হার ০.০১% এর নিচে। এ হার শূন্যে নামিয়ে আনতে এবং এইডস আক্রান্তদের প্রতি সকল বৈষম্য রোধ করে সরকারি কার্যক্রমের পাশাপাশি বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা ও অন্যান্য সংস্থাসমূহের আরো কার্যকর ভূমিকা রাখার আহ্বান জানাচ্ছি।
সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় স্বাস্থ্যখাতে ‘রূপকল্প-২০২১ ও ২০৪১’ বাস্তবায়নের মাধ্যমে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলবো-এ আমার প্রত্যাশা।
আমি ‘বিশ্ব এইডস দিবস-২০২০’-এর সার্বিক সাফল্য কামনা করছি।’